এআইএফএফ-কে নির্বাসিত করল ফিফা:
তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কারণে ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা এআইএফএফ-কে নির্বাসিত করল ফিফা। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার আইনে স্পষ্ট ভাবে বলা রয়েছে ফিফা স্বীকৃত প্রতিটি দেশের ফুটবল সংস্থা হবে স্ব-শাসিত। এই সংস্থায় কোনও হস্তক্ষেপ থাকবে না, সরকার বা কোনও তৃতীয় পক্ষের। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশে নিযুক্ত কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর (সিওএ) এআইএফএফ-এর অভ্যন্তরীন বিষয়ে ঢোকার ফলেই নির্বাসিত হতে হল ফেডারেশনকে।
এআইএফএফ-এ সিওএ-এর অন্তর্ভুক্তি:
দেশের ফটবলের সর্বোচ্চ সংস্থায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে মামলা হয় আলাদতে। ১২ মে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন দিল্লি ফুটবল ক্লাবের শীর্ষ কর্তা। তিনি অভিযোগ জানান, বেআইনি ভাবে এক দশকের বেশি সময় এআইএফএফ-এর শীর্ষ পদ দখল করে বসে রয়েছেন প্রফুল প্যাটেল।
সেই মামলার শুনানিতে দেশের শীর্ষ আদালত রায় দেয় নির্বাচন করে নতুন কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত ফেডারেশনের সমস্ত দায়িত্ব এবং কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে তিন সদস্যের সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটির মাধ্যমে। এই কমিটিতে রয়েছে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাক্তন বিচারক অনিল ডাভে এবং প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি। এর পরই শুরু হয় জটিলতা কারণ ফিফা কখনও কোনও দেশের ফুটবল সংস্থার উপর রাজনৈতিক বা সরকারি হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করে না এবং এই কারণে তারা নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল পাকিস্তানকে।
ভারতীয় ফুটবলের পরিস্থিতি খাতিয়ে দেখতে ভারতে আসে ফিফা এবং এএফসি’র প্রতিনিধি দল:
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর ভারতীয় ফুটবলের পরিস্থিতি খাতিয়ে দেখতে ভারতে আসে ফিফা এবং এএফসি’র প্রতিনিধি দল। ওই সফরে এসে ফেডারেশনের দায়িত্বে থাকা সিওএ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয় প্রতিনিধি দলের। ফিফা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এআইএফএফ-এর নতুন সংবিধান চূড়ান্ত করতে হবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে। নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। নির্বাচনে যাঁরা জিতবেন সেই কমিটিকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করতে হবে, জানানো হয় ফিফার তরফে। ফিফার এই নির্দেশের পরই স্পষ্ট ছিল বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়া সমপন্ন করতে না পারলে নির্বাসনের মুখে পড়তে হবে ভারতীয় ফুটবলকে। ফলে ৩১ জুলাই পেরিয়ে যাওয়ার পর আরও ১৫ দিন অতিরিক্ত সময় দিয়েও যখন কাজ হয়নি তখন ভারতীয় ফুটবলে নেমে এল ফিফার শাস্তির খাড়া।
হাতছাড়া হওয়ার পথে অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ:
চলতি বছর ১১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর দেশের মাটিতে অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ আয়োজিত হওয়ার কথা। কিন্তু এই নির্বাসনের ফলে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ হয়তো হারাতে পারে ভারত। ফিফার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “পরিকল্পনা অনুযায়ী ১১-৩০ অক্টোবর ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ ভারতে হওয়ার কথা থাকলেও আপাতত তা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। টুর্নামেন্টের বিষয়ে পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা খাতিয়ে দেখছে ফিফা। ভারতের ক্রীড়ামন্ত্রকের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রেখে চলেছে ফিফা এবং তারা আশাবাদী এর সঠিক পথ খুঁজে বের করা সম্ভব হবে।”
কী ভাবে নির্বাসন মুক্ত হতে পারে এআইএফএফ:
এআইএফএফ’কে ফিফার নির্বাসন থেকে মুক্ত হতে হলে সিওএ’কে সরতে হবে এবং ক্ষমতায় আসতে হবে এআইএফএফ-এর নতুন এক্সিকিউটিভ কমিটিকে। নতুন এক্সিকিউটিভ কমিটি এআইএফএফ-এর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হাতে পেলে তবেই এই নির্বাসন থেকে মুক্ত হবে ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা।
(Source: oneindia.com)