বাংলাদেশঃ কমলাপুরে রনির অবস্থান, কারণ জানতে চান হাইকোর্ট

বাংলাদেশঃ  কমলাপুরে রনির অবস্থান, কারণ জানতে চান হাইকোর্ট

সান নিউজ ডেস্ক: রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা, যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে হাতে শিকল বেঁধে কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান নেয়া ঢাবি শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির অবস্থান কর্মসূচির কারণ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (২০ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে রনির বিষয়ে তথ্য জানানোর জন্য বলেন আদালত। এ সময় আদালত দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিককে তার আন্দোলনের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে বলেন।

হাইকোর্ট বলেন, আমরা পত্রিকায় দেখলাম একটি ছেলে আন্দোলন করছে। ছেলেটি যে আবেদন করেছে সেটা নাকি সচিব গ্রহণ করেছেন। কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া দরকার।

জানা গেছে, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ বসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিকের কাছে রনির অবস্থানের কারণ জানতে চান আদালত। তখন মানিক বলেন, আমরাও পত্রিকা ও বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি, রেলপথে টিকিটবাণিজ্য ও অনিয়ম নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন ওই ঢাবি শিক্ষার্থী।

আদালত বলেন, ঘটনা কী, খোঁজ নেন। কমলাপুর রেলস্টেশনে একজন ছেলে দিনের পর দিন অবস্থান করছেন, পত্র-পত্রিকা, ফেসবুক, ইউটিউব সবখানে বিষয়টি ভাইরাল এবং আলোচনা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখুন সমস্যা সমাধান করা যায় কি না।

এর আগে গত ৭ জুলাই থেকে রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা-যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে ছয়দফা দাবিতে হাতে শিকল বাঁধা অবস্থায় কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। শুরুতে একা আন্দোলন করলেও পরে তার বন্ধু, সহপাঠীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও অবস্থান নেন। কদিন ধরে সেখানে তারা গান, কবিতা, পথনাটকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।

এদিকে, রনির এ কর্মসূচি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। রেলওয়ের অনিয়ম ও ভোগান্তির বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষ তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছেন। একই দাবিতে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনেও শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন।

আন্দোলনের কারণ জানতে চাইলে রনি জানান, গত ১৩ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা-রাজশাহী রুটের ট্রেনের আসন নিবন্ধনের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা সংস্থা বিকাশ থেকে ভেরিফিকেশন কোড দিয়ে তার পিন কোড ছাড়াই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু ট্রেনের কোনো আসন পাননি, এমনকি কেন টাকা নেওয়া হলো, তার কোনো রশিদও দেওয়া হয়নি।

এর মধ্যে রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা এবং ভোগান্তির প্রতিবাদে ছয় দফা দাবিসহ গত ৭ জুলাই কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অবস্থান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেন মহিউদ্দিন রনি। তৃতীয় দিন ৯ জুলাই পুলিশ সদস্যরা তাকে বাধা দেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। ফলে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি স্থগিত রেখে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অবস্থান অব্যাহত রাখেন। এর মধ্যে গত ১৯ জুলাই লংমার্চ শুরু করেন রনি।

সান নিউজ/কেএমএল