বাংলাদেশঃ ভাসমান সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি

বাংলাদেশঃ ভাসমান সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি

এহসানুল হক (ঈশ্বরগঞ্জ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সবজি চাষে কৃষকের মুখে দেখা দিয়েছে হাসি।

সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের পুরাহাতা গ্রামের আন্দাইল বিলের পাড়ে ও বিলের ভাসমান বেডে চাষ হচ্ছে লাউ,মিষ্টি লাউ,কুমড়া ও ঢেরশসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি।

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুরাহাতা গ্রামের কৃষকদের ভাসমান বেডে সবজি চাষের ব্লক পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ আশরাফ উদ্দিন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফারাজানা আজাদ সুমি, প্রকল্প পরিচালক ডা.বিজয় কৃষ্ণ, উপসহকারী কৃষি অফিসার আলী আখছার খান প্রমুখ।

এসময় ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ আশরাফ উদ্দিন কৃষকের ভাসমান বেডে সবজি চাষে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন ও তাদের এ কাজের প্রশংসা করে কৃষকদের উৎসাহিত করেন।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনা রয়েছে প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনতে হবে। সেই আলোকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ঈশ্বরগঞ্জের কৃষকদের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।

মাতাব উদ্দিন (৫৫) ও লিটন মিয়া (৪০) জানান, সরকারি বিলের জায়গায় উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সার্বিক সযোগিতায় এ চাষবাদ করেছেন তারা। বিলে পানি না থাকায় কুচুরিপানা জমিয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলী আখসার খানের দিক নির্দেশনায় বেড তৈরি করেছেন। বৃষ্টিতে পানি জমে গিয়ে পানি বেড়ে গেলে বেড গুলোও পানির উপর ভাসতে থাকবে এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে বেড। ফলে ফসলের কোন ক্ষতি হবে না বলে জানায় তারা।

কৃষক মাতাব উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৫৫ দিন ধরে বিলে ১৬টি বেড তৈরী করে এতে আবাদ করেছি বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি। ইতোমধ্যে গাছে প্রচুর লাউ,মিষ্টি লাউ ও কুমড়া ধরেছে এবং প্রতিদিনই এসব সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করা করছেন তারা।

কৃষক মাতাব উদ্দিন আরও জানান, ১৬ টি বেড তৈরী ও উৎপাদন বাবদ তার ২৫ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি এক লক্ষাধিক টাকার শাক-সবজি বিক্রির আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

কৃষক লিটন মিয়া বলেন, এ জমিতে কেবলমাত্র নিজের শ্রমই বিনিয়োগ করেছি। আর যে পরিমাণ ব্যয় হয়েছে তা কৃষি অফিস থেকেই দেওয়া হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আন্দাইল বিলে এ প্রকল্পের অধীনে ভাসমান ধাপে ৫০ শতক জমিতে লাউ,মিষ্টি লাউ ও কুমড়াসহ বিভিন্ন জাতের শাক-সবজি চাষ করা হয়েছে। এসব স্থানে কোন প্রকার চাষাবাদ হতো না। সারা বছরই পতিত অবস্থায় থেকে যেতো। কৃষকদের ভাসমান বেডে সবজি চাষে আগ্রহী করে তোলার জন্য সরকারী জায়গায় এ চাষের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান জানান, ভাসমান প্রদ্ধতি প্রযুক্তি পরিবেশবান্ধব কৃষির জন্য আর্শীবাদ। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আন্দাইল বিলে কচুরিপানা দিয়ে ভাসমান বেডে লাউ,মিষ্টি কুমড়া,শসাসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে।পতিত জমিতে এভাবে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ পুষ্টির চাহিদা পূরন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরনে ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সান নিউজ/এইচএন