বাংলাদেশঃ ৩১ কর্মকর্তা-প্রতিষ্ঠান পেলো সম্মাননা

বাংলাদেশঃ  ৩১ কর্মকর্তা-প্রতিষ্ঠান পেলো সম্মাননা

সান নিউজ ডেস্ক : ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ প্রথমবারের মতো পেলেন প্রশাসনের ২৭ জন কর্মকর্তা ও ৪টি সরকারি প্রতিষ্ঠান।

আরও পড়ুন :

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা, মননশীলতা ও উদ্ভাবনী প্রয়াসকে উৎসাহিত করতে ‘জনপ্রশাসন পদক’ প্রদান করা হতো। এবার ‘জনপ্রশাসন পদক’-এর নাম বদলে নতুন আঙ্গিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানে কর্মকর্তাদের এ পদক দেওয়া হলো।

রোববার (২৩ জুলাই) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২৭ জন কর্মকর্তা, তিনটি মন্ত্রণালয় ও একটি ইউনিটের কাছে পদক তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পদক তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

আরও পড়ুন :

‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা, ২০২২’ অনুযায়ী সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন প্রশাসন, মানব উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দুর্যোগ ও সংকট মোকাবিলা, অপরাধ প্রতিরোধ, জনসেবায় উদ্ভাবন, সংস্কার, গবেষণা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক দেওয়া হয়েছে।

‘সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা’য় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তি দর্শন বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমি পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নের ধারণা বাস্তবে রূপায়ণ করে ‘উন্নয়ন প্রশাসনে’ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক পেয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন।

আরও পড়ুন :

‘মানব উন্নয়ন’ক্ষেত্রে দলগতভাবে পদক পেয়েছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, বাগেরহাট মোল্লারহাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ওয়াহিদ হোসেন, মোল্লারহাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দ্য মন্ডল ও মোল্লারহাটের উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. কামাল হোসেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব কাজী মো. আব্দুর রহমান (নেত্রকোণার সাবেক জেলা প্রশাসক), নেত্রকোণার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক উপ-পরিচালক (বর্তমানে পিআরএল ভোগরত), নেত্রকোণা খালিয়াজুরির উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম, খালিয়াজুরির সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) (বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে যোগ দেওয়া) নাহিদ হাসান খান ও নেত্রকোণার মদনের উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুর রহমান ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন’ ক্ষেত্রে পদক পেলেন।

আরও পড়ুন :

‘দুর্যোগ ও সংকট মোকাবিলা’য় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) এ এইচ এম আব্দুর রকিব, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহিদ নজরুল চৌধুরী এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাকিউল ইসলাম পদক জিতেছেন।

‘অপরাধ প্রতিরোধ’ ক্ষেত্রে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন, গোপালগঞ্জের স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক আজহারুল ইসলাম (মাদারীপুরের স্থানীয় সরকারের সাবেক উপ-পরিচালক), মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ঝোটন চন্দ, মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ-আবু-জাহের দলগতভাবে পদক পেয়েছেন।

‘জনসেবায় উদ্ভাবন’ ক্ষেত্রে দলগতভাবে পদক পেলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ঢাকার জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম ও সুরক্ষা ডেভেলপার ইউনিট।

ভূমি তথ্য ব্যাংকের জন্য ‘সংস্কার’ ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পদক পেয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন :

এছাড়া ‘গবেষণা’য় বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান ও ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) পারভেজুর রহমান পদক পেয়েছেন।

কুমিল্লার ডিসি মোহাম্মদ কামরুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাজমা আশরাফী, সহকারী কমিশনার ফাহিমা বিনতে আখতার ও নাসরিন সুলতানা নিপা ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ খাতে পদক জিতে নিয়েছেন।

জনপ্রশাসনে কর্মরত কর্মচারীদের সৃজনশীল ও গঠনমূলক কার্যক্রম উৎসাহিত করার মাধ্যমে কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়নে উৎসাহিতকরণ ও সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অধিকতর গতিশীল করতে সরকার ২০১৬ সালের ২৩ জুলাই প্রথমবারের মতো জনপ্রশাসন পদক দেয়।

২৩ জুলাই জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপনের অংশ হিসেবে এই পদক দেওয়া হয়। পদক দিতে ‘জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা ২০১৫ (২০১৬ সালে সংশোধিত)’ করা হয়। এ বছর সেই নীতিমালা বাতিল করে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা, ২০২২’ প্রণয়ন করা হয়।

আরও পড়ুন :

পুরস্কার হিসেবে একটি স্বর্ণপদক (২১ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের) এবং রাষ্ট্রীয় মনোগ্রাম সংবলিত সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যক্তিগত অবদানের জন্য ২ লাখ টাকা, দলগত অবদানের জন্য ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। দলগত অবদানের ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ৫ জন। দলের প্রত্যেক সদস্যকে স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট দেওয়া হয় এবং নগদ পুরস্কারের ৫ লাখ টাকা সদস্যদের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করা হবে। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি/দলের অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীরা এবং এর আগে জাতীয় পর্যায়ে জনপ্রশাসন পদক প্রাপ্ত ব্যক্তি/দলের অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীরা নামের শেষে ‘পাবলিক অ্যাডমিস্ট্রেটিভ অ্যাওয়ার্ড’ এর সংক্ষিপ্তরূপ ‘পিএএ’ টাইটেল ব্যবহারের পরিবর্তে সরকারি আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিতে পোশাকের সঙ্গে সরকার অনুমোদিত বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকের মনোগ্রাম ব্যবহার করতে পারবেন বলে নতুন নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

পুরস্কার প্রদান পর্বটি পরিচালনা করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম। তিনি জানান, ‘পরিবেশন উন্নয়ন’ এবং ‘সামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ ক্ষেত্রে মানসম্মত আবেদন না পাওয়ায় এ দুটি ক্ষেত্রে এবার পদক দেওয়া হচ্ছে না।

সান নিউজ/এইচএন