পোস্ট অফিসের রেকারিং ডিপোজিটে টাকা রাখছেন ? অবশ্যই জেনে নিন এই বিষয়গুলি…

পোস্ট অফিসের রেকারিং ডিপোজিটে টাকা রাখছেন ? অবশ্যই জেনে নিন এই বিষয়গুলি…

#কলকাতা: টালমাটাল অর্থিনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে অনেকেই অর্থ সঞ্চয়ের ভালো এবং বিকল্প উপায় খুঁজে চলেছেন। এমনিতেই ভারতীয় পোস্ট অফিসে অর্থ সঞ্চয়ের নানা রকম স্কিম রয়েছে। যেখানে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীরা ভালো রিটার্ন পেয়ে থাকেন। স্মল সেভিংস স্কিমগুলিও যথেষ্ট ভাল। কম বিনিয়োগে মোটা অঙ্কের লাভ পাওয়া যায়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই রেকারিং ডিপোজিট (Recurring Deposit) খুলতে চাইলে পোস্ট অফিসের (Post Office) বিকল্প কিছু হতে পারে না। কারণ উচ্চ হারে সুদ পাওয়া যায়। ফলে ভালো রিটার্ন আসতে বাধ্য। তাই অনেক গ্রাহকই রেকারিং ডিপোজিটের জন্য পোস্ট অফিসকেই বেছে নেন। একমাত্র এখানেই কম টাকা জমা রেখে বেশি সুদ আশা করতে পারেন বিনিয়োগকারী। পোস্ট অফিসের রেকারিং ডিপোজিটে ন্যূনতম ১০০ টাকা রাখতে পারেন এক জন গ্রাহক। এখানে সর্বোচ্চ টাকা রাখার কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। 

১৮ বছরের বেশি বয়সের ভারতীয় নাগরিকরা একক ভাবে অথবা যৌথ ভাবে পোস্ট অফিসে আরডি অ্যাকাউন্ট  খুলতে পারেন। তবে ১০ বছরের ঊর্ধ্বের নাবালক এবং নাবালিকারা তাদের অভিভাবকের সঙ্গে যৌথ ভাবে অ্যাকাউন্ট পরিচালনার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

পোস্ট অফিসের রেকারিং ডিপোজিট স্কিম ৫ বছরের জন্য করতে হয়। এখানেই ব্যাঙ্কের সঙ্গে ফারাক তৈরি হয় পোস্ট অফিসের। ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে ৬ মাস, ১ বছর এবং ৩ বছরের জন্য এই রেকারিং ডিপোজিট করতে পারেন গ্রাহক। কিন্তু পোস্ট অফিসের ন্যূনতম মেয়াদ কাল (Tenure) ৫ বছর।

ভারত সরকার সমর্থিত ৯টি ছোট ছোট সঞ্চয় প্রকল্পের মধ্যে একটি হল– পোস্ট অফিসের রেকারিং ডিপোজিট স্কিম। এই প্রকল্পটি মধ্য-মেয়াদী বিনিয়োগের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। যার মধ্যে বিনিয়োগকারীদের তাঁদের আমানত কমপক্ষে ৫ বছরের জন্য সক্রিয় রাখতে হবে। এতে গ্রাহক প্রতি মাসে ন্যূনতম ১০০ টাকা জমা দিয়ে ভাল পরিমাণ অর্থ সুদ-সহ ফেরত পেতে পারেন এবং এতে গ্রাহকের অর্থও নিরাপদ থাকবে।

এই স্কিমে আমানতকারীর জমানো অর্থের উপর বার্ষিক সুদ অনুযায়ী প্রতি তিন মাসে সুদের হিসেব করা হয়। এর পর প্রত্যেক তিন মাসে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে কম্পাউন্ড ইন্টারেস্টে যোগ করা  হয়৷ পোস্ট অফিসে বর্তমানে ৫.৮ শতাংশ হিসেবে সুদ দেওয়া হচ্ছে ৷ প্রতি তিন মাস অন্তর কেন্দ্রীয় সরকার স্মল সেভিংস স্কিমে সুদের হার ঘোষণা করে। তবে পাঁচ বছরের পরেও আবার পাঁচ বছরের হিসেবে রেকারিং ডিপোজিট স্কিমের অ্যাকাউন্টটি চালানোর সুবিধা মেলে। সুদও পাওয়া যায় আগের নিয়মেই। এই সুদের হার পয়লা জানুয়ারি ২০২১ থেকে লাগু করা হয়েছে৷ যা ব্যাঙ্কের থেকে বেশি।

ধরা যাক, কোনও বিনিয়োগকারী ১০ বছরের জন্য পোস্ট অফিসে রেকারিং ডিপোজিট স্কিম করেছেন। যেখানে তিনি প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে জমা রাখছেন। সে ক্ষেত্রে বার্ষিক ৫.৮ শতাংশ সুদের হার হিসেবে ১০ বছর পরে তিনি প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা পাবেন। সুদের হার একই থাকলে ওই বিনিয়োগকারীর ১৬,২৮,৯৬৩ টাকা পাওয়ার কথা।  এটি এখনও পর্যন্ত পোস্ট অফিসের সব চেয়ে জনপ্রিয় রেকারিং ডিপোজিট স্কিম।

নগদ বা চেকের বিনিময়ে একটি পোস্ট অফিসে আরডি অ্যাকাউন্ট খোলা যেতে পারে। অ্যাকাউন্টটি যদি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে খোলা হয়, তা হলে পরবর্তী বিনিয়োগ পরের মাসের ১৫-তম দিনের আগে জমা করতে হবে। আবার অ্যাকাউন্টটি মাসের ১৬ তারিখের পরে খোলা হলে পরবর্তী মাসের শেষ কাজের দিন পর্যন্ত জমা দেওয়া যেতে পারে।

কোনও মাসে টাকা জমা দিতে না-পারলে জরিমানা দেওয়ার জন্য তৈরি থাকতে হবে৷ প্রতি মাসে ১ শতাংশ জরিমানা দিতে হয়৷ ৪ মাস পরপর টাকা জমা না-করলে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে চিন্তার কিছু নেই। অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেলেও কিস্তি এবং জরিমানার টাকা দিয়ে পরবর্তী দু’মাসের মধ্যে ফের চালু করা যাবে রেকারিং ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট৷ স্কিমের সুবিধেও মিলবে।

গ্রাহকের জমানো অর্থের পরিমাণ যদি ৪০,০০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়, তা হলে টিডিএস দিতে হবে আমানতকারীকে। প্রতি বছর কর বাবদ ১০ শতাংশ কেটে নেবে সরকার। রেকারিং ডিপোজিট থেকে পাওয়া সুদের উপর থেকেই এই কর নেয় সরকার। তবে মেয়াদ শেষে পাওয়া অর্থ আয়করের আওতায় পড়ে না। বিনিয়োগকারীর আয় করযোগ্য না-হলে তাঁরা টিডিএস ফেরত পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে ফিক্সড ডিপোজিটের মতোই ফর্ম ১৫জি ফাইল করতে হয় তাঁদের। প্রবীণ নাগরিক হলে তাঁকে ১৫এইচ ফর্ম পূরণ করতে হবে।

Published by:Dolon Chattopadhyay

(Source: news18.com)