নয়াদিল্লি: প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার কথা শোনা গিয়েছে বার বার। সেই পথে আরও একধাপ এগোল ভারত, অন্তত সংসদে কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণা, তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতের তেজস যুদ্ধবিমান (Tejas Fighter Jet) কিনছে মালয়েশিয়া সরকার (Malaysia Government)। শুধু তাই নয়, আমেরিকা, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপিন্সের মতো দেশও তেজস কিনতে আগ্রহী বলে দাবি কেন্দ্রের।
তেজসকে নিয়ে আশাবাদী দিল্লিও
তাই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে (Indian Defence) ভারতের আত্মনির্ভর হওয়ার পথ আরও সুগম হল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, গত বছরই রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (হ্যাল)-কে ৮৩টি তেজস তৈরির বরাত দেয় সরকার। তার জন্য ৪৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২৩-এর শেষ দিকে সেগুলি হাতে এসে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। তার মধ্যে তেজস-কে ঘিরে অন্য দেশের এই আগ্রহে আশা বাড়ছে দিল্লিরও। কারণ চিন, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াকে টপকে ভারতের তৈরি তেজস-ই মালয়েশিয়ার প্রথম পছন্দ বলে জানা গিয়েছে।
এর জন্য তেজসের গড়ন এবং প্রযুক্তিকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ কামার আঘা। তাঁর মতে তেজসের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল এর ওজন। সুখোইয়ের থেকে ওজনে অনেক বেশি হালকা তেজস। তাই সকলের পছন্দ হয়ে উঠছে। কামার বলেন, ‘‘আট টন পর্যন্ত ওজন বহনে সক্ষম তেজস। সুখোই ওজনে ভারী। কিন্তু সুখোইয়ের সমানই অস্ত্রশস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম তেজস। এ ছাড়াও দুরন্ত গতিও এগিয়ে রেখেছে তেজসকে। ৫২ হাজার ফুট উচুঁতেও এর গতির জুড়ি মেলা ভার।’’
কামার আরও জানিয়েছেন, তেজস মার্ক-1A সুখোই-30MKI যুদ্ধবিমানের চেয়ে মহুমূল্যও। কিন্তু এতে অত্যআধুনিক প্রযুক্তি রয়েছে। ইজরায়েলে তৈরি রেডার প্রযুক্তি বসানো রয়েছে এতে। এ ছাড়াও, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি রেজার রয়েছে। ওজনে যেমন হালকা, তেমনই যুদ্ধে তুখোড়। এককথায় তেজস বহুমুখী যুদ্ধবিমান বলে মত কামারের।
বিদেশেও চাহিদা বাড়ছে তেজসের!
২০০১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথম বার আকাশে ওড়ে তেজস। ২০১৬ সালে বায়ুসেনার অন্তর্ভুক্ত করা হয় তেজসকে। ঝুঁকিপূর্ণ অভিযান বা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহারের উপযুক্ত এই যুদ্ধবিমান মাঝ আকাশেই জ্বালানি ভরতে সক্ষম। বহু দূর থেকে শত্রুপক্ষের বিমানে আঘাত হানতে পারে। শুধু তাই নয়, শত্রুপক্ষের রেডারকে ফাঁকি দিতেও সক্ষম। এই মুহূর্তে বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধবিমানের যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, তা পূরণ তেজস গেম চেঞ্জার হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।