জোড়া খুনের ছক কষা হয়েছিল আগেই, বাগুইহাটির বন্ধুর চিৎকারে মেলে রক্ষা

জোড়া খুনের ছক কষা হয়েছিল আগেই, বাগুইহাটির বন্ধুর চিৎকারে মেলে রক্ষা

বাগুইহাটি জোড়া খুনের ঘটনা সামনে আসতেই সত্যেন্দ্র চৌধুরীর নাম উঠে এসেছে। ১৮ অগস্ট এই ঘটনা ঘটানোর ছক কষেছিল সত্যেন্দ্র চৌধুরী বলে অভিযোগ। এখন ক্ষোভে সত্যেন্দ্রর বাড়িতে চড়াও হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশের খাতায় সে অন্যতম মূল অভিযুক্ত। অতনুদের বন্ধু সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, সত্যেন্দ্র একবার তাকে ও তার এক বন্ধুকে রাজারহাটের দিকে নিয়ে গিয়েছিল।

ঠিক কী জানা গিয়েছে?‌ যে গাড়িতে করে রাজারহাট নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ওই গাড়িতে সত্যেন্দ্র ছাড়াও ছিল তার চার সঙ্গী। পরে দু’জন নেমে যায়। রাজারহাট থেকে গাড়ি করে সত্যেন্দ্র অন্ধকার রাস্তায় প্রবেশ করে, তখন ভয়ে চিৎকার করে ওঠে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মা অসীমা বন্দ্যোপাধ‌্যায় ক্রমাগত ফোন করতে থাকেন ছেলেকে। আর ছেলের খোঁজে রাতেই রাজারহাটে চলে যাবেন বলে জানান। সম্ভবত তাই সেই রাতে সত্যেন্দ্র চৌধুরী অপরাধ ঘটানোর চেষ্টা করেনি। অতনু এবং সায়নকে নিয়ে ফিরে আসে জগৎপুরের বাড়িতে।

ঠিক কী বলেছে বন্ধু সায়ন?‌ বন্ধু সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা গাড়িতে বসে চেঁচামেচি শুরু করে দিই। গাড়িতে আরও চারজন ছিল। যে কোনওভাবে হোক আমাদের ফিরিয়ে আনে সত্যেন্দ্র।’‌ গত ২২ অগস্ট অপহরণ এবং খুনের আগে সন্ধ্যেবেলায় কিছু আশঙ্কা করেই রাজারহাট থেকে বন্ধু সায়নকে ফোন করেছিল অতনু। ফোনে অতনু বলে, রাজারহাটে সে অনলাইন গেম খেলতে এসেছে। আর মোটরবাইকের প্রসঙ্গে পরে জানাবে বলেছিল। তবে আর জানানো হল না।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ জানা গিয়েছে, সত্যেন্দ্র টৌধুরীর শোরুম থেকে ৫০ হাজার টাকা আগাম দিয়ে এক লক্ষ টাকা দামের মোটরবাইক কেনা হয়েছিল। যা কিছুদিনের মধ্যে খারাপ হয়ে যায়। সেটি শোরুমে নিয়ে যাওয়ার পর অতনুকে ‘জামাইবাবু’ সত্যেন্দ্র বলেছিল, রাজারহাটের বিষ্ণুপুরের কয়েকটি জায়গায় কোম্পানির শোরুমে সে মোটরবাইকটি পাঠিয়ে দিচ্ছে। সারানো হয়ে গেলে অতনু তা চালিয়েই নিয়ে আসতে পারবে। সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় জানায়, গত ১৮ অগস্ট জিম করে বাড়ি ফেরার পরই সন্ধ‌্যায় ফোন করে অতনু বলে, তার সঙ্গে মোটরবাইক আনার জন‌্য রাজারহাটে যেতে। প্রথমে সায়ন রাজি না হলেও পরে যেতে রাজি হয়। সত্যেন্দ্র তাদের গাড়িতে তোলে। অতনুর বাবা বিশ্বনাথ দে বলেন, ‘‌ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে সত্যেন্দ্ররও হদিশ ছিল না। সায়নের ঘটনা জেনেই আমি সন্দেহ করে সত্যেন্দ্রকে ফোন করি। সত্যেন্দ্র নিজে থেকেই জানায় যে, আমার ছেলেকে অপহরণ করা হয়নি। আমার সন্দেহ আরও নিশ্চিত হয় যে, সত্যেন্দ্র এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’‌