সৌরজগতের বাইরের মহাকাশ কেমন
সৌরজগতের বাইরের মহাকাশ কেমন, সেই ছবি আজ পর্যন্ত দেখাতে পারেনি কোনও মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। প্রথম সেই ছবি দেখাল নাসা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ অসাধ্য সাধন করল এককথায়। প্রথমবারের মতো জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের বাইরের কোনও গ্রহের ছবি তুলতে নাসার ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করেছিলেন। আর প্রথম পদক্ষেপেই সফল নাসা।
সৌরজগতের বাইরের পৃথিবীর ছবি
নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তোলা ওই ছবি প্রসঙ্গে ব্রিটেনের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা ও জ্যোতির্বিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক সাশা হিঙ্কলে বলেন, এটি শুধুমাত্র ওয়েবের জন্য নয়, সাধারণভাবে জ্যোতির্বিদ্যার জন্যও একটি রূপান্তরমূলক মুহূর্ত। চারটি ভিন্ন আলোর ফিল্টারের মাধ্যমে দেখানো ছবিটি ওয়েবের শক্তিশালী ইনফ্রারেড দৃষ্টি আমাদের সৌরজগতের বাইরের পৃথিবীকে সহজেই ধরতে পারে।
আগের থেকে অনেক বেশি তথ্য প্রদান
মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এই ছবি পেয়ে আপ্লুত। তারা মনে করছে, ভবিষ্যতের পর্যবেক্ষণের পথ নির্দেশ করে, যা এক্সোপ্ল্যানেট সম্পর্ক আগের থেকে অনেক বেশি তথ্য প্রদান করবে। এই চিত্রটি ইনফ্রারেড আলোর বিভিন্ন ব্যান্ডে এক্সোপ্ল্যানেট ‘এইচআইপি ৬৫৪২৬বি’-কে দেখায়। ওই এক্সোপ্ল্যানেটের যে নক্ষত্র রয়েছে তার আলোকে ব্লক করে অন্য জগতের ওই গ্রহটিকে দেখা যায়।
নক্ষত্রের থেকে গ্রহটিকে আলাদা করে ছবি
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা চিলিতে ইউরোপীয় সাউদার্ন অবজারভেটরির একটি বড় টেলিস্কোপে স্ফিয়ার যন্ত্র ব্যবহার করে ২০১৭ সালে গ্রহটিকে আবিষ্কার করেছিলেন। আলোর ছোটো ইনফ্রারেড তরঙ্গজদৈর্ঘ্য ব্যবহার করে এর ছবি তুলেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ নক্ষত্রের থেকে গ্রহটিকে আলাদা করে ছবি তুলতে সফল হল।
নক্ষত্রের থেকে ১০ হাজার গুণেরও বেশি ক্ষীণ গ্রহ
ব্রিটেনের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা ও জ্যোতির্বিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক সাশা হিঙ্কলে বলেন, ওয়েব করোনাগ্রাফগুলি হোস্ট স্টারের আলোকে দমন করতে বেশ ভালো কাজ করেছিল। আর সেই দৃশ্য বেশ চিত্তাকর্ষকও ছিল। এক্সোপ্ল্যানেটের সরাসরি ছবি তোলা চ্যালেঞ্জিং কারণ নক্ষত্রগুলি গ্রহের থেকে অনেক বেশি উজ্জ্বল। ওই গ্রহটি তার হোস্ট নক্ষত্রের থেকে ১০ হাজার গুণেরও বেশি ক্ষীণ।
মহাকাশে ধন খুঁজে বের করার মতো ঘটনা
ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি সান্তা ক্রুজের পোস্টডক্টরাল গবেষক অ্যারিন কার্টার বলেন, জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তোলা এই ছবিটি মহাকাশে ধন খুঁজে বের করার মতো। জুলাই মাসে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে এখন পর্যন্ত দূরবর্তী মহাবিশ্বের গভীরতম এবং তীক্ষ্মতম ইনফ্রারেড চিত্র তৈরি করেছে।