শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে ধর্না জুনিয়র সাঁতারুদের, নির্বাসিত হেড কোচ

শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে ধর্না জুনিয়র সাঁতারুদের, নির্বাসিত হেড কোচ

বড় অভিযোগ অলিম্পিক্সে অংশগ্রহণকারী সাঁতারু এবং এশিয়ান গেমসে পদক জয়ী সন্দীপ সেজওয়ালের বিরুদ্ধে। জুনিয়র সাঁতারুরা তাঁর বিরুদ্ধে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছে। ভুবনেশ্বরে কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের হাই পারফরম্যান্স সুইমিং সেন্টারে তরুণ সাঁতারুদের প্রশিক্ষণের জন্য নিযুক্ত কোচ ৩৫ বছরের সন্দীপ সেজওয়ালের বিরুদ্ধেই রয়েছে চাঞ্চল্যকর সব অভিযোগ।

বেশ কিছু তরুণ সাঁতারু সম্প্রতি অভিযোগ করেছে যে, সন্দীপ সেজওয়াল কয়েক মাস ধরেই তাদের উপর শারীরিক এবং মৌখিক নির্যাতন করছেন। আর সাঁতারুদের আনা অভিযোগের ভিত্তিতেই শনিবার সন্দীপকে সাসপেন্ড করা হয়। ভুবনেশ্বরের জেএসডব্লিউ-আইআইএস (JSW-IIS) সাঁতার প্রোগ্রামের প্রধান কোচের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। আর এই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজ্য ক্রীড়া বিভাগ কর্তৃক সন্দীপ সেজওয়ালকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

শনিবার রাতে, তরুণ সাঁতারুরা, যারা সকলেই নাবালক, ধর্নায় বসে। তাদের আনা অভিযোগের সুরাহা না হলে, তারা নৈশভোজ বয়কট করার হুমকি দেয়। একজন সাঁতারু দাবি করেছেন, ‘যদি আমরা ওঁর আপত্তিজনক আচরণের বিরোধিতা করি, তাহলে আমাদের বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কোচ যৌনতামূলক ভাষার ব্যবহার করেন এবং প্রশিক্ষণের সময়ে আমাদের কিছু বন্ধুকে শারীরিক ভাবেও লাঞ্ছিত করেছেন।’

রাজ্য ক্রীড়া দফতরের ক্রীড়া প্রচারের ডিরেক্টরর, দীপঙ্কর মহাপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে, বিভাগীয় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেজওয়ালকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করব এবং নিশ্চিত করব যে, তরুণ সাঁতারুদের প্রতি কোনও অবিচার করা হবে না।’ তবে সেজওয়ালের বক্তব্যের জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

সজ্জন জিন্দালের নেতৃত্বে জেএসডব্লিউ (JSW) গ্রুপের সহযোগিতায় সাঁতারের জন্য নির্মিত হয় এই প্রশিক্ষণ শিবির। ২০২২ সাল থেকে ওড়িশার বিভিন্ন জেলার প্রায় ৫০ জন তরুণ সাঁতারু ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের হাই পারফরম্যান্স প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। কেন্দ্রটি জেএসডব্লিউ গ্রুপ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম বেসরকারি ভাবে অর্থায়িত হাই পারফরম্যান্স সেন্টার, যার লক্ষ্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ এবং অলিম্পিক্সের জন্য FINA-A যোগ্যতা নির্ণায়ক সময় অর্জন করতে সক্ষম ভারতীয় সাঁতারুদের বিকাশ করা। কেন্দ্রের ৫০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০টিরও বেশি শিক্ষার্থী ওড়িশার।

তরুণ সাঁতারুরা ক্রীড়া বিভাগের কাছে অভিযোগ করেছে যে, সেজওয়াল প্রায়শই তাদের দুর্বলতা নিয়ে উপহাস করতেন এবং যৌনতামূলক গালিগালাজ করে এবং প্রায়শই শারীরিক নির্যাতনও করে থাকেন। এক সাঁতারু বলেছে, ‘তিনি প্রায়শই আমাদের হোস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। হোস্টেল থেকে যারা ভালো পারফর্ম করবে, তাদের দল থেকে বের করে দেওয়া হবে এবং তার পর কোচেরা ব্যক্তিগতভাবে তাদের সাথে দেখা করবে এবং অকারণে তাদের শারীরিক ভাবে নির্যাতন করবে। সাপোর্ট স্টাফেরাও অত্যন্ত বাজে ভাষা ব্যবহার করে থাকে।’

অন্য একজন অভিযোগ করেছেন যে, সেজওয়াল তাদের নিয়ে উপহাস করে থাকেন এই বলে যে, তারা হোস্টেলে থাকছে কারণ তাদের গ্রামে পর্যাপ্ত খাবার নেই। সেই সাঁতারুর আরও দাবি, ‘তিনি আমার বাড়িতে ফোন করে অভিযোগ করতেন যে, আমি ওঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি। আমি ওঁকে খারাপ আচরণের উদাহরণ দিতে বললে, তিনি রেগে যেতেন এবং বলতেন যে, আমাকে বের করে দেবেন। তিনি একবার একজন সিনিয়রকে এতটাই মারধর করেছিলেন যেস তার মাথা থেকে রক্ত ​​বেরিয়ে গিয়েছিল।’

বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরই অভিযোগ যে, কোচেরা ভালো পারফরম্যান্সকারী সাঁতারুদের বাইরে বসতে বাধ্য করতেন এবং পরে তাঁরা হুমকি দিতেন এই বলে যে, তাঁরা শিক্ষার্থীদের যথাযথ সহায়তা বা প্রশিক্ষণ দেবেন না।

(Feed Source: hindustantimes.com)