Mohammad Shami: ‘আপনার এত খাই? মাসে ৪ লাখেও মন ভরে না?’ শামির বিচ্ছিন্না স্ত্রী হাসিনকে সুপ্রিম ধমক…

Mohammad Shami: ‘আপনার এত খাই? মাসে ৪ লাখেও মন ভরে না?’ শামির বিচ্ছিন্না স্ত্রী হাসিনকে সুপ্রিম ধমক…

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়: ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা পেসার মহম্মদ শামি (Mohammad Shami) এবং তাঁর স্ত্রী হাসিন জাহানের (Hasin Jahan) মধ্যে আইনি লড়াইয়ে নতুন মোড়। ফের চাপের মুখে ভারতীয় পেসার শামি। শামির বিচ্ছিন্ন স্ত্রী হাসিন জাহান সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয়েছেন। হাসিন জাহানের দায়ের করা একটি মামলার প্রেক্ষিতে মহম্মদ শামি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নোটিস জারি করেছে। বিচারপতি মনোজ মিশ্র ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভূইয়ার বেঞ্চ এই নোটিস দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। হাসিন তাঁর এবং তাদের কন্যার জন্য মাসিক রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা বৃদ্ধির আবেদন নিয়ে হাজির কোর্টে।

মূলত, হাসিন জাহান কলকাতা হাই কোর্টের এক রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। সেই রায়ে হাই কোর্ট শামির দেওয়া মাসিক ভরণপোষণ ভাতা বাড়ানোর আবেদন নাকচ করেছিল। হাই কোর্টের মতে, বর্তমানে যে পরিমাণ অর্থ দেওয়া হচ্ছে, তা যথেষ্ট। তবে সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি নতুন করে শুনানির নির্দেশ দিয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়েছে। ৪লক্ষ টাকা কি যথেষ্ট নয়? তাও জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।

হাসিন জাহান কলকাতা হাইকোর্টের আগে দেওয়া আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, যেখানে তার জন্য মাসিক ১.৫ লাখ টাকা এবং কন্যার জন্য ২.৫ লাখ টাকা ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তার আবেদনে তিনি দাবি করেছেন, শামির আয় এবং জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় এই পরিমাণ অপ্রতুল এবং আদালতের কাছে রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা বাড়ানোর অনুরোধ করেছেন।
শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ মন্তব্য করে, ‘মাসে ৪ লাখ টাকা কি কম নয়?’ তবুও, বেঞ্চ শামি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব চেয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ডিসেম্বর মাসে হবে।

সুপ্রিম কোর্টে কী ঘটল?

শুক্রবার শুনানিতে বিচারপতির বেঞ্চ হাসিনের এই বাড়তি টাকার দাবি নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বেঞ্চ সরাসরি বলে — ‘মাসে ৪ লক্ষ টাকা কি কম টাকা নাকি?’ তবুও আদালত হাসিন জাহানের আবেদন শুনে মহম্মদ শামি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার— দুই পক্ষকেই নোটিস পাঠায়। তাঁদের চার সপ্তাহের মধ্যে লিখিত জবাব জমা দিতে বলা হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ডিসেম্বর মাসে হওয়ার কথা।

জুলাই ২০২৫-এ কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, শামি তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের জন্য প্রতি মাসে মোট চার লাখ টাকা ভরণপোষণ দিচ্ছেন। এর মধ্যে মেয়ের জন্য ২.৫ লাখ এবং স্ত্রীর জন্য ১.৫ লাখ টাকা নির্ধারিত। কিন্তু হাসিন জাহানের দাবি, শামির মাসিক আয় প্রায় ৬০ লাখ টাকা, তাই এই পরিমাণ অর্থ তাঁদের প্রয়োজন মেটাতে যথেষ্ট নয়। তাঁর দাবি, শামির সামাজিক জীবন ও জীবনযাত্রার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মেয়েরও বেড়ে ওঠা উচিত।  ‘মেয়েটির অধিকার রয়েছে বাবার সহকর্মীদের সন্তানদের মতোই শিক্ষা ও সামাজিক পরিসরে বেড়ে ওঠার।’ এছাড়াও অভিযোগ করা হয়, শামি একাধিক মাস ধরে আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট ভরণপোষণের টাকা দেননি।

২০১৮ থেকে আইনি টানাপোড়েন

২০১৮ সালে হাসিন জাহান প্রথমবার প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলেন— গার্হস্থ্য হিংসা, আর্থিক প্রতারণা ও মানসিক নির্যাতনের। এরপর থেকেই শুরু হয় শামি–হাসিনের দীর্ঘ আইনি লড়াই। সেই থেকে একাধিক আদালতে মামলা চলছে, এবং সময়ের সঙ্গে তা আরও জটিল আকার নিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট এখন দুই পক্ষের জবাবের অপেক্ষায়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও শামি তাঁদের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে কী জানান, তার ওপরই নির্ভর করবে পরবর্তী শুনানির দিকনির্দেশ। ডিসেম্বরে মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। আদালতের পরবর্তী রায়ই নির্ধারণ করবে, হাসিন জাহান ও তাঁদের কন্যার মাসিক ভরণপোষণ বাড়বে কি না।

(Feed Source: zeenews.com)