Amazon Layoff: মানুষখেকো আমাজন! কর্পোরেট তকমা ছেড়ে স্টার্টআপের ভূমিকায় US দৈত্য, ১৪০০০ চাকরি খেল… আরও খাবে…

Amazon Layoff: মানুষখেকো আমাজন! কর্পোরেট তকমা ছেড়ে স্টার্টআপের ভূমিকায় US দৈত্য, ১৪০০০ চাকরি খেল… আরও খাবে…

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অ্যামাজনের (Amazon) বিশ্বব্যাপী পুনর্গঠন এবং ‘বিশ্বের বৃহত্তম স্টার্টআপ’ (World’s Largest Startup) হওয়ার লক্ষ্যে যে ব্যাপক কর্মী ছাঁটাই চলছে, এই ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় ১৪,০০০ কর্পোরেট কর্মীর ছাঁটাই হয়েছে  এই বিশাল কর্মী ছাঁটাই অ্যামাজনের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ।

‘বিশ্বের বৃহত্তম স্টার্টআপ’ হওয়ার পথে অ্যামাজন: ১৪,০০০ কর্মীকে ছাঁটাই

ই-কমার্স এবং প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সংস্থা অ্যামাজন (Amazon) নিজেদের সংস্থাকে ঢেলে সাজানোর এবং ‘বিশ্বের বৃহত্তম স্টার্টআপ’ হিসাবে কাজ করার লক্ষ্যে একটি বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করেছে। সংস্থার এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় কর্পোরেট বিভাগে প্রায় ১৪,০০০ কর্মী চাকরি হারাচ্ছেন।

অ্যামাজনের সিইও অ্যান্ডি জ্যাসি (Andy Jassy)-র নেতৃত্বাধীন এই পদক্ষেপকে সংস্থাটি ‘আমলাতন্ত্র কমানো, স্তরের অপসারণ এবং সম্পদকে সবচেয়ে বড় বাজিগুলিতে স্থানান্তরিত করার’ কাজ হিসাবে বর্ণনা করেছে। তাদের লক্ষ্য হলো সংস্থাটিকে আরও চটপটে (nimble) এবং দক্ষ (efficient) করে তোলা, যেমনটি একটি স্টার্টআপে দেখা যায়।

ছাঁটাইয়ের মূল কারণ:

দক্ষতা এবং AI-এর প্রভাব

এই গণ-ছাঁটাইয়ের নেপথ্যে একাধিক কারণ কাজ করছে:

অতি-সম্প্রসারণ (Over-expansion): অতিমারী-জনিত চাহিদা বৃদ্ধির সময় অ্যামাজন দ্রুত তাদের কর্মীবাহিনীতে লোক নিয়োগ করেছিল। এখন চাহিদা স্বাভাবিক হওয়ায় এবং সংস্থাটিকে ‘ফ্যাট কাটিং’ বা অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানোর প্রয়োজন হওয়ায় এই অতিরিক্ত কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে।

AI এবং অটোমেশন: অ্যামাজন ক্রমশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং অটোমেশন নির্ভর প্রক্রিয়াগুলিতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। এর ফলে অনেক মধ্য-ব্যবস্থাপনা (middle-manager) এবং ঐতিহ্যবাহী কর্পোরেট ভূমিকা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ছে।

কাঠামো সরলীকরণ: অ্যামাজন তাদের সাংগঠনিক কাঠামোকে সমতল (flattening organisational structures) করতে চাইছে। এর মানে হলো ব্যবস্থাপকদের স্তর কমিয়ে দিয়ে ছোট দলগুলিকে দ্রুত এবং স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা দেওয়া, যা একটি স্টার্টআপ সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

কর্মীদের উপর প্রভাব
ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের মধ্যে অ্যামাজনের বিভিন্ন বিভাগ যেমন AWS, অপারেশনস এবং হিউম্যান রিসোর্স-এর কর্মীরাও রয়েছেন।

অনেক ক্ষেত্রে ইমেল বা টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে ছাঁটাইয়ের খবর জানানো হয়েছে, যা কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে।

এই ছাঁটাই প্রক্রিয়া কেবল অ্যামাজনেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি মেটা, গুগল এবং মাইক্রোসফ্টের মতো অন্যান্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলিতেও চলছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রযুক্তি শিল্পে এই ছাঁটাইগুলি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে সংস্থাগুলি ভবিষ্যতের জন্য আরও কৃশ, প্রযুক্তি-কেন্দ্রিক এবং AI-চালিত একটি মডেলের দিকে ঝুঁকছে।

অ্যামাজন কর্তৃপক্ষের যুক্তি, এই কঠোর পদক্ষেপ সংস্থার দীর্ঘমেয়াদী প্রতিযোগিতা এবং মুনাফা বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। তবে এটি কর্মজীবীদের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা যে, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি জগতে আর কোনো চাকরিই নিরাপদ নয়।

টিসিএস, অ্যামাজনের মতো আরেকটি বড় সংস্থা, বিশ্বব্যাপী তাদের মোট কর্মী সংখ্যার প্রায় ২ শতাংশ, যা প্রায় ১২,০০০ কর্মী, ছাঁটাই করার পরিকল্পনা করেছে। ২০২৬ এ ১ লক্ষে পৌঁছবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ছাঁটাই কেবল একটি কোম্পানির সমস্যা নয়, বরং গোটা আইটি শিল্পের একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অটোমেশন সাধারণ এবং পুনরাবৃত্তিমূলক কাজগুলো দখল করে নিচ্ছে, যার ফলে কোম্পানিগুলো নতুন ধরনের দক্ষতার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।

সংস্থা জানিয়েছে, এই ছাঁটাইয়ের মূল কারণ হলো কর্মীদের দক্ষতার অভাব এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তিগত চাহিদা পূরণে তাদের অসামর্থ্য। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং অটোমেশনের কারণে অনেক কাজের প্রকৃতি পরিবর্তিত হচ্ছে, যার ফলে পুরোনো দক্ষতার প্রয়োজন কমে যাচ্ছে।

(Feed Source: zeenews.com)