সুনীতা নামলেন পৃথিবীতে, ৯ মাস পরে ছোঁয়া পেলেন ধরিত্রীর, ‘ড্রাগন’-ই আনল সুখবর

সুনীতা নামলেন পৃথিবীতে, ৯ মাস পরে ছোঁয়া পেলেন ধরিত্রীর, ‘ড্রাগন’-ই আনল সুখবর

নয় মাস পরে ধরিত্রীর ছোঁয়া পেলেন সুনীতা উইলিয়ামস। মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) সুনীতা, বুচ উইলমোরদের নিয়ে ফ্লোরিডা উপকূলে অবতরণ করল স্পেসএক্সের ড্রাগন মহাকাশযান (স্পেসএক্স ক্রিউ-৯ মিশন)। প্রায় ১৭ ঘণ্টার যাত্রার সঙ্গে শেষ হল নয় মাসের অপেক্ষা। আটদিন মহাকাশে থাকবেন বলে ২০২৪ সালের ৫ জুন পাড়ি দিয়েছিলেন সুনীতারা। কিন্তু বোয়িংয়ের স্টারলাইনার মহাকাশযানের গোলযোগ এবং বিভিন্ন জটিলতার কারণে তাঁদের নয় মাসেরও বেশি আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে আটকে থাকতে হয়। অবশেষে মঙ্গলবার পৃথিবীর ছোঁয়া পেলেন সুনীতা এবং বুচ। আর তাঁদের সেই নয় মাসের অভিযানের পুরো ইতিবৃত্ত দেখে নিন।

সুনীতাদের মহাকাশে পাড়ি ও লাগাতার সমস্যা

৫ জুন: ৫ জুন সুনীতাদের নিয়ে উড়ে গিয়েছিল স্টাইলাইনার। প্রপালশন সিস্টেম সংক্রান্ত বিষয় এবং হিলিয়াম লিকের কারণে একাধিকবার দেরি হওয়ার পরে অবশেষে মহাকাশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল।

৬ জুন থেকে ২৫ জুন: ২৭ ঘণ্টার যাত্রার পরে মহাকাশে পৌঁছে গিয়েছিলেন সুনীতারা। আটদিনের মতো থাকার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু প্রপালশন সিস্টেমে গোলযোগ এবং হিলিয়াম লিকের কারণে ১১ জুন সুনীতাদের ফেরার সময় পিছিয়ে দিয়েছিল নাসা। ২১ জুন ফের পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২৬ জুন যখন তৃতীয়বার সুনীতাদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার সময় পিছিয়ে দিয়েছিল নাসা, তখন স্টারলাইনারকে নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল।

২১ জুলাই: আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে ৪৫ দিন কাটিয়ে ফেলেছিলেন সুনীতা এবং বুচ। অর্থাৎ স্টারলাইনারকে সর্বোচ্চ যতদিন থাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, সেটা ছুঁয়ে ফেলেছিল। কিন্তু তখনও নাসা এবং বোয়িং নিশ্চিত ছিল না যে কবে মহাকাশচারীরা পৃথিবীতে ফিরতে পারবেন। চালানো হচ্ছিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

মাস্কের সংস্থার এন্ট্রি ও স্টারলাইনার ফিরে আসা

২৪ অগস্ট: ইলন মাস্কের স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানে করে সুনীতাদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যা সেপ্টেম্বরে পৃথিবী থেকে রওনা দেওয়ার কথা ছিল। যে মহাকাশযানের ফেরার কথা ছিল ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে।

৬ সেপ্টেম্বর: সুরক্ষিতভাবে নিউ মেক্সিকোয় অবতরণ করেছিল সুনীতাদের মহাকাশে নিয়ে যাওয়া স্টারলাইনার। তবে ফেরার সময় সুনীতারা ছিলেন না। কারণ মহাকাশচারীদের নিয়ে ফেরার সময় যে সুরক্ষা প্রোটোকলের প্রয়োজন হয়, সেটা পায়নি স্টারলাইনার।

২৯ সেপ্টেম্বর: দুই মহাকাশচারীকে নিয়ে উড়ে গিয়েছিল নাসার ক্রিউ-৯ মিশন। তাতে চারজন মহাকাশচারীর জায়গা ছিল। কিন্তু সুনীতা এবং বুচকে ফিরিয়ে আনার জন্য দুটি আসন ফাঁকা রাখা হয়েছিল। কথা ছিল যে ক্রিউ-১০ মিশন গেলে সুনীতারা ক্রিউ-৯ মহাকাশযান চেপে ফিরে আসবেন।

১৭ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি: ক্রিউ-১০ মিশনের উৎক্ষেপণ পিছিয়ে দিয়েছিল নাসা। সেটি মহাকাশে গেলে তবে পৃথিবীতে ফিরতে পারতেন সুনীতারা। কিন্তু ১৭ ডিসেম্বর জানানো হয়েছিল যে মহাকাশে যাওয়ার জন্য যে ক্রিউ ক্যাপসুলের প্রয়োজন আছে, সেটার উৎপাদনে স্পেসএক্সের দেরি হয়েছে। ফলে মার্চে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে। তারইমধ্যে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারিতে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছিল। রাজনৈতিক কারণে এত জট তৈরি হয়েছে কিনা, সেই প্রশ্নও উঠেছিল।

জট কেটে মার্চে সুনীতাদের পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তন

১২ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ: ১২ মার্চ ক্রিউ-১০ মিশনের রওনা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লঞ্চপ্যাডে সমস্যার জন্য দু’দিন পিছিয়ে গিয়েছিল। তারপর ১৪ মার্চ উৎক্ষেপণ করা হয়। ১৬ মার্চ আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছায় ক্রিউ-১০ মিশন।

১৮ মার্চ: রাত ১ টা ৫ মিনিটে (ফ্লোরিডার সময়) আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় স্পেসএক্স ক্রিউ-৯ মহাকাশযান। শুরু হয় পৃথিবীতে ফেরার ১৭ ঘণ্টার মিশন। তাতে সুনীতা, বুচ-সহ মোট চারজন আছেন। মঙ্গলবার বিকেলে ফ্লোরিডা উপকূলে অবতরণ করল।

(Feed Source: hindustantimes.com)