বাণিজ্যিক পরিমাণ মাদক উদ্ধারের মামলায় ভিডিয়োগ্রাফি বাধ্যতামূলক করল হাইকোর্ট

বাণিজ্যিক পরিমাণ মাদক উদ্ধারের মামলায় ভিডিয়োগ্রাফি বাধ্যতামূলক করল হাইকোর্ট

মাদক মামলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পুলিশের বিরুদ্ধে প্রায়ই মিথ্যে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ ওঠে। এই পরিস্থিতিতে মাদক মামলায় (বাণিজ্যিক পরিমাণ মাদক উদ্ধার হলে) সিজারের ক্ষেত্রে ভিডিয়োগ্রাফি বাধ্যতামূলক করল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, উচ্চ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সেক্ষেত্রে এই নিয়ম না মানলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসার এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।

এই নির্দেশের প্রতিলিপি রেজিস্ট্রার জেনারেল মারফত মাদক তদন্তের সঙ্গে জড়িত সমস্ত সংস্থাকে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে, রাজ্য পুলিশের ডিজি এই নির্দেশ কার্যকরে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন তা মামলার পরবর্তী শুনানিতে জানাতে হবে। দু-সপ্তাহ পর মামলার পরবর্তী শুনানি। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে স্পষ্ট জানিয়েছে ভিডিয়ো ক্যামেরা না থাকলে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে মোবাইলের সাহায্যে উদ্ধার হওয়া মাদকের ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে। একাধিক মাদক মামলায় পুলিশ এবং নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরেই এমন নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

অন্যদিকে, এবার থেকে প্রত্যেকটা মামলায় হাইকোর্টে অরিজিনাল কেস ডাইরি আনতে হবে। কেস ডাইরির প্রতিলিপি আনা চলবে না। এই মর্মে প্রতিটি জেলার পুলিশ কর্তাদের কাছে নির্দেশ সার্কুলেট করতে বলেছে হাইকোর্ট। আদালতের এই নির্দেশকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন আইনজীবীরা। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানার একটি মামলায় পুলিশের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য জাল করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই মামলায় আজ মুর্শিদাবাদের এসপি কে সাবরী রাজ কুমার সশরীরে হাজিরা দেন। এসপি জানান, ইতিমধ্যেই তদন্তকারী অফিসার এবং সিজার অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাছাড়া, লালগোলা থানার ওসি-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে, এদিন আরও একটি মাদক মামলায় পুলিশকে কেস ডায়েরি আনার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বাহাদুর শেখ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাদক আইনে একটি মামলা রুজু হয়েছিল মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা থানায়। মামলকারীর আইনজীবী আলী আহসান আলমগীর জানান, বাহাদুর শেখ গত ১৬ ডিসেম্বর আদালতে আগাম জামিন পেয়েছিলেন। অথচ পুলিশ দাবি করে যে তাকে গত ১৩ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়। তার বাড়ি থেকে গত ১৭ ডিসেম্বর মাদক উদ্ধার হয়েছে। সেই মামলায় আজ হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানান ওই ব্যক্তি।

বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, যেহেতু আগাম জামিন মামলার শুনানি হওয়ার আগেই তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন তবে সেই সময় কেস ডাইরির প্রতিলিপি ছিল না। তাই সেটা কোর্টের পক্ষে জানা সম্ভব হয়নি। ফলে এবার থেকে প্রত্যেকটা মামলায় হাইকোর্টে অরিজিনাল কেস ডাইরি আনতে হবে। কেস ডাইরির প্রতিলিপি আনা চলবে না।

(Source: hindustantimes.com)