জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে (Dubai International Cricket Stadium) ভারত-পাকিস্তান (IND vs PAK) মহাযুদ্ধে শেষ হাসি হাসল ভারত। রবিবাসারীয় হাইভোল্টেজ ম্যাচে রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) অ্যান্ড কোং বাবর আজমদের (Babar Azam) হারিয়ে দিল ৫ উইকেটে। প্রথমে বল হাতে ঝলসানোর পর, পরে ব্যাট হাতেও নিজের জাত চেনালেন হার্দিক পাণ্ডিয়া (Hardik Pandya)। বুঝিয়ে দিলেন কেন তিনি এই মুহূর্তে ভারতের তথা বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। হার্দিকময় ভারতের দুবাই জয়। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই ভেন্যুতেই পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে হেরে গিয়েছিল ভারত। আর ঠিক এই মাঠেই পাকিস্তানকে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিল ভারত।

রোহিত এদিন টস জিতে ব্যাট করতে পাঠান বাবরদের। ভারতীয় বোলারদের দাপটে মাত্র ১৪৭ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। ভুবনেশ্বর কুমার একাই তুলে নেন চার উইকেট, হার্দিক পাণ্ডিয়া নিলেন তিন উইকেট। দু’টি উইকেট নিলেন অর্শদীপ সিং। এক উইকেট এল আবেশ খানের ঝুলিতে। এদিন ভারতীয় দলের বোলাররা মূলত শর্ট বলেই পাকিস্তানকে পেড়ে ফেলে দুবাইয়ে।

ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান ৬ ওভারের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে ৪২ রানে। মহম্মদ রিজওয়ান ও বাবর ওপেন করতে নেমেছিলেন। ৯ বলে ১০ রান করে বাবর ফিরে যান ডাগআউটে। ভুবনেশ্বর কুমারের বলে অর্শদীপ সিংয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। বাবর ফেরার পর তিনে ব্যাট করতে এসেছিলেন ফখর জমন (Fakhar Zaman)। মাত্র ৬ বল খেলে ১০ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। আবেশ খানের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পিছনে দীনেশ কার্তিকের হাতে ধরা পড়ে যান। কিন্তু দুবাইয়ের গ্যালারির কান ফাটা চিৎকারের জন্য ব্যাটে-বলের আওয়াজ শুনতে পারেননি দীনেশ থেকে শুরু করে ভারতীয় দলের কোনও ক্রিকেটারই। তবে ফখর স্পোর্টসম্যান স্পিরিটের পরিচয় দিয়ে, কোনও রকম আবেদনের অপেক্ষা না করেই ক্রিজ ছেড়ে ডাগআউটের দিকে হাঁটা দেন। তাঁর এই আচরণ দেখে মোহিত হয়েছে বাইশ গজ।

ফখর আউট হওয়ার পর চারে আসেন ইফতিখার আহমেদ। তিনি রিজওয়ানের হাত শক্ত করার চেষ্টা করেন। ৩৮ বলে ৪৫ রান করেন তাঁরা জুটি বেঁধে। ২২ বলে ২৮ রান করে ইফতিখার ফিরে যান। হার্দিকের বলে কার্তিকের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। এরপর রিজওয়ানও ফিরে যান। ৪২ বলে ৪৩ রান করেন পাক উইকেটকিপার-ব্যাটার। রিজওয়ান ফিরে যাওয়ার পর পাকিস্তানের কোনও ব্যাটারের স্কোরই আর বলার মতো ছিল না।

পাকিস্তানের এই রান তাড়া করতে নেমেছিলেন রোহিত শর্মা ও কেএল রাহুল। কিন্তু রাহুল প্রথম বলেই ক্লিন বোল্ড হয়ে যান। নাসিম শাহর বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে যান তিনি। এরপর ক্রিজে আসেন বিরাট কোহলি। রোহিতের সঙ্গে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাওযার কাজটা কোহলি কিন্তু বেশ ভাল ছন্দেই শুরু করেছিলেন। রীতিমতো আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল কোহলিকে। কিন্তু রোহিত ধীর গতিতে শুরু করে যখন টেম্পোটা ধরেছিলেন, তখনই ভুলটা করে ফেলেন তিনি। একটি ছক্কা হাঁকানোর পর ফের তুলে খেলতে গিয়ে রোহিত মহম্মদ নাওয়াজের বলে ইফতিকার আহমেদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। এরপর কোহলিও ফের শিকার হন নাওয়াজের। ৩৪ বলে ৩৫ করে ফেরেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। এরপর ক্রিজে আসেন রবীন্দ্র জাদেজা। পাঁচে নামা সূর্যকুমার যাদব (১৮ বলে ১৮) প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হন। এরপর হার্দিক-জাদেজার যুগলবন্দি ভারতকে জয়ের রাস্তা এগিয়ে নিয়ে যান। ২৯ বলে ৫২ রান যোগ করেন স্কোরবোর্ডে। শেষ ওভারে ভারতের জয়ের জন্য় প্রয়োজন ছিল ৭ রানের। কিন্তু নাওয়াজের প্রথম বলেই ক্লিন বোল্ড হয়ে যান জাদেজা। ২৯ বলে ৩৫ রান করে ফিরে যান তিনি। তবে পাণ্ডিয়া যেন এমএস ধোনি হয়ে ওঠেন। ১৯.৪ নম্বর বলে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে ভারতকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। ২৫ রানে ৩ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ১৭ বলে ৩৩ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে হার্দিক হন ম্যাচের সেরা।

(Source: zeenews.com)