মুখের লোম নিয়ে নেই আক্ষেপ, সমাজের ‘ব্যঙ্গ’কে উড়িয়ে গোঁফ রাখলেন এই মহিলা!

মুখের লোম নিয়ে নেই আক্ষেপ, সমাজের ‘ব্যঙ্গ’কে উড়িয়ে গোঁফ রাখলেন এই মহিলা!

#কেরল: জেন্ডার বা সামাজিক লিঙ্গের অযৌক্তিক আচরণকে ভেঙে দিচ্ছেন কেরলের বছর ৩৫-এর শাইজা! শরীরে নারী হলেও, তিনি গর্বিত তাঁর সুন্দর গোঁফ নিয়ে। ছেলেদের দাড়ি গোঁফ রইলেও একজন মহিলার মুখে বেশি লোম থাকলে অকারণ নানা মন্তব্য ও ব্যঙ্গ উড়ে আসে সমাজের জানলা দিয়ে। সমাজ যাকে ‘অস্বাভাবিক’ বলে মনে করে শাইজার তাকেই স্বাভাবিক করে তুলছেন। এই গোঁফই তাঁর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য। “আমি আমার গোঁফ পছন্দ করি,” বলেন শাইজা৷

শাইজা কোনও পদবি ব্যবহার করেন না। তিনি জানান, লোকজন তাঁর ছবি দেখে বা ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে আলাপ হলে নিয়মিত এই ‘অস্বাভাবিক গোঁফ’ নিয়েই প্রশ্ন করেন। আর এই সব প্রশ্নগুলির প্রতি শাইজা উদাসীন। প্রশংসা এবং উপহাস দুই’ই শুনেছেন শাইজা।

আরও পড়ুন- এবার নজরে ফারুক আবদুল্লাহ! ক্রিকেটের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় চার্জশিট দাখিল ইডির

কেরলের কান্নুর জেলার বাসিন্দা শাইজার শরীরের এবং ঠোঁটের উপরের অংশে লোম বেশি ছিল, যেমন অনেক দক্ষিণ এশীয় মহিলারই থাকে। প্রাকৃতিকভাবে শরীরে এবং মুখে বেশি লোম দক্ষিণ এশীয় মহিলাদের মধ্যে খুব সাধারণ বিষয়। ‘অবাঞ্ছিত লোম’ তুলে ফেলার জন্য সকলেই নানা পরামর্শ দেন তাঁদের।

শাইজা কিন্তু ঠোঁটের উপরের অংশের লোম তুলে ফেলার বা ওয়াক্সিং করানোর প্রয়োজন মনে করেননি কখনও। যদিও নিয়মিত ভ্রু প্লাক করেন তিনি। “আমি এখন গোঁফ ছাড়া বাঁচার কথার কল্পনাও করতে পারি না। যখন কোভিড মহামারী শুরু হয়েছিল, তখন আমি মাস্ক পরা সব সময়ই অপছন্দ করতাম কারণ এতে আমার মুখ ঢাকা থাকে। আমি কখনই অনুভব করিনি যে আমি সুন্দর নই কারণ আমার গোঁফ আছে। বা এটা এমন কিছু যা আমার থাকা উচিত নয়। আমি যা পছন্দ করি তাই করি। আমার যদি দু’টি জীবন থাকত, তাহলে হয়তো আমি অন্যদের জন্য বাঁচতাম,” সোজাসাপটা উত্তর শাইজার।

এই আত্মবিশ্বাস শাইজা পেলেন কোথা থেকে? সম্ভবত বছরের পর বছর ধরে নানা স্বাস্থ্য সমস্যার মোকাবিলা করতে করতেই এই মনের জোর। গত এক দশকে তাঁর ছয়টি অপারেশন হয়েছে। চিকিত্সকরা স্তনে একটি টিউমার এবং ডিম্বাশয়ের সিস্টের অপারেশন করেন এবং পাঁচ বছর আগে, জরায়ু বাদ দেওয়ার জন্য হিস্টেরেক্টমি অস্ত্রোপচারও করা হয়েছিল।

“যতবার অস্ত্রোপচার হয়েছে, আমি ভেবেছি আমাকে আর কখনও অপারেশন থিয়েটারে ফিরে যেতে হবে না,” বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি। বারবার স্বাস্থ্য সমস্যা কাটিয়ে ওঠা শুধু শাইজার দৃঢ় প্রত্যয়কে আরও শক্তিশালী করেছে। জীবনকে এখন এমনভাবেই কাটাতে চান তিনি যাতে তাঁর অগাধ আনন্দ।

Published by:Madhurima Dutta

(Source: news18.com)