গুরুগ্রাম: গত সপ্তাহেই আবাসনের নিরাপত্তা রক্ষীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল নয়ডার এক মহিলার বিরুদ্ধে। রক্ষীর সঙ্গে এমন অমানবিক আচরণের ভিডিও ভাইরাল হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল গোটা নেটমাধ্যম। আর এই ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতেই ফের চড়-কাণ্ড! তবে এ-বারের ঘটনাস্থল নয়ডার কাছেই গুরুগ্রামে ৷
অভিযোগ, সেখানকার সেক্টর ৫০-এর ক্লোজ নর্থ অ্যাপার্টমেন্টসের একটি লিফটে সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ আটকে পড়েছিলেন বরুণ নাথ নামে ওই আবাসনেরই এক বাসিন্দা। বড়জোর ৩-৪ মিনিট! তার পরে অবশ্য লিফট অপারেটর এবং রক্ষীদের সাহায্যে লিফট থেকে বেরিয়ে আসেন ওই ব্যক্তি। আর সেখান থেকে বেরিয়ে আসতেই সাহায্যকারী নিরাপত্তা রক্ষী এবং লিফট অপারেটরের উপর চড়াও হন অভিযুক্ত।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে যে, বন্ধ লিফটের দরজা খোলার চেষ্টা করছেন লিফট অপারেটর এবং নিরাপত্তা রক্ষীরা। কিন্তু দরজা খুলতে না-খুলতেই সাহায্যকারী লিফট অপারেটরের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন অভিযুক্ত। এর পর আচমকাই সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীর উপরেই চড়াও হন ওই ব্যক্তি। এলোপাথাড়ি কিল-চড়-ঘুষি চালাতে থাকেন। রক্ষীর কথা কানে তো তোলেননি, উল্টে আরও মারধর করতে থাকেন। এর পর তাঁকে চড়াও হতে দেখা যায় লিফট অপারেটরের উপরেও। তাঁকেও চড়-থাপ্পড় মেরেছেন অভিযুক্ত বরুণ।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, প্রহৃত ওই নিরাপত্তা রক্ষীর নাম অশোক কুমার। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে বরুণকে। সংবাদমাধ্যমের কাছে ওই রক্ষী বলেন, “বরুণকে আমি বার বার বলেছিলাম যে, ভুলটা আমার নয়। ভুলটা আপনার। কিন্তু সেই কথায় পাত্তা না-দিয়েই মারধর করেছেন ওই ব্যক্তি।” এর পর অপমানিত এবং প্রহৃত রক্ষী আবাসনের অন্য নিরাপত্তা রক্ষীদের জড়ো করে গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করলে সেক্টর ৫০ থানার স্টেশন হাউজ অফিসার ইনস্পেক্টর রাজেশ কুমারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং অশোক কুমারের অভিযোগ নেয়।
#WATCH | Haryana: A resident of The Close North Apartments in Gurugram thrashed security guards after being briefly stuck in lift; FIR filed
I helped him get out of the lift within 3-4 minutes. As soon as he got out, he started beating me up: Guard Ashok Kumar
(CCTV visuals) pic.twitter.com/RDDwMQYdn8
— ANI (@ANI) August 29, 2022
আর নিমেষের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ঘটনার ভিডিও। অভিযুক্তের এ-হেন অমানবিক আচরণ চাক্ষুষ করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেটিজেনরা। এক জন তো লিখেছেন যে, “ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের একটা ধারণা তৈরি হয়েছে যে, দরিদ্রদের উপর তাঁরা উপনিবেশ তৈরি করছেন। আর তার জন্যই যে লিফটম্যান তাকে বাঁচাল, সেই লিফট অপারেটরকেই মারধর করছেন তাঁরা। এটা হল নাগরিক অধিকারের অপরাধমূলক স্তর। নয়ডার পরে এ-বার গুরুগ্রামে।”
আর এক নেটিজেন লিখেছেন, “এক জন লিফটে আটকে পড়েছেন। উদ্ধার করার জন্য দৌড়ে এগিয়ে আসছেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পরেও ওই ব্যক্তির থেকে জুটল চড়-থাপ্পড়। এটাই গুরুগ্রামের এক আবাসনের দৃশ্য। এই ভিডিও যত পারবেন, শেয়ার করবেন। তাতে ওই ব্যক্তি কুখ্যাত হবেন। আর দেখা যাবে যে, দেশের অভিজাত শ্রেণির মানুষের ভাবনায় দ্রুত পচন ধরছে।”