ভালবাসা নাকি পাগলামি? স্ত্রীর মরদেহ ২১ বছর আঁকড়কে কী প্রমাণ করলেন বৃদ্ধ!

ভালবাসা নাকি পাগলামি? স্ত্রীর মরদেহ ২১ বছর আঁকড়কে কী প্রমাণ করলেন বৃদ্ধ!

ব্যাংকক: সঙ্গীকে হারানোর যন্ত্রণা খুবই বেদনাদায়ক৷ তবে মৃত্যু কি আটকানো যায়? ভালবেসে সেবা-সুশ্রুষায় কাউকে সুস্থ করে তোলা যায়, তবে মৃত মানুষকে বাঁচিয়ে আনা যায় না কোনও মতেই৷ ভাগ্যকে মেনে নিয়েই প্রিয় মানুষের বিদায়ের যন্ত্রণা বুকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে আত্মীয়-বন্ধুদের৷ তবে এই মৃত্য মানতে না পারলে সমস্যা৷ ঠিক যেমন ঘটেছে থাইল্যান্ডের একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তির সঙ্গে৷ ২১ বছর আগে স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন তিনি৷ সেই মৃত্যুর খবর তিনি মেনে নিতে পারেননি৷ খুবই শোকগ্রস্থ হয়ে পড়েন এবং ২১ বছর তিনি সেই দেহ নিয়ে বসবাস করছিলেন বলে খবর! এ যে কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটের ঘটনা ফিরে এল বীভৎস আকারে!

২০০১-এ সালে ৭২ বছর বয়সী চরণ জনবাচকলের স্ত্রী মারা যান। তার স্ত্রী স্থানীয় স্বাস্থ্য দফতরে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর,তার মরদেহ বাড়িতেই রেখে দেন চরণ৷ বাড়ির স্টোররুমে একটি কফিনের মধ্যে সযত্নে রাখা ছিল দেহ। খবর জানাজানি হতে তিনি জানান যে, স্ত্রীকে খুব ভালোবাসেন তিনি৷ স্ত্রী বিয়োগ কোনও ভাবে মানতে পারেননি৷ স্ত্রীর থেকে আলাদা হওয়ার চিন্তা যে কুঁড়েকুঁড়ে খাচ্ছিল তাকে। তাই এমন ব্যবস্থা৷ স্ত্রীর মৃত্যুর পর, দেহ কফিনবন্দি করে বাড়িতেই রেখে দেন চরণ৷

শেষে পর্যন্ত এই বছর ৩০ এপ্রিল স্ত্রীর কফিনবন্দি মহদেহ কবর দেন তিনি। এক স্বেচ্ছ্বাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় স্ত্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন চরণ। সেই সময় হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকেন তিনি। স্ত্রীর মৃত্যুর এতগুলো বছর পরও বাস্তবটা মেনে নিতে কষ্ট হয় চরণের৷ শেষকৃত্যের সময়ও দেখা যায়, কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে প্রিয়তমাকে ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন তিনি৷ এমন প্রেমই তো অমর! ব্যাংককে এই ব্যক্তি বাস্তবে প্রেমের আসল রূপ ফুটিয়ে তুললেন৷

গত ২১ বছর ধরে একা রয়েছেন চরণ। বাড়িতে পড়ে রয়েছে তাঁর মেডিক্যাল ডিগ্রি যা দেখে যানা যায় যে একসময় তিনি রয়্যাল থাই আর্মিতে ডাক্তার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু গত বিশ বছর ধরে একাকীত্বে জীবন কাটছে তার৷ স্ত্রীর মৃত্যুর পর পোষ্য বিড়াল এবং কুকুরের সাথে সময় কাটে তার। তার বাড়িতে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ, এমনকি জলের কোনও পাইপ নেই৷ জলের জন্য প্রতিবেশীর বাড়ির ওপর নির্ভরশীল এই ব্যক্তি। অর্থাৎ স্ত্রীর মৃত্যুর পর কোনও মতে দিন গুজরান করেন চরণ৷ শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর শেষকৃত্য করার পিছনেও রয়েছে এক কারণ৷ তিনি মনে করতেন যে, তার মৃত্য হলে তার স্ত্রীর কফিনবন্দি দেহের খেয়াল রাখার কেউ থাকবেন না!

Published by:Pooja Basu

First published: