প্রেমে প্রত্যাখ্যান! আগুন ধরিয়ে ৭ জনকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক!

প্রেমে প্রত্যাখ্যান! আগুন ধরিয়ে ৭ জনকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক!

ইন্দোর: ইন্দোরের বিজয় নগর এলাকায় একটি তিনতলা বাড়িতে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের অভিযোগে শনিবার গভীর রাতে ২৭ বছর বয়সী এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মর্মান্তিক ওই অগ্নিকাণ্ডে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে অভিযুক্ত ‘প্রেমিক’ শুভম দীক্ষিত একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। যার গাড়ি, সেই যুবতী শুভমের প্রেম প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার ভোরে শুভম ওই তিনতলা বাড়ির পার্কিং এলাকায় রাখা গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পর, আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং বাড়িটিকে গ্রাস করে। অভিযুক্ত শুভমকে গ্রেফতার জন্য ব্যাপক তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

এর আগে পুলিশ জানিয়েছিল, নিচতলায় শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। বিজয় নগর থানার পুলিশ আধিকারিক তেহজিব কাজী জানান, বৈদ্যুতিক মিটারে শর্ট সার্কিট হয়েই আগুনের সূত্রপাত। আগুন অবিলম্বে পার্কিং এলাকায় থাকা যানবাহনগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে দমকলকর্মীরা দেরিতে আসেন। প্রাণে বাঁচতে কিছু বাসিন্দা নিজেদের ফ্ল্যাটের বারান্দা বা ছাদ থেকেও লাফ দেন এবং গুরুতর আহত হন। দমকল আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বিজয় নগরের ঘনবসতিপূর্ণ স্বর্ণবাগ কলোনি এলাকায় অবস্থিত বাড়িটিতে ভোর ৩ টে থেকে ৪ টের মধ্যে আগুন লাগে।

পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) সম্পত উপাধ্যায় জানান, অগ্নিকাণ্ডে নিহত সাতজনের মধ্যে ঈশ্বর সিং সিসোদিয়া এবং তাঁর স্ত্রী নীতু সিসোদিয়া নামে এক দম্পতি রয়েছেন। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে আরও একজন মহিলা রয়েছে, যাঁর নাম আকাঙ্খা। এই ঘটনায় নয়জন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী অক্ষয় সোলাঙ্কি বলেন, “পরে, বাড়ি থেকে দুই, তিনটি মৃতদেহ বের করে আনা হয়। কেউই চেনার মতো অবস্থায় ছিল না।” দমকল বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে দেরিতে পৌঁছয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। “তাঁরা সময়মতো পৌঁছলে হয়তো কিছু জীবন বাঁচানো যেত,” বলেন অক্ষয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, আগুনের লেলিহান শিখা এবং ঘন ধোঁয়ায় বাড়িটি ঢেকে গিয়েছে, বিদ্যুতের তারে অগ্নি স্ফুলিঙ্গ দেখা যাচ্ছে এবং মানুষের কান্নার শব্দ আর সাহায্যের জন্য চিৎকার বেড়ে যাচ্ছে ক্রমাগত।

স্থানীয় লোকজনকে জলের বালতি দিয়ে আগুন নেভানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতেও দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বাড়িটিতে অগ্নি নির্বাপক কোনও নিরাপত্তা ব্যবস্থাই ছিল না। দমকল কর্মীরা জানান, সরু গলির কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে অসুবিধা হয় তাঁদের। শ্বাসকষ্টজনিত কারণে বেশিরভাগ আক্রান্তদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করে, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান একটি টুইটে বলেন, “আমি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মৃতদের পরিবারকে প্রত্যেককে ৪ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।” পুলিশ কমিশনার মিশ্র জানান বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারার অধীনে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হবে।

Published by:Madhurima Dutta

First published: