মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ১৫ বিষয় না জানলেই নয়!

মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ১৫ বিষয় না জানলেই নয়!

#কলকাতা: মিউচুয়াল ফান্ডে (Mutual Fund) বিনিয়োগে অনেকেই আগ্রহী, কিন্তু লগ্নির আগে পুরোটা জানা দরকার। এখানে রইল মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে সাধারণ ১৫টি বিষয়ের উত্তর।

মিউচুয়াল ফান্ড কীভাবে কাজ করে –

বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন ধরনের মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা বিনিয়োগ করেন। মিউচুয়াল ফান্ডের সেই টাকা বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ করা হয়। বিনিয়োগের সেই টাকা রিটার্ন পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের শেয়ারের মাধ্যমে। মিউচুয়াল ফান্ড ম্যানেজ করেন বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা যাঁদের এই বাজার সম্পর্কে সঠিক ধারণা রয়েছে।

মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে কত টাকা বিনিয়োগ করতে হয় –

এখানে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী টাকা বিনিয়োগ করা যায়। আগে মিউচুয়াল ফান্ডে ৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যেত। এখন বিনিয়োগকারীদের কথা মাথায় রেখে মিউচুয়াল ফান্ড শুরু করা যায় ১০০ টাকা থেকেই।

মিউচুয়াল ফান্ডের রিটার্ন –

প্রায় প্রতিটি বিনিয়োগেই বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু যাঁরা দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে চান তাঁদের জন্য উপযুক্ত হল মিউচুয়াল ফান্ড। কারণ এখানে দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করলে ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। বাজারের ওঠা-নামার ওপরে এর রিটার্ন নির্ভর করে। কিন্তু অল্প সময়ের থেকে দীর্ঘ সময়ে বিনিয়োগ করলে মিউচুয়াল ফান্ডে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

মিউচুয়াল ফান্ড স্বভাবে লিকুইড –

মিউচুয়াল ফান্ডের অ্যাসেট হল এই লিকুইডিটি। এই ফান্ডে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী বেরিয়ে যেতে পারেন। খুব কম সময়ের জন্য এই স্কিম থেকে বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে সময়ের উপর নির্ভর করে রিটার্নের অঙ্ক।

কোন ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ড সবথেকে বেশি রিটার্ন দেয় –

যে সকল বিনিয়োগকারীরা শর্ট টার্ম বিনিয়োগের কথা ভাবেন তাঁদের জন্য সিকিউরিটি ইনভেস্টমেন্ট খুব একটা ভালো অপশন নয়। এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের কাছে ভালো অপশন হল মিউচুয়াল ফান্ডের লিকুইড ফান্ড কারণ এই ফান্ডে ৭ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া সম্ভব।

কোন শেয়ার বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে উপযুক্ত –

এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের লক্ষ্য অনুযায়ী সেটি নির্বাচন করা উচিত। কারণ মিউচুয়াল ফান্ডে তিনটি ক্লাস রয়েছে। এ শেয়ার, বি শেয়ার এবং সি শেয়ার। তিনটি শেয়ারের মধ্যে পার্থক্য হল টাকার পরিমাণ। প্রত্যেকটি ক্লাসেই বিনিয়োগকারীরা একই ধরনের সুবিধা এবং সুরক্ষা পেয়ে থাকেন। শুধু বিনিয়োগকারীদের নিজেদের লক্ষ্য এবং বিনিয়োগের পরিমাণ অনুযায়ী শেয়ার ক্লাস বেছে নেওয়া প্রয়োজন।

নেট অ্যাসেট ভ্যালু (NAV) আসলে কী –

মিউচুয়াল ফান্ডের টোটাল অ্যাসেটের ভ্যালু হল নেট অ্যাসেট ভ্যালু। মিউচুয়াল ফান্ডের বিভিন্ন ইউনিট দ্বারা এটি ডিভাইড হয়। এই ভ্যালু প্রতিদিনের টাকার ইউনিট প্রাইজের সমান হয়। প্রতিদিন একবারই নির্ধারণ করা হয় নেট অ্যাসেট ভ্যালু।

এক্সপেন্স রেশিও কী –

এটি হল একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ যা ফান্ড ম্যানেজারকে দিতে হয়। খরচ করা হয় বিভিন্ন ধরনের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ এবং অন্যান্য খাতে। এটিকে এক্সপেন্স রেশিও বলা হয় এবং ম্যানেজমেন্ট এক্সপেন্স রেশিও বলা হয়ে থাকে।

সিস্টেমিক ইনভেসমেন্ট প্লান (SIP) কী –

মিউচুয়াল ফান্ডের একটি জনপ্রিয় প্ল্যান হল সিস্টেমিক ইনভেস্টমেন্ট প্লান। এই প্ল্যানে বিনিয়োগকারীরা নির্দিষ্ট একটি টাকা প্রতি মাসে জমা করতে পারেন মিউচুয়াল ফান্ডে। নির্দিষ্ট মাসের নির্দিষ্ট তারিখে বিনিয়োগকারীদের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে সেই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা পড়ে যাবে মিউচুয়াল ফান্ডের সিস্টেমিক ইনভেস্টমেন্ট প্লানে। লম্বা সময়ের জন্য এই প্ল্যান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ফান্ড ম্যানেজারের গুরুত্ব –

মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার জন্য ফান্ড ম্যানেজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কোন ফান্ডে বিনিয়োগ করলে বেশি রিটার্ন পাওয়া যাবে এবং কোন ফান্ড বিনিয়োগকারীদের কাছে লাভজনক, তা ফান্ড ম্যানেজারদের পক্ষেই বলা সম্ভব। কিন্তু নিজেদের ফান্ড ম্যানেজার বেছে নেওয়ার আগে তাঁর সম্পর্কে জেনে নেওয়া প্রয়োজন।

ট্যাক্স বেনিফিট –

কেউ যদি কোওন ট্যাক্স সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগ করেন, তাহলে সেক্ষেত্রে সেকশন ৮০সি অনুযায়ী দেড় লাখ টাকার ট্যাক্স ছাড় পাবেন। এই সুবিধা পাওয়া যায় ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিং স্কিমে (ELSS)।

মিউচুয়াল ফান্ড কি ব্যাঙ্ক ডিপোজিটের থেকে লাভজনক –

মিউচুয়াল ফান্ড হল বিনিয়োগের একটি মাধ্যম। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকারীরা ব্যাঙ্ক ডিপোজিটের থেকে বেশি রিটার্ন পেয়েছেন। বিগত তিন বছরে মিউচুয়াল ফান্ড দ্বিগুন বেড়েছে। অন্য দিকে, ব্যাঙ্ক ডিপোজিট মাত্র ৩৪ শতাংশ গ্রো করেছে।

মিউচুয়াল ফান্ডে নেগেটিভ রিটার্ন পেলে কী করা উচিত –

এটি সব সময় নির্ভর করে সময়ের উপর। কেউ যদি বেশি সময়ের জন্য মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেন তাহলে নেগেটিভ রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। অন্য দিকে, খুব কম সময়ের জন্য মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলে সেই অনুযায়ী ফান্ড বেছে নেওয়া দরকার।

ভারতে মিউচুয়াল ফান্ডের বাজার –

ভারতে ক্রমাগত হারে বেড়ে চলেছে মিউচুয়াল ফান্ডের বাজার। ২০১৮ সাল থেকে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ। বর্তমানে সিস্টেমিক ইনভেস্টমেন্ট প্লানের বুক সাইজ প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার।

নন রেসিডেন্ট ইন্ডিয়ান (NRI) কি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন –

নন রেসিডেন্ট ইন্ডিয়ানরাও মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট (FEMA) দ্বারা তাঁদের বিনিয়োগ করতে হবে।

Published by:Dolon Chattopadhyay

(Source: news18.com)