#মুজফফরপুর: গত তিন বছরে যত মাইনে পেয়েছেন, সবটাই ফেরত দিতে চান শিক্ষক! বিস্ময়ের হলেও এমনই ঘটনা সত্যি ঘটেছে বিহারে। মুজফফরপুরের নীতীশ্বর কলেজের হিন্দির অধ্যাপক ডঃ লালন কুমার ২০১৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত যত বেতন পেয়েছেন তা ফেরত দিতে চান। এমন অদ্ভুত সিদ্ধান্তের কারণ? লালন কুমার জানিয়েছেন, যখন পড়ানোর মতো কোনও পড়ুয়াই নেই, তখন শিক্ষকতা করার জন্য যে বেতন পান তা নেওয়ারও কোনও নৈতিক অধিকার তাঁদের নেই। এই কারণে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে তাঁর তিন বছরের বেতন ২৩ লাখ টাকা ফেরত নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
নীতীশ্বর কলেজের সহকারী অধ্যাপক লালন কুমার মঙ্গলবার ২৩ লাখের চেক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে পৌঁছে সমস্ত বেতনের টাকা ফেরত নেওয়ার আবেদন করেন। তাঁর এমন কথা শুনে সেখানে উপস্থিত সকলেই হতবাক হয়ে যান। লালন জানন, পড়ুয়ারা যখন বিভাগে পড়তেই আসেন না, তখন তিনি বেতন নেবেন কেন?
বিহার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক রামকৃষ্ণ ঠাকুর জানান, অধ্যাপক লালন ২৩ লাখ টাকার চেক নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু সেই টাকা ফেরত দেওয়ার কোনও রেওয়াজ নেই। অধ্যাপককে বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। তবে এই বিষয়টি নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
পড়ুয়া নেই বলে শিক্ষক বেতন ফেরত দিতে চাইছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসে এই ঘটনা প্রথম। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মচারী ও অধ্যাপকরা জানান, তাঁদের কর্মজীবনে, এমনকী শোনা কথাতেও এই প্রথম তাঁরা কোনও শিক্ষককে পুরো বেতন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করতে দেখছেন।
তবে শুধু বেতন ফেরত দেওয়া নয়। একই সঙ্গে লালন কুমার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন তিনি এমএ পড়ুয়াদের ক্লাস নিতে চান, কিন্তু পড়ুয়ারা ক্লাসেই না আসায় পড়াশোনা বৃথা যাচ্ছে। তিনি উপাচার্যকে আরডিএস বা এমডিডিএম কলেজে বদলির অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে এই আবেদনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে, নীতিশ্বর কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ মনোজ কুমার জানান, অধ্যাপক লালন কুমার তাঁর কাছে বদলির জন্য কোনও আবেদন জমা দেননি। তাই পুরো বিষয়টি তাঁদের জানা নেই। তিনি আরও জানান, যদি ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসে না আসে, তাহলে অধ্যাপকের উচিত পড়ুয়াদের ডাকা, কথা বলা। বেতন ফেরত দেওয়া কোনও সমাধান নয়।