Allahabad HC: স্ত্রী রোজগেরে এবং উপার্জনশীল হলে কোনওভাবেই স্বামীর কাছে খোরপোশ পাবেন না! কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের…

Allahabad HC: স্ত্রী রোজগেরে এবং উপার্জনশীল হলে কোনওভাবেই স্বামীর কাছে খোরপোশ পাবেন না! কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের…

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: যে মহিলা নিজে উপার্জনক্ষম, তিনি স্বামীর কাছে খোরপোশ (Maintenance) পেতে পারেন না: বিবাহবিচ্ছিন্ন স্ত্রীকে খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ খারিজ করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট

এলাহাবাদ হাইকোর্ট গৌতম বুদ্ধ নগরের নিম্ন আদালতের একটি নির্দেশে মান্যতা দেয়নি। নিম্ন আদালত এক ব্যক্তিকে তাঁর বিবাহবিচ্ছিন্ন স্ত্রীকে খোরপোশ (Alimony) দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ করে জানায় যে, ওই মহিলা নিজেই উপার্জন করেন এবং তাঁর হলফনামায় (affidavit) প্রকৃত বেতন প্রকাশ করেননি।

বিচারপতি মদন পাল সিং-এর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওই ব্যক্তি অঙ্কিত সাহার দায়ের করা ফৌজদারি পুনর্বিবেচনা পিটিশনটি (Criminal Revision Petition) মঞ্জুর করেন।

৩ ডিসেম্বরের ওই রায়ে আদালত বলেছে, ‘আপত্তিজনক রায়টি (impugned judgment) পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে ট্রায়াল কোর্টে দায়ের করা হলফনামায় (affidavit) বিপরীত পক্ষ নিজেই স্বীকার করেছেন যে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী এবং পেশাগতভাবে একজন ওয়েব ডিজাইনার। তিনি একটি কোম্পানিতে সিনিয়র সেলস কো-অর্ডিনেটর হিসাবে কাজ করছেন এবং প্রতি মাসে 34,000 টাকা বেতন পাচ্ছেন।’

আদালত আরও মন্তব্য করে, ‘কিন্তু তাঁর জেরা চলাকালীন (cross-examination) তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি প্রতি মাসে 36,000 টাকা উপার্জন করছেন। এমন একটি অঙ্কের আয়, যে স্ত্রীর অন্য কোনও দায়বদ্ধতা নেই, তা সামান্য বলা যায় না। যেখানে ওই ব্যক্তির তাঁর বয়স্ক বাবা-মা এবং অন্যান্য সামাজিক বাধ্যবাধকতা বজায় রাখার দায়িত্ব রয়েছে।’

হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ করে জানায়, ওই মহিলা তাঁর স্বামীর কাছ থেকে কোনও খোরপোশ পাওয়ার অধিকারী নন, ‘কারণ তিনি একজন উপার্জনকারী মহিলা এবং নিজের ভরণপোষণ করতে সক্ষম।’

ওই ব্যক্তির আইনজীবী আদালতে যুক্তি দেন যে বিবাহবিচ্ছিন্ন স্ত্রী তাঁর হলফনামায় পুরো সত্য প্রকাশ করেননি।

ব্যক্তির আইনজীবী তাঁর সওয়াল পেশ করার সময় বলেন, ‘তিনি নিজেকে একজন অশিক্ষিত ও বেকার মহিলা হিসেবে দাবি করেছিলেন। ট্রায়াল কোর্টে ওই ব্যক্তির দেওয়া নথি যখন তাঁকে দেখানো হয়, তখন জেরা চলাকালীন তিনি তাঁর আয়ের কথা স্বীকার করেন। সুতরাং, এটা স্পষ্ট যে তিনি ‘সত্‍ উদ্দেশ্য’ (clean hands) নিয়ে ট্রায়াল কোর্টের সামনে আসেননি।”

আদালত তাঁর আদেশে বলেন, ‘যেসব বিচারপ্রার্থী সত্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন এবং যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করার প্রবণতা দেখান, তাঁদের মামলা আদালত থেকে খারিজ করে দেওয়া উচিত।’

আদালত গৌতম বুদ্ধ নগরের পারিবারিক আদালতের প্রধান বিচারকের দেওয়া গত ১৭ ফেব্রুয়ারির রায় এবং নির্দেশকে বাতিল করে দেয় এবং ওই ব্যক্তি কর্তৃক দায়ের করা ফৌজদারি পুনর্বিবেচনা পিটিশনটি মঞ্জুর করে।

এর আগে, স্বামী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে না থাকলে খোরপোশের দাবি জানাতে পারবেন না স্ত্রী ৷ এমনই নির্দেশ দিয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট ৷ বিবাহ-বিচ্ছেদ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, স্ত্রী যদি কোনও কারণ ছাড়া স্বামী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের ছেড়ে অন্যত্র থাকে খোরপোশ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না ৷

মেরঠের বাসিন্দা বিপুল আগরওয়ালের করা মামলায় এই উল্লেখযোগ্য রায় দিল আদালত ৷ বিপুলের স্ত্রী নিশা তাঁদের কন্যা সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন ৷ পরে মেরঠের পারিবারিক আদালতে খোরপোশের দাবিতে মামলা করেন ৷ বিচারক রায় দেন, প্রতি মাসে খোরপোশ বাবদ 8 হাজার টাকা দিতে হবে বিপুলকে ৷

এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেন বিপুল ৷ সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি সুভাষচন্দ্র শর্মার এজলাসে ৷ শুনানির পর বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, খোরপোশের দাবি জানানোর ক্ষেত্রে স্ত্রীর স্বামী এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ৷ পাশাপাশি মেরঠের পারিবারিক আদালতের রায়টিও খারিজ করে দেন বিচারপতি ৷

(Feed Source: zeenews.com)