প্রথম মঙ্গলে জলের মানচিত্র প্রকাশ
জীবনের সহায়ক জল। জল রয়েছে মানে জীবন রয়েছে। বিলিয়ন বছরের বিবর্তনে জল হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন মঙ্গলের পৃষ্ঠে তেমন কোনও চিহ্ন নেই। তবে রাসায়নিক ও বর্ণালি বিশ্লেষণে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে লালগ্রহে এক সময় নদী প্রবাহিত হত। এবং এই গ্রহে ছিল হ্রদ। মঙ্গলের এই মানচিত্র পাওয়ার পর ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি বা এসা এক ধাপ এগিয়ে গেল। তারাই প্রথম মঙ্গলে জলের মানচিত্র প্রকাশ করেছে।
মঙ্গলে কোথায় অবতরণ, মানচিত্রে প্রকাশ
মঙ্গলের এই মানচিত্রে শুধু নদী বা হ্রদের ছবিই স্পষ্ট হয়নি, এই মানচিত্রে দেখানো হয়েছে, মানুষ যদি কোনওদিন মঙ্গলে নামতে পারেন, তবে কোথায় কোথায় তাঁরা অবতরণ করতে পারবেন। মানচিত্রগুলি বিশদভাবে দেখিয়েছে গ্রহজুড়ে ছড়িয়ে থাকা খনিজ বস্তুগুলিকে। গত দশকের গবেষণা ও পর্যবেক্ষণে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এই মানচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছে।
প্রচুর পরিমাণ জলীয় খনিজ রয়েছে মঙ্গলে
মানুষ মঙ্গল গ্রহে পা রাখার আগে মানচিত্রটি সম্ভাব্য অবস্থান শনাক্ত করতে সাহায্য করবে। ইউরোপের মার্স এক্সপ্রেস অবজার্ভেটরি এবং আমেরিকার মার্স রিকনসেন্স অরবিটার এই স্থানগুলি শনাক্ত করতে একসঙ্গে কাজ করেছে। সেখানে প্রচুর পরিমাণ জলীয় খনিজ রয়েছে। এই খনিজগুলি পাথর থেকে তৈরি হয়, যা অতীতে রাসায়নিকভাবে জল দ্বারা পরিবর্তিত হয়েছে। এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা কাদামাটি ও লবণে পরিবর্তিত হয়েছে।
একটাই প্রশ্ন, জল স্থায়ী ছিল, নাকি সীমাবদ্ধ
বিজ্ঞানীরা গ্রহের কয়েকটি অংশে এই ধরনের হাজার হাজার খনিজ অবস্থান শনাক্ত করেছেন। গত দশকে বিস্তৃত পর্যবেক্ষণগুলি গ্রহের প্রাচীনতম অংশগুলিতেও কয়েক হাজার এলাকা প্রকাশ করেছে। সমস্ত গ্রহজুড়ে জলীয় খনিজ খুঁজে পাওয়া প্রমাণ করে যে, মঙ্গলে শুধুমাত্র জল কয়েকটি স্থানেই সীমাবদ্ধ ছিল না। গ্রহের চারপাশে ভূতত্ত্ব গঠনে একটি বিশাল ভূমিকা পালন করেছিল। এখন একটাই প্রশ্ন জল সেখানে স্থায়ী ছিল, নাকি সীমাবদ্ধ ছিল।
মঙ্গলে লবণ মাটির থেকে পুরনো বলে অনুমান
জন কার্টার ব্যাখ্যা করেছেন, বিজ্ঞানীরা প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলেন যে মঙ্গল গ্রহে কাদামাটির মতো খনিজ পদার্থ তৈরি হয়েছিল। তবে নতুন মানচিত্রে অন্য কিছু ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি বলেন, যদিও মঙ্গলগ্রহের অনেক লবণ সম্ভবত কাদামাটির থেকে পরে তৈরি হয়েছিল। মানচিত্রে আরও দেখা যায় লবণ ও কাদামাটির ঘনিষ্ঠ মিশ্রণ রয়েছে। কিছু লবণ মাটির থেকে পুরনো বলে অনুমান করা হয়।
কমপ্যাক্ট রিকনাইসেন্স ইমেজিং স্পেকট্রোমিটার থেকে ডেটা
এসার প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জল ও জলের বিবর্তন ততটা স্পষ্ট নয় মানচিত্রে। তবে ভূতাত্ত্বিক প্রেক্ষাপটে বিশাল বৈচিত্র্য দেখতে পাওয়া যায়। আবার মঙ্গলে খনিজ পদার্থের বিবর্তনও ব্যাখ্যা করা যায় না। তবে পৃথিবীর মতো খনিজবিদ্যার বৈচিত্র্য প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়। ভূতত্ত্ববিদরা লাল গ্রহের সার্ভে করার জন্য মার্স এক্সপ্রেসের ওমেগা যন্ত্র ও এমআরও-তে মার্সের জন্য কমপ্যাক্ট রিকনাইসেন্স ইমেজিং স্পেকট্রোমিটার থেকে ডেটা ব্যবহার করেছেন।