নয়াদিল্লি: কোভিডের (Covid-19) জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে গত ২ বছরে দারুন সমস্যার মুখে পড়েছে বাণিজ্যিক বিমান পরিষেবা দেওয়া সংস্থাগুলো (Airlines)। যে কোনও ভাবে লড়াইয়ে টিকে থাকতে হবে, এটাই বিমান সংস্থাগুলোর এখন প্রত্যাশা। যতটা সম্ভব খরচ কমাতে কোনও ফাঁক রাখেনি বিমান সংস্থাগুলো। এমনকী কর্মীদের বেতন ও ভাতা কমিয়েছে তারা। এটা ভারতের বিমান সংস্থাগুলির জন্যও সত্য। তবে ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে কম মজুরি ও অন্য কারণে বিভিন্ন বিমান কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে, আর সেটা প্রকাশ্যেও চলে আসছে। ইন্ডিগোতে (IndiGo) গত সপ্তাহে যা ঘটেছে, তারপর পুরো বিষয়টিই সামনে এসে গিয়েছে। ২ জুলাই ইন্ডিগোর প্রায় ৯০০টি বিমান নির্ধারিত সময়ের দেরিতে চলেছে।
ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স (IndiGo Airlines) এই পরিস্থিতির জন্য বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তবে এটা বোঝা গিয়েছে যে পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মীর অভাবেই এই সমস্যা হয়েছিল। শত শত যাত্রী অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন, তাঁদের পরিকল্পনায় ব্যাঘাত হয়েছে। বিভিন্ন বিমানবন্দরে যাত্রীদের ভিড় হয়ে গিয়েছিল ইন্ডোগের বিমান দেরিতে চলার কারণে। জানা গিয়েছে, ২ জুলাই ইন্ডিগোর প্রায় ৫৫ শতাংশ ফ্লাইট দেরিতে উড়েছে। পরের দিনও প্রায় ৩০ শতাংশ বিমান নির্ধারিত সময়ে অনেক পড়ে উড়েছে। একটি বিমান যদি ১৫ মিনিটের পরে আকাশে ওড়ে, তবে সেটা দেরি বলে মনে করা হয়।
এত বড় সংখ্যায় কেবিন ক্রু (Cabin Crew) না থাকায় এটা স্পষ্ট হয়েছে যে বর্তমান বেতন এবং ভাতা নিয়ে প্রচুর অসন্তোষ রয়েছে। বিমান কর্মীদের অভিযোগ, অতিরিক্ত সময় কাজের জন্য বিমান সংস্থা তাঁদের পর্যাপ্তভাবে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না। কিছু বিশেষজ্ঞ এটাকেই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে গণ ছুটির কারণ হিসেবে দেখছেন। তবে, এর আগেও ইন্ডিগো এমন পরিস্থিতির সাক্ষী হয়েছে। এপ্রিলে, কয়েকজন পাইলট (Pilot) কোভিড সংক্রমণের আগের সময়ের মতো বেতন দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। এই ইস্যুতে ধর্মঘট করার পরিকল্পনাকারী কয়েকজন পাইলটের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল। ১ এপ্রিল থেকে পাইলটদের বেতন ৮ শতাংশ বেতন বাড়ানোর ঘোষণা করেছিল ইন্ডিগো। যদিও পাইলটরা দাবি করেছিলেন যে এর পরেও তাঁদের ২০ শতাংশ বেতন ঘাটতি থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে কর্মীদের আরও ভালো পারিশ্রমিক দেওয়ার জরুরি প্রয়োজন রয়েছে। এটা না পেয়েই বৃহৎ সংখ্যক কেবিন ক্রু ২ জুলাই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটিতে (Mass Sick Leave) গিয়েছিলেন। কারণ তাঁরা এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) ওয়াক-ইন ড্রাইভে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। তবে শুধু এয়ার ইন্ডিয়া নয়, অন্যান্য এয়ারলাইনগুলোও এই বছর আবার নিয়োগ শুরু করেছে। তাই এই ক্ষেত্রের কর্মচারীরাও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাঁরা আরও ভালো বেতন এবং ভাতার সুযোগের দিকে নজর রাখছেন।