এ কোন অশনি সংকেত? ১৯৭০ এরপর বিশ্বের বন্যপ্রাণীর সংখ্যার কমতি ঘিরে উদ্বেগ

এ কোন অশনি সংকেত? ১৯৭০ এরপর বিশ্বের বন্যপ্রাণীর সংখ্যার কমতি ঘিরে উদ্বেগ

১৯৭০ সালের পর প্রায় দুই তৃতীয়াংশ কমে গিয়েছে বিশ্বের বন্যজীবজগত। এমনই দাবি করছে ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ড রিপোর্ট। লন্ডনের জুলজিক্যাল কনজারভেশন সোসাইটির তরফে বলা হচ্ছে, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। সেখানের ডিরেক্টর অ্যান্ড্রিউ টেরি বলছেন, ‘এটাই বলে দিচ্ছে প্রকৃতির রূপের কথা। প্রাকৃতিক জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

দেখা গিয়েছে, ১৯৭০ সালের পর ৬৯ শতাংশ কমে গিয়েছে বিশ্বের বন্যপ্রাণী ও গাছপালার সংখ্যা। জেড এসএল থেকে পাওয়া ২০১৮ সালের তথ্যের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, ৫০০০ প্রজাতিত বন্যপ্রাণীকে নিয়ে তৈরি হওয়া এক প্রকাণ্ড বন্যপ্রাণীর নিবাসস্থল ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। সেখানে অন্তত ৩২ হাজার বন্যপ্রাণীর বাস। আর তা ১৯৭০ সালের পর সংকুচিত হয়ে ৬৯ শতাংশ কমতির দিকে গিয়েছে। এই তথ্য দিচ্ছে ২০১৮ সালের ডেটা। মানুষের জঙ্গলের ওপর দাপট কায়েম, নগরায়ন, বন জঙ্গল কেটে ফেলা এই সমস্ত ফ্যাক্টর এই পরিস্থিতির দিকে ক্রমেই নিয়ে গিয়েছে মানুষকে। এছাড়াও দূষণের ফলে বদলে যেতে থাকা আবহাওয়া ও পরিবেশের ভারসাম্য এমনভাবে নষ্ট হওয়ার মতো ঘটনার জেরে এমনটা ঘটছে বলে মনে করা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ানে বন্য জীবজগত সবচেয়ে বেশি আঘাতপ্রাপ্ত। সেখানে গত ৫ দশকে ৯৪ শতাংশ কমেছে বন্যজীবজগত। দেখা গিয়েছে ১৯৯৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ৬৫ শতাংশ কমে গিয়েছে ব্রাজিলের অ্যামাজনে পিঙ্ক রিভার ডলফিনের সংখ্যা।

রিপোর্ট বলছে, প্রতি বছরে প্রায় ২.৫ শতাংশ কমতে শুরু করছে বন্যপ্রাণীজের জগত। যা অত্যন্ত সতর্কতামূলক দিক। এখন থেকেই এই বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন না করলে ভবিষ্যৎ কোনদিকে যেতে থাকবে, তা নিয়ে রয়েছে জল্পনা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে জীবজগতের প্রয়োজন মানুষের সমর্থনের। মানুষ যদি এগিয়ে আসে তাহলে কঙ্গোতে গোরিলার জনসংখ্যা বাড়বে। যা ১৯৯৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশ কমেছে। কারণ তাদের শিকার করার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছিল মানুষের মধ্যে। ফলে মানুষের সমর্থনেই এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পাওয়ার রাস্তা লুকিয়ে রয়েছে।