জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আপাত ভাবে এটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক যে, তবে কি রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ মৈত্রীর অবসান ঘটল? কেননা, রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিল ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেন ইস্যুতে প্রথম বার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিল ভারত। বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ভিডিয়ো টেলিকনফারেন্সে যোগ দেবেন কি না, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। জেলেনস্কির বৈঠকে যোগ দেওয়া নিয়ে বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপুঞ্জে উপস্থিত রাশিয়ার প্রতিনিধি। তখনই বিষয়টি নিয়ে সমাধানের জন্য ‘পদ্ধতিগত ভোটে’র (প্রসিডিউর্যাল ভোট) আয়োজন হয়। সেই ভোটেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয় ভারত। ইউক্রেন সংক্রান্ত বিষয়ে এই প্রথম রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিল ভারত। ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে আক্রমণ করে রাশিয়া। ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও থামেনি যুদ্ধ। রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের বিষয় নিয়ে গত ৬ মাসে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে। নিরাপত্তা পরিষদের এই সংক্রান্ত বিষয়ে ভোটাভুটিও হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই ভোটাভুটি থেকে এতদিন নিজেকে বিরত রেখেছিল ভারত।
ইউক্রেনের উপর হামলার পর থেকেই আমেরিকা নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি দুনিয়া রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপায়। যদিও সেই দলে নিজেকে ফেলেনি ভারত। আমেরিকার দলে ভিড়ে নিজের পুরনো বন্ধুকে দূরে ঠেলেননি ভারতের কূটনীতিকরা। বদলে রাশিয়া এবং ইউক্রেন– দুদেশের সঙ্গেই সম্পর্ক রেখে চলছিল ভারত। আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার থেকে জ্বালানি তেল কিনেছে ভারত। পাশাপাশি ইউক্রেনের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। কিন্তু এই প্রথম রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিল ভারত।
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দিতে ইউক্রেন প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জে থাকা রাশিয়ার প্রতিনিধি এর বিরোধিতা করেন। তখনই এ বিষয়ে ভোটাভুটির প্রস্তাব ওঠে। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ জন সদস্যের মধ্য়ে ১৩ জনেরই ভোট পড়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। যার মধ্যে রয়েছে ভারত। ১৫ সদস্যের মধ্যে চিন অবশ্য ভোট দানে বিরত থেকেছে।
যুদ্ধপ্রসঙ্গে জেলেনক্সি বলেন– যদি রাশিয়া এখনও না থামে, তাহলে রাশিয়ার খুনিরা অন্য দেশেও হামলা চালাবে। ইউক্রেনের সীমানায় বিশ্বের ভবিষ্যৎ লুকিয়ে। আমাদের স্বাধীনতা বাকিদের নিরাপত্তা।
প্রসঙ্গত, ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য নয়। দু’বছরের জন্য সদস্যপদ পেয়েছে ভারত। আগামী ডিসেম্বরে এর মেয়াদ শেষ হবে।
ইউক্রেন-ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়াটা আগামী দিনে কী ভাবে গ্রহণ করে রাশিয়া এবং তার সূত্রে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করে, সেটাই এখন দেখার।
(Source: zeenews.com)