ঋদ্ধিমান সাহার ক্রিকেট কেরিয়ার চরম অনিশ্চয়তার মুখে! বন্ধ হয়ে গেল দুটি দরজা, রাজনীতি আর ইগোর শিকার পাপালি?

ঋদ্ধিমান সাহার ক্রিকেট কেরিয়ার চরম অনিশ্চয়তার মুখে! বন্ধ হয়ে গেল দুটি দরজা, রাজনীতি আর ইগোর শিকার পাপালি?

ঋদ্ধিমানকে নিয়ে জল্পনা

ঋদ্ধিমান নিজে এখনও জানাননি বাংলা ছাড়লেও তিনি কোন দলের হয়ে পরের মরশুমে খেলবেন। তিনি জানেন, ভারতের টেস্ট দলের দরজা তাঁর জন্য খুলবে না। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি যতদিন ভালোবাসা থাকবে ততদিনই খেলা চালিয়ে যেতে চান ঋদ্ধি। সম্প্রতি তিনি আরও বলেছেন, উঠতি কোনও কিপারের জায়গা তিনি নিতে চান না। এমন দলে খেলবেন যেখানে উঠতি কিপারকে বসিয়ে তাঁকে খেলানোর প্রয়োজন হবে না। ঋদ্ধি যে দলগুলিতে খেলতে চান তার মধ্যে তিনটি দলের নাম শোনা যাচ্ছিল, গুজরাত, বরোদা ও ত্রিপুরা। কিন্তু প্রথম দুটি দলের দরজা বন্ধ হয়ে গেল।

দরজা বন্ধ দুই রাজ্যের

দরজা বন্ধ দুই রাজ্যের

ঋদ্ধিমান সাহা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে কয়েকটি রাজ্য সংস্থার অফার রয়েছে। এনওসি পেলেই যথাসময়ে তিনি সব কিছু জানাবেন। এরই মধ্যে গুজরাত ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন জানিয়ে দিল ৪০ টেস্ট খেলা ঋদ্ধিকে গুজরাত দলের হয়ে খেলার জন্য কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। জিসিএ কর্তা অনিল প্যাটেল বলেছেন, আমাদের তরুণ উইকেটকিপার হেত প্যাটেল (Het Patel) ভালোই খেলছেন। সেখানে অন্যকে নিয়ে তাঁর কেরিয়ার আমরা কেন নষ্ট করব? বরোদা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সচিব অজিত লেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে জানিয়েছেন, গত এক মাস হলো আমি দেশের বাইরে। ইতিমধ্যেই বরোদা অম্বাতি রায়ুডুকে নিয়েছে। কিন্তু ঋদ্ধিমানকে নেওয়ার ব্যাপারে আমি অবগত নই। ফলে স্পষ্ট দুটি সম্ভাব্য দরজা বন্ধ হয়ে গেল ঋদ্ধির সামনে।

পিছু হঠবে ত্রিপুরাও?

পিছু হঠবে ত্রিপুরাও?

ত্রিপুরার সঙ্গে ঋদ্ধিমানের কথাবার্তা যে চলছে সেটা জানিয়েছিলেন ত্রিপুরা ক্রিকেট সংস্থার সচিব কিশোর সাহা। তবে সূত্রের খবর, ঋদ্ধি খেলার জন্য যে পরিমাণ অর্থ দাবি করেছেন তা ত্রিপুরার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া ঋদ্ধিকে মেন্টর হিসেবেও নিতে চাইছে না ত্রিপুরা। ঋদ্ধিমানের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দেবব্রত দাস। সিএবির এই যুগ্ম সচিবের মন্তব্যে আহত ঋদ্ধি তাঁর নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। উল্টে, ইংল্যান্ডে ভারতীয় দলের প্রশাসনিক ম্যানেজার করে পাঠানো হয়েছে দেবব্রত দাসকে। যদিও দেবব্রত দাসের কি যোগ্যতা তা নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন তোলেন অশোক দিন্দার মতো প্রাক্তন ক্রিকেটারও। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, সিএবি ঋদ্ধির পাশে নয়, রয়েছে তাঁকে আক্রমণ করা দেবব্রত দাসের পাশেই। এই পরিস্থিতিতে সিএবি ও বিসিসিআইয়ের নেকনজরে থাকতে ত্রিপুরাও কোনও ছুতো দেখিয়ে পিছু হঠবে বলেই মনে করছে ক্রিকেটমহল।

ছক তৈরির প্রয়াস

ভারতীয় টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ার পর ঋদ্ধি বলেছিলেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন তিনি বোর্ড সভাপতি থাকাকালীন কোনও চিন্তা করতে হবে না। তারপরও বাদ পড়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন ঋদ্ধি। এরপরই ঋদ্ধিকে আক্রমণ করেন স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, দেবব্রত দাসরা। সম্প্রতি দীনেশ কার্তিক কামব্যাক করায় ঋদ্ধি বলেন, নির্বাচকরা নতুন মুখ দেখতে চেয়েছিলেন। কার্তিককে দেখতে আমার থেকে ভালো বলেই বোধহয় তাঁকে নেওয়া হয়েছে। দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা ঋদ্ধির বিপদ বাড়াচ্ছে বলেই ইঙ্গিত মিলছে। এক বোর্ডকর্তা বলছেন, দল থেকে বাদ পড়ে ঋদ্ধির হতাশা আমরা অনুভব করছি। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে তিনি বিসিসিআই সভাপতিকে বারবার টেনে আনছেন। দল নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। যা বোর্ডের একজন চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার করতে পারেন না।

প্রশ্ন থাকছে

প্রশ্ন থাকছে

তবে সবটাকে সহজভাবে নিচ্ছেন না অনেকেই। ঋদ্ধিমানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বোর্ডের দ্বারা দুই বছর নির্বাসিত বোরিয়া মজুমদার বিসিসিআই ও সিএবি শীর্ষকর্তাদের খুবই ঘনিষ্ঠ। এমনকী নানা অনুষ্ঠানও সঞ্চালনা করেন। ঋদ্ধিকে চাপে ফেলতে বোর্ড বা সিএবির তরফেও বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনকে প্রভাবিত করা হচ্ছে কিনা তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। সেখানেই ক্রিকেটপ্রেমীদের আশঙ্কা, ইগো আর রাজনীতি করতে গিয়েই কি অনিশ্চয়তার মুখে ফেলা হচ্ছে ঋদ্ধিমানের কেরিয়ারকে। বাড়ানো হচ্ছে চাপ। যা চলছে চল্লিশটি টেস্ট খেলা দক্ষতার নিরিখে দেশের এক নম্বর কিপারের কি এটাই প্রাপ্য?

(Source: oneindia.com