
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বিহারের কাটিহার জংশনের একটি চাঞ্চল্যকর ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে যে ভিডিয়ো দেখে নেটপাড়া উত্তাল। ট্রেনে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে আবারও উদ্বেগ বেড়েছে ওই ভিডিয়ো দেখে। একা ভ্রমণ করার সময় এক তরুণী এই ভিডিয়োটি শেয়ার করেছেন। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ট্রেনটি হঠাৎ থামার পর হঠাত্ একদল পুরুষ মানুষ তাঁর কামরায় ঢুকে পড়ে, তিনি ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়েছিলেন।
কী ঘটেছিল আসলে
ওই তরুণীর বর্ণনা অনুযায়ী, ট্রেনটি কাটিহার জংশনের কাছে থামার পরই প্রায় ৩০-৪০ জন যুবক চেঁচামেচি করতে করতে এবং ধাক্কাধাক্কি করতে করতে কামরায় ঢুকে পড়ে। সেই সময় তিনি শৌচাগারের ভেতরে ছিলেন।
তিনি যখন বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করেন, তখন দেখেন পুরো দরজাটি ভিড়ে আটকে আছে। নড়াচড়া করার কোনও জায়গা নেই এবং বাইরে বেরনোর কোনো উপায় নেই, ফলে তিনি ভেতরেই আটকে পড়েন এবং কী ঘটতে পারে সেই আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন।
ভাইরাল ক্লিপটিতে টেক্সট ওভারলেতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সেই চরম মুহূর্তে তিনি নিজেকে কতটা অসহায় মনে করছিলেন। নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি সঙ্গে সঙ্গেই রেলের হেল্পলাইন নম্বর ১৩৯-এ ডায়াল করেন। জানা যায়, পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার সময় তাঁর গলা কাঁপছিল।
তাঁর স্বস্তির বিষয় হলো, সাহায্য দ্রুত এসেছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যেই রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (RPF)-এর একটি দল কামরায় পৌঁছে যায়। তাঁরা ভিড় সরিয়ে দেন, দরজা পরিষ্কার করেন এবং তাঁকে নিরাপদে তাঁর আসনে ফিরিয়ে দেন। ভিডিয়োতে দ্রুত ও শান্তভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় আরপিএফ কর্মীদের প্রশংসা করা হয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আর খারাপ হতে দেয়নি।
ব্যাপক প্রতিক্রিয়া
দর্শকরা দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করলেও, এই ঘটনাটি অনলাইনে একটি বৃহত্তর আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক মন্তব্যকারী বলেছেন যে, একা ভ্রমণ করার সময়, বিশেষ করে গভীর রাতে বা ভিড়ের এলাকায়, অসংখ্য নারী যাত্রী এই ধরনের ভয়ের সম্মুখীন হন।
বেশ কিছু লোক সমাজমাধ্যমের পাতায় উত্তর দিয়েছেন যে, যদিও জরুরি হেল্পলাইন এবং আরপিএফ দলগুলি কার্যকর বলে প্রমাণিত হচ্ছে, তবুও এই ধরনের পরিস্থিতি যাতে প্রথমে না ঘটে, তার জন্য আরও শক্তিশালী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
হরিয়ানার হায়না:
এর আগে, চলন্ত ট্রেনের ফাঁকা কামরায় গণধর্ষণ! এই ঘটনা যেন সেই হরিয়ানার ঘটনার স্মৃতি ফিরিয়ে আনছিল, যেখানে ৩ জন মিলে গণধর্ষণ করে এক তরুণীকে। নির্যাতনের পর শেষে চলন্ত ট্রেন থেকে রেললাইনের উপর ছুঁড়ে ফেলা হয় নির্যাতিতাকে। যার জেরে পা হারান নির্যাতিতা। ভয়ংকর এই ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানায়।
৩৫ বছরের ওই তরুণী ২৪ জুন থেকে নিখোঁজ ছিলেন। স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। তারপর তাঁর আর কোনও খোঁজ ছিল না। শেষে তাঁকে রেললাইনের উপর উদ্ধার করা হয়। ওই তরুণী পুলিসকে জানিয়েছেন, পানিপথ স্টেশনে এক ব্যক্তি তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। ওই ব্যক্তি তাঁকে বলেন যে, তাঁর স্বামী ওই ব্যক্তিকে তাঁর কাছে পাঠিয়েছেন। তিনি তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছেন।
তিনি তাঁর কথা শুনে ওই ব্যক্তির পিছু নেন। শেষে একটি মালবালী ট্রেনের ফাঁকা কামরায় ওই ব্যক্তি তাঁকে ধর্ষণ করে। তার সঙ্গে আরও ২ জন যোগ দেয়। তারাও তাঁকে ধর্ষণ করে। এরপর সোনিপাতের কাছে রেললাইনের উপর তাঁকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। যার জেরে তাঁর পা খোওয়া যায়। নির্যাতিতার কান্না শুনে ছুটে আসেন আশপাশের দোকানদার থেকে অন্যান্য মানুষজন। তাঁরাই তাঁকে উদ্ধার করেন। রেল পুলিসকে খবর দেন।
আরপিএফ এসে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। রেললাইনের সুইচে আটকে যাওয়ায় তাঁর পা কেটে বাদ দেওয়া হয়। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই তরুণী। এদিকে ২৬ জুন স্ত্রীর নামে মিসিং ডায়েরি করেন নির্যাতিতার স্বামী। সেই ডায়েরির ভিত্তিতেই ওই তরুণীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিস। তখনই আরপিএফ-র কাছে নির্যাতিতা তরুণীর সম্পর্কে জানতে পারে পুলিস। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
(Feed Source: zeenews.com)
