বিমান দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে ঘন জঙ্গলে, ১০ দিন নুডলস খেয়ে বেঁচে ছিলেন ব্যক্তি

বিমান দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে ঘন জঙ্গলে, ১০ দিন নুডলস খেয়ে বেঁচে ছিলেন ব্যক্তি

#মস্কো: বিমান দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েও প্রাণে বেঁচে গেলেন এক ব্যক্তি। দুর্ঘটনা ঘটার ১০ দিন পর তাঁকে সাইবেরিয়ার সাব আর্কটিক বনাঞ্চল (Sub Arctic Wilds Of Siberia) থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পাভেল ক্রিভোশাপকিন (Pavel Krivoshapkin) নামের ওই ব্যক্তির পাঁজর ও শরীরে অন্য জায়গা ভেঙে গিয়েছিল। ১০ দিন তিনি নুডলস (Noodles) খেয়ে বেঁচে ছিলেন। দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে একটি ছোট পরিত্যক্ত কুঁড়েঘরে তিনি নুডলস খুঁজে পেয়েছিলেন। শীতের সময় এই ঘরগুলো বলগা হরিণ পালকরা ব্যবহার করেন বলে জানা গিয়েছে (Viral News)।

এএন-২ (An-2) বিমানটি পাহাড়ের ধারে আঘাত করে ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় ৩৬ বছর বয়সী পাভেলই একমাত্র বেঁচে ছিলেন। বিমানের বাকি দুই যাত্রী পাইলট ও সহকারী পাইলটের জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। সবই নিজের চোখে দেখেছেন পাভেল। রুপোর খনিতে (Silver Mine) কাজ করা পাভেলকে ১ জুলাই উদ্ধার করা হয়, তাও আবার জীবিত অবস্থায়। যে এলাকায় বিমানটি ভেঙে পড়েছিল সেখানে বাদামি ভাল্লুক এবং নেকড়েদের বসবাস। তাই পাভেলের বেঁচে থাকায় অবাক হয়ে যায় উদ্ধারকারী দল।

হাসপাতালের বেডে শুয়ে ঘটনার কথা স্মরণ করে পাভেল বলেন, “জ্ঞান ফিরে দেখি আমার চারপাশের সবকিছু ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। আমাকে বিমান থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল। বিমানের দরজার তালা ভেঙে ফেলেছিলাম। বিমানটির টুকরোগুলো তখনও জ্বলছিল। আমি প্রায় তিন ঘণ্টা বিমানের পাশে বসেছিলাম। তারপর ধীরে ধীরে নদীর দিকে নেমে আসি। সেখানে একটি ছোট আগুন জ্বালিয়ে বসেছিলাম।’’

বিমানের পিছনের দিকে বসার কারণেই তিনি বেঁচে গিয়েছেন বলে মনে করছেন পাভেল। তিনি জানান, রুপোর খনিতে এক টন খাদ্য এবং অন্য সরঞ্জাম নিয়ে যাচ্ছিল বিমানটি। তিনি বলেন, “আমি নদী দেখে এগিয়ে যাই। সেখানে একটি কুঁড়েঘরের সন্ধান পাই। সেখানে দেখি নুডলসের বেশ কয়েকটি প্যাকেট পড়ে রয়েছে। এগুলোই আমাকে তীব্র খিদে থেকে বাঁচিয়েছে। যদিও আমি এটা খেতে চাইনি, কারণ আমার শরীরে খুব ব্যথা করছিল। আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, কিন্তু শরীরে ব্যথার কারণে খিদে পাচ্ছিল না।’’

পাভেল জানিয়েছেন যে তিনি বেশ কয়েকবার হেলিকপ্টারের (Helicopter) আওয়াজ শুনে পতাকা নাড়িয়েছিলেন। কিন্তু দশম দিন পর্যন্ত কোনও লাভ হয়নি। তিনি বলেন, “আমি নিজেকে দিনে একবার উঠতে বাধ্য করতাম এবং পতাকা নেড়ে বাইরে যেতাম এই আশায় যে কেউ আমাকে দেখতে পাবে।”

প্রায় ৭ হাজার বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছিল দুর্ঘটনার পর থেকেই। তবে কেবল দশম দিনেই পাভেলের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। পোলার এয়ারলাইন্সের এমআই-৮ হেলিকপ্টারে থাকা উদ্ধারকারীরা প্রথমে ইয়াকুটিয়ার কোবায়েস্কি জেলায় বিমানের ধ্বংসাবশেষ এবং দুই পাইলটের পোড়া মৃতদেহ খুঁজে পান। এক ঘণ্টা পর তাঁরা একমাত্র জীবিতকে খুঁজে পান।

Published by:Siddhartha Sarkar

(Source: news18.com)