Plastic Ban: প্লাস্টিক ব্যান নিয়ে রাজ্যগুলিকে আরও কড়া হওয়ার নির্দেশ কেন্দ্রের

Plastic Ban: প্লাস্টিক ব্যান নিয়ে রাজ্যগুলিকে আরও কড়া হওয়ার নির্দেশ কেন্দ্রের

একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক(SUP) নিয়ে আরও কড়া কেন্দ্র। সমস্ত রাজ্যের মুখ্য সচিবদের সিঙ্গল-ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ নিয়ে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড (CPCB) তাঁদের আরও একবার এই বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন। ১ জুলাই থেকে এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের কথা থাকলেও দেশের অনেক প্রান্তে তা হয়নি। কিছুটা সাধারণ মানুষের উদাসীনতা, কিছুটা সরকারি প্রচেষ্টার অভাবে।

সিপিসিবি-র চেয়ারম্যান তন্ময় কুমার বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, অর্থনীতির নিম্ন প্রান্তের বিভাগে একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্য, বিশেষত পাতলা ক্যারি-ব্যাগের ব্যবহার অব্যাহত রয়েছে।

তন্ময় কুমার হকার, সবজি বাজার এবং স্থানীয় বাজারের বিষয়ে উল্লেখ করেছেন। তিনি সীমান্তে চেকিং এবং অক্টোবর-ডিসেম্বর মাসে সংশ্লিষ্ট শিল্পের পরিদর্শনের মতো সুপারিশ করেছেন। সর্বোপরি নিষেধাজ্ঞার কঠোর প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আরও পড়ুন:  Single Use Plastic Ban: ১ জুলাই থেকে দেশে সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক নিষিদ্ধ হতে চলেছে, জানিয়ে দিল কেন্দ্র

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ভূপেন্দর যাদব উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠক করেন। নিষেধাজ্ঞার কঠোর প্রয়োগের সুপারিশ করেন তিনি। তারপরেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত কর্মপরিকল্পনার মধ্যে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নজরদারির কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ফুল বিক্রি, সবজির বাজার, মাছের বাজার, স্থানীয় বাজার এবং দিল্লি এনসিআর-এর গাজীপুর, আজাদপুর এবং ওখলার মতো পাইকারি বাজার।

শুধু তাই নয়, সমস্যার গোড়ায় নির্মূল করাতেও জোর দেওয়া হচ্ছে। পাতলা ক্যারি-ব্যাগ উত্পাদকদের চিহ্নিত করা হয়েছে। SUP আইটেমের ব্যবহার সীমাবদ্ধ করার জন্য সীমান্তে আন্তঃরাজ্য পরিদর্শনেরও পরিকল্পনা করা হয়েছে।

তন্ময় কুমার ব্যাকট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে এসইপি আইটেম সরবরাহকারী এবং প্রস্তুতকারকদের চিহ্নিত করার জন্য পরিদর্শক দলগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন। মাসে ৪ দিন পরিদর্শন অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

SUP আইটেমের সঙ্গে সম্পর্কিত প্লাস্টিক বর্জ্য ম্যানেজমেন্টের নিয়ম কার্যকর করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে রাজ্য বোর্ডের কাছে। রাজ্যগুলিকে পরিদর্শন টিমগুলিকে পুলিশি সুরক্ষা সহ সমস্ত প্রশাসনিক সহায়তা প্রদান করতে বলা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী, প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস এবং পুনর্ব্যবহারের উপর সুবিন্যস্ত পরিকল্পনার অভাবে প্লাস্টিক দূষণ একটি গুরুতর বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবাসন মন্ত্রকের একটি রিপোর্ট অনুসারে, বিশ্বব্যাপী মাথাপিছু প্লাস্টিক ব্যবহারের গড় মাত্র হল ২৮ কেজি। ভারতে মাথাপিছু প্লাস্টিক ব্যবহার ১১ কেজি। ফলে পরিস্থিতি যে কতটা সাংঘাতিক তা সহজেই অনুমেয়।

CPCB রিপোর্টে বলা হয়েছে ভারতে বছরে ৩৫ লক্ষ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্লাস্টিক বর্জ্যে থাকা অ্যাডিটিভ, রঙ, স্টেবিলাইজার এবং ফিলারগুলির লিচিংয়ের কারণে মাটি এবং ভূগর্ভস্থ জলের গুণমানকে খারাপ করতে পারে।

কলকাতা-সহ দেশের শীর্ষ শহরগুলি প্লাস্টিক দূষণের শিকার। নিকাশী নালা, খালে জমে থাকা প্লাস্টিকের কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যাচ্ছে। শুধুমাত্র নালা-খাল থেকে প্লাস্টিক তুলতেই কোটি কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে পৌরসভাগুলিকে।

প্রতীকী ছবি: রয়টার্স (REUTERS)

এদিকে আমজনতার মধ্যেও প্লাস্টিক বর্জনের বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। বাড়ি থেকে ব্যাগ নিয়ে যেতে ভুলে গেলে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগেই জিনিস কিনে বাড়ি ফিরছেন তাঁরা। কোনও না কোনও সময়ে সেই ব্যাগ গিয়ে পড়ছে নালা, নিকাশী, বর্জ্য ফেলার স্থানে। আর তার থেকেই বিপদ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মাটিতে পড়ে থাকা একটি প্লাস্টিকের বোতল পচে মাটিতে মিশতে প্রায় ৪৫০ বছর সময় লাগে। প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ক্ষেত্রে তা ১০০-১৫০ বছর হতে পারে। তাছাড়া এই প্রক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণে দূষক মিশে যায় মাটিতে। তাছাড়া দৃশ্য দূষণের বিষয়টি তো আছেই।

শহরতলির এক পোলট্রি মাংস বিক্রেতা জানালেন, চিকেন প্যাকেটে করে দেওয়া ছাড়া আমাদের উপায় নেই। শালপাতায় মুড়ে চিকেন বিক্রি করা খরচ ও সময়সাপেক্ষ। তাছাড়া সেভাবে দিলেও ব্যাগ নোংরা হওয়ার ভয়ে প্লাস্টিক প্যাকেট চান ক্রেতারা।

এছাড়াও চিপস, কোল্ড-ড্রিংকস, মিনারেল ওয়াটার, খাবারের প্যাকেট থেকে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হচ্ছে।