হালুয়া থেকে ডালিয়া! রোজ রোজ মহাভোজ পেয়ে আপ্লুত জেলের বন্দিরা

হালুয়া থেকে ডালিয়া! রোজ রোজ মহাভোজ পেয়ে আপ্লুত জেলের বন্দিরা

ফারুখাবাদ : ছিল জেলের গতধরা খাবার ৷ হয়ে গেল পাঁচতারা তকমা বিশিষ্ট ভোজনবিলাস ৷ রাতারাতি এই ‘সুস্বাদু পরিবর্তন’-এর সাক্ষী উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদের জেলা সংশোধনাগার ৷ এই জেলের ১১০০ জন বন্দির পাতে এ বার পাঁচতারা হোটেলের মানের খাবার পরিবেশন করা হল ৷ তাঁরা যে খাবার পাচ্ছেন তাকে ‘ফাইভ স্টার’ রেটিং দিয়েছে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা এফএসএসআই ৷

সংস্থার দেওয়া শংসাপত্রে লেখা রয়েছে ‘‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার নির্দেশিকা অনুযায়ী ফারুখাবাদের জেলা সংশোধনাগারকে ইট রাইট ক্যাম্পাসের পরিচয় দেওয়া হল ৷ ’’ পাঁচতারা রেটিংয়ের পাশাপাশি শংসাপত্রে লেখা রয়েছে ‘এক্সেলেন্ট’ বিশেষণও ৷ ২০২৪-এর ১৮ অগাস্ট পর্যন্ত এই শংসাপত্র বৈধ ৷ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে এই শংসাপত্র পেয়ে উচ্ছ্বসিত সংশোধনাগারের জেলর অখিলেশ কুমার ৷ সংবাদসংস্থাকে তিনি জানিয়েছেন ‘‘তৃতীয় পক্ষের অডিট রিপোর্টের ভিত্তিতে এই শংসাপত্র আমাদের দেওয়া হয়েছে ৷ শংসাপত্র দেওয়ার আগে সংশোধনাগারের কয়েক জন কর্মীকে অনলাইন ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে ৷ ’’

যে যে মাপকাঠির উপরে বিচার করে এই শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে আছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, খাবারের মান, চালের গুণমান, এফএসএসএআই স্বীকৃত দোকান থেকে গম ও দানাশস্য কেনা, কর্মীদের পোশাকের মতো বিষয়গুলি ৷ প্রসঙ্গত এই সংশোধনাগারে নিরামিষ খাবার দেওয়া হয় ৷ জেলরের কথায় ‘‘নিত্যনতুন খাবার পরিবেশন করা হয় বন্দিদের ৷ ডালের মধ্যে অড়হর, মসুর, চানা ও উরত ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রান্না করা হয় ৷ সপ্তাহে দুদিন প্রাতরাশে থাকে ছোলা, দু’দিন পাও-রুটি, তিন দিন ডালিয়া ও ছানা ৷ মাসের প্রথম, তৃতীয় ও শেষ রবিবার থাকে পুরী, সব্জি ও হালুয়া ৷ দ্বিতীয় রবিবারে রাঁধা হয় কড়হাই-চাওল ৷’’ জেলের ৩০ থেকে ৩৫ জন বন্দিই রান্নাবান্নার কাজ করেন ৷

যে কোনও নামী রেস্তরাঁর মতো অ্যাপ্রন পরে, পরিচ্ছন্নতা বিধি মেনেই রান্না করা হয় এই জেলে ৷ যাঁরা রান্নার কাজে নিযুক্ত সেই সব বন্দিদের নখ ও চুল পরিষ্কার করে কাটা কিনা, সেদিকেও নজর রাখা হয় ৷ পরিবর্তন এসেছে জেলের হেঁশেলেও ৷ রুটির জন্য আটা মাখা, রুটি বেলা-সবই হয় যন্ত্রে ৷ তরকারি কাটার জন্যও এসেছে যন্ত্র ৷ চিরাচরিত প্রথার বদলে আধুনিক ব্যবস্থায় রান্না করা খাবার প্রতিদিন চেখে পরীক্ষা করেন জেলর নিজেই ৷ বন্দিরাও খাবারের মানে ও স্বাদে সন্তুষ্ট ৷ স্বাধীনতা দিবসের জন্য ছিল স্পেশাল মেনু ৷ জেলকর্মী ও বন্দিরা একসঙ্গে খেতে বসেছিলেন ৷

জেলসুপার ভীমসাইন মুকুন্দ জানান তিনি গত বছর নভেম্বরে এই জেলে কাজে যোগ দিয়েছেন ৷ যে মানদণ্ডের জন্য এই শংসাপত্র মিলেছে, তা ভবিষ্যতেও রক্ষা করা হবে বলে তিনি জানান ৷

Published by:Arpita Roy Chowdhury

(Source: news18.com)