যৌন রোগ থেকেই জীবনে নেমে আসতে পারে বন্ধ্যাত্ব! কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক?

যৌন রোগ থেকেই জীবনে নেমে আসতে পারে বন্ধ্যাত্ব! কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক?

কলকাতা: বন্ধ্যাত্বের অন্যতম প্রধান কারণ হল যৌনতা বাহিত রোগ। সব ক্ষেত্রে না হলেও অনেক সময়ই বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে এই সমস্যা। যৌন রোগ (STD) বা যৌন সংক্রমণ (STI) শারীরিক মিলনের সময় ছড়িয়ে পড়তে পারে। অনেক সময়ই যৌন রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এ থেকে মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্ব পর্যন্ত আসতে পারে (Sexually transmitted disease)।

STD বন্ধ্যাত্ব হল পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ (PDI) যা যৌন রোগের পরবর্তী জটিল পর্যায়। ওয়েবএমডি (WebMD) জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘PDI হল একটি সংক্রমণ, যা থেকে প্রদাহ তৈরি হতে পারে। এই সংক্রমণ অভ্যন্তরীণ প্রজনন অঙ্গকে সংক্রমিত করে। এর থেকে গুরুতর অসুস্থতা তৈরি হতে পারে। আসতে পারে বন্ধ্যাত্ব। এমনকী মৃত্যুও হতে পারে।’

আরও পড়ুন-এয়ার কন্ডিশনার নয়, গরমে স্বস্তি দিতে কনেপক্ষ কাজে লাগাল ফসল তোলার থ্রেশার; হতভম্ব বরপক্ষ!

কোনও ব্যাকটেরিয়া যখন নারী দেহের প্রজনন অঙ্গকে সংক্রমিত করে তখনই PID ছড়ায়। সাধারণত জরায়ু বা জরায়ুর নিচের অংশ যোনিপথে এই অসুখ ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকেই অভ্যন্তরীণ জনন অঙ্গকে সংক্রমিত করে ফেলতে পারে। এ থেকেই শুরু হয় PID-র মতো অসুখ।

বিড়লা ফার্টিলিট অ্যান্ড আইভিএফ (Birla Fertility & IVF)-এর চিকিৎসক ডা. সৌরেন ভট্টাচার্য (Dr. Souren Bhattacharya) বলেন, “পেলভিক ইনফ্লেমেটরি ডিজিজ (Pelvic Inflammatory Disease) সারিয়ে তোলা সম্ভব। একই ভাবে STD-ও নিরাময় যোগ্য। তবে কখনও কখনও এ সব অসুখের ফলে এমন কিছু ক্ষতি হয়ে যায় যার ফলে আর নিরাময় সম্ভব হয় না। সে জন্যই একেবারে শুরুতেই চিকিৎসা করানো দরকার।”

বিভিন্ন ভাবে PID সংক্রমণ ঘটতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যৌন সংসর্গের সময় সংক্রমণের ফলে ক্ল্যামাইডিয়া (Chlamydia) বা গনোরিয়ার (Gonorrhea) মতো রোগ হতে পারে। চিকিৎসকের মতে “ক্ল্যামাইডিয়া এবং গনোরিয়া এমন রোগ যা PID এবং বন্ধ্যাত্বের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অথচ এই রোগ দু’টি প্রতিরোধ করা সম্ভব।”

আরও পড়ুন-যৌন ক্ষমতা বাড়বে এক নিমেষে, পুরুষদের পাতে রোজ কেন থাকা উচিত কুমড়োর বীজ?

গনোরিয়া একটি যৌন রোগ যা পুরুষ এবং মহিলা উভয়কেই প্রভাবিত করে। মহিলাদের ক্ষেত্রে, এটি সম্পূর্ণ মহিলা প্রজনন অঙ্গকে সংক্রামিত করতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি মূত্রনালীকে প্রভাবিত করে। গনোরিয়ায় আক্রান্ত মহিলাদের সাধারণত সবুজ-হলুদ স্রাব, পেলভিক অংশে ব্যথা এবং প্রস্রাব করার সময় ব্যথা অনুভূত হতে পারে।

ক্ল্যামাইডিয়া একটি সাধারণ ব্যাকটেরিয়া রোগ। এটিও অসুরক্ষিত যৌনতার মাধ্যমে ছড়াতে পারে। এটি সমগ্র প্রজনন অঙ্গ, মলদ্বার এমনকী চোখকেও প্রভাবিত করতে পারে। সময় মতো চিকিৎসা না হলে মহিলাদের ক্ষেত্রে, ক্ল্যামাইডিয়া এবং গনোরিয়া উভয়ই ফ্যালোপিয়ান টিউবে সম্পূর্ণ অবরোধ তৈরি হতে পারে। বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখলে STD ধীরে ধীরে PID-র দিকে এগিয়ে যেতে পারে। এর ফলে ফ্যালোপিয়ান টিউব, ডিম্বাশয়, জরায়ু এবং অন্যান্য প্রজনন অঙ্গগুলিতে ঘা হয়ে যেতে পারে।

PID-এর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যোনি বা জরায়ু থেকে প্রজনন অঙ্গে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণের কারণে ঘটে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী মহিলা যাঁরা নিয়মিত যৌন সংসর্গে থাকেন তাঁরা আক্রান্ত হয়ে থাকেন PID-তে।

আরও পড়ুন-পুরুষদের জন্য দারুণ উপকারী, মাত্র দু’চামচ খেলেই কেল্লাফতে !

STI আক্রান্ত মহিলাদের ক্ষেত্রে যোনিপথে ব্যথা, প্রদাহ, অস্বাভাবিক স্রাব, প্রস্রাবে জ্বালা, পেলভিক ব্যথা প্রভৃতি হতে পারে। ডা. সৌরেন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে সংক্রমণ সারিয়ে তোলা সম্ভব। না হলে পরবর্তীতে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া রোগ প্রতিরোধ করাও জরুরি।’’

কোনও রকম অস্বাভাবিক স্রাব, গন্ধযুক্ত স্রাব, প্রদাহ, অনিয়মিত ঋতুস্রাব হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

Published by:Siddhartha Sarkar

(Source: news18.com)