শুক্রবার সংসদের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা অভয়বর্ধনে এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, গোটাবায়া রাজাপাকসে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির পদ থেকে আইনগতভাবে পদত্যাগ করেছেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে 22 জুলাই।
তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মুখে থাকা শ্রীলঙ্কার অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রপতি ভবন দখল করেছে। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বাসভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে। অনুমান করুন শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি কতটা খারাপ যে বিক্ষোভকারীরা এমনকি সরকারী নিউজ চ্যানেলে প্রবেশ করেছে। শুধু তাই নয়, সেখানে একজন প্রতিবাদকারী সংবাদ উপস্থাপক হয়ে বসে বক্তব্য শুরু করেন। শুক্রবার সংসদের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা অভয়বর্ধনে এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, গোটাবায়া রাজাপাকসে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির পদ থেকে আইনগতভাবে পদত্যাগ করেছেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে 22 জুলাই।
মাহিন্দ্রা রাজাপাকসের দেশ ছাড়ার ওপর সর্বোচ্চ নিষেধাজ্ঞা
শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে এবং প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসেকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ২৮ জুলাই পর্যন্ত আদালতের অনুমতি ছাড়া তারা দুজনই দেশ ছাড়তে পারবেন না। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক দুই গভর্নরকেও বিনা অনুমতিতে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার পরবর্তী রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী কে হবেন?
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কার ত্রাণকর্তা কে হবেন। এই প্রশ্ন শ্রীলঙ্কায় সবার মুখে মুখে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি পদের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন স্পিকার অভয়বর্ধনে। শ্রীলঙ্কায় ক্ষমতাসীন দলের সমর্থন রয়েছে অভয়বর্ধনেকে। অন্যদিকে, সজিথ প্রেমাদাসা হতে পারেন শ্রীলঙ্কার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। বিরোধী দলগুলো একসঙ্গে প্রেমাদাসাকে সমর্থন করতে পারে। সজিথ প্রেমাদাসা শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রণসংঘে প্রেমাদাসার পুত্র। যিনি অফিসে থাকা অবস্থায় খুন হন। সজিথ ইতিমধ্যেই বলেছেন যে তিনি নেতৃত্ব নিতে প্রস্তুত। রনিল বিক্রমাসিংহের কথা বলতে গেলে তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। তারাও স্থাপনা ধরে রেখেছে। কিন্তু জনগণ তাদের বিরুদ্ধে এবং তারা যেভাবে তাদের বিরোধিতা করছে। তার দিকে তাকালে মনে হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক থেকে তিনি এগোতে পারবেন না।
অনেক বড় ঘোষণা দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি মো
শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বেশ কিছু ঘোষণা দিয়েছেন। শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রপতির জন্য আর আনুষ্ঠানিকভাবে মহামান্য শব্দটি ব্যবহার করা হবে না। এর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির পতাকাও অপসারণ করা হয়েছে। বিক্রমাসিংহে বলেছেন, কোনো দলকে সংসদ ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না। এর পাশাপাশি দেশের সংসদ সদস্যদেরও নিরাপত্তা দেওয়া হবে যাতে তারা তাদের কথা রাখতে পারেন। চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল কমিটিকে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য মুক্ত হাত দেওয়া হয়েছে। এতে তিন বাহিনীর কমান্ডাররাও থাকবেন।
শ্রীলঙ্কার সংকটের সম্পূর্ণ সময়রেখা জানুন
১৫ মার্চ ২০২২: রাজাপাকসে পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু হয়। সরকার খাদ্য সামগ্রীর ওপর জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
2 এপ্রিল 2022: রাষ্ট্রপতির বাসভবনের বাইরে সহিংস বিক্ষোভের কারণে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
4 এপ্রিল 2022: প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের ছেলে নামাল রাজাপাকসেসহ ২৬ জন মন্ত্রী একযোগে পদত্যাগ করেছেন।
৬ মে ২০২২: পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। দেশে ফের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
৯ মে ২০২২: মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। নতুন রাষ্ট্রপতি হলেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
৫ জুলাই ২০২২: শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
৯ জুলাই ২০২২: বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রপতি ভবন দখল করে। প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া তার বাসভবন থেকে পালিয়ে যান।
১০ জুলাই ২০২২: বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর গ্রেফতার করা হয় ৩ জনকে।
11 জুলাই 2022: 15 জুলাই সংসদের নতুন অধিবেশন এবং 22 জুলাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছিল।
12 জুলাই 2022: শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং গোটাবায়ার ভাই ভাসিল রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন কিন্তু কলম্বো বিমানবন্দরে তাকে থামানো হয়।
১৩ জুলাই ২০২২: প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। সহিংস বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
১৪ জুলাই ২০২২: প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী ও দুই দেহরক্ষী।
১৫ জুলাই ২০২২: গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে। অন্তর্বর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে।