শিক্ষা ঋণের ক্ষেত্রে কর সংক্রান্ত কী কী সুবিধা পাওয়া যায়?

শিক্ষা ঋণের ক্ষেত্রে কর সংক্রান্ত কী কী সুবিধা পাওয়া যায়?

#কলকাতা:দেশ এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রায় সমস্ত ব্যাঙ্কই পড়ুয়াদের শিক্ষা ঋণ-এর সুবিধা প্রদান করে। ব্যাঙ্কের যোগ্যতার মাপকাঠির সঙ্গে শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয়তা মিলে গেলে খুব সহজেই এই ঋণ পাওয়া যায়। টিউশন ফি, পরীক্ষা ফি, হোস্টেল ফি থেকে শুরু করে যাতায়াতের খরচ (বিদেশে পড়াশুনার ক্ষেত্রে)-সহ কোর্স বা ডিগ্রি সম্পূর্ণ করতে যা যা খরচ দরকার, তার সমস্তটাই ব্যাঙ্ক বহন করবে। 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কোর্সের উপর ভিত্তি করে ঋণদাতা সংস্থা বা ব্যাঙ্ক লোন অনুমোদন করে। রেগুলার বা পার্ট টাইম সমস্ত রকম পড়াশুনার জন্য শিক্ষা ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে। এই জাতীয় ঋণে আকর্ষণীয় সুদের হারের পাশাপাশি কর (Tax) প্রদানেও ছাড় মেলে। 

শিক্ষা ঋণে করের উপর কী কী সুবিধা পাওয়া যায়?

আয়কর আইন, ১৯৬৭ সেকশন ৮০ই (80E) অনুযায়ী, শিক্ষা ঋণ পরিশোধ করার সময় সুদের উপর কর ছাড়ের সুবিধা রয়েছে। শুধুমাত্র উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে নেওয়া ঋণের ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাওয়া যায়। দেশে হোক কিংবা বিদেশে, সমস্ত রকম শিক্ষা ঋণে কর মকুবের পরিষেবা রয়েছে। পার্ট টাইম এবং রেগুলার–এই দুই রকম কোর্সের জন্য নেওয়া ঋণের সুদে কর ছাড় পাওয়া যায়। 

লোন পরিশোধ করার সময় কর ছাড় শুধুমাত্র EMI-এর সুদের উপর প্রযোজ্য, মূল অর্থের উপর নয়। সহজ ভাষায়, মাসিক কিস্তির পরিমাণ যদি ১০০০০ টাকা হয় এবং নির্দিষ্ট হারে সুদের পরিমাণ যদি ৫০০ টাকা হয়, তবে সুদের ৫০০ টাকার উপর কর মকুব করা হবে। মূল EMI ১০০০০ টাকার উপর কোনও কর ছাড় দেওয়া হবে না।   

যদিও এই সুবিধা দাবি করার কোনও সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা নেই। ঋণ পরিশোধে কর ছাড় পাওয়ার জন্য ব্যাঙ্ক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের থেকে একটি সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়, যেখানে মাসিক কিস্তি এবং সুদের পরিমাণ আলাদা করে উল্লেখ করা থাকবে। 

ঋণ পরিশোধ করার প্রথম দিন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ মেয়াদ ৮ বছর পর্যন্ত এই সুবিধা পাওয়া যায়। যদি মূল ঋণের আগে সুদ শোধ হয়ে যায়, তবে তার পর থেকে শিক্ষার্থী কর ছাড় পাবে না। সর্বোচ্চ ৮ বছর পর্যন্ত শিক্ষা ঋণের EMI-এর সুদের উপর কর ছাড় পাওয়া যায়।   

শিক্ষা ঋণ পাওয়ার জন্য কী কী নথি প্রয়োজন?

    • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ভর্তির প্রমাণ 
    • মার্কশিট (সর্বশেষ শিক্ষা– স্কুল/কলেজ) 
    • বয়সের প্রমাণপত্র 
    • পরিচয়ের প্রমাণপত্র 
    • ঠিকানা প্রমাণপত্র 
    • স্বাক্ষরের প্রমাণপত্র 
    • স্যালারি স্লিপ 
    • ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট 
    • কর জমার প্রমাণ (ITR) 
    • ব্যালেন্স শীট 
    • আয়ের প্রমাণ (সার্ভিস ট্যাক্স রিটার্ন/বিক্রয় রসিদ) 
    • স্বাক্ষর সহ আবেদনপত্র 
    • পাসপোর্ট সাইজের ছবি 
    • বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে উপযুক্ত ভিসা

শিক্ষা ঋণে যোগ্যতার মাপকাঠি–

নাগরিকত্ব:

    • ভারতীয় নাগরিক 
    • অনাবাসী ভারতীয় (NRIs)
    • ভারতীয় বিদেশী নাগরিক (OCI)
    • ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি (PIOs)

কোর্স:

    • স্নাতক ডিগ্রি
    • স্নাতকোত্তর ডিগ্রি 
    • ডক্টরাল কোর্স এবং PhD 
    • 6 মাস বা তার বেশি সময়কালের সার্টিফিকেট কোর্স 
    • চাকরি ভিত্তিক কোর্স 
    • কারিগরি / ডিপ্লোমা / প্রফেশনাল কোর্স

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:

    • স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি কলেজ 
    • সরকার দ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 
    • পেশাগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 
    • আন্তর্জাতিক কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়

সিকিউরিটিজ-মুক্ত লোন:

    • বেশ কিছু প্রথম সারির ঋণদাতা অ্যাসেট জমা না-নিয়ে ৭.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন প্রদান করে
    • বিশেষ কিছু নির্বাচিত কোর্স এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে জামানত ছাড়া ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোনের সুবিধা রয়েছে

Published by:Dolon Chattopadhyay

(Source: news18.com)