গুজরাতে ২২ হাজার কোটির বিমান কারখানা বানাবে এয়ারবাস ও টাটা

গুজরাতে ২২ হাজার কোটির বিমান কারখানা বানাবে এয়ারবাস ও টাটা

ভদোদরা: ভারতীয় অর্থনীতিকে আরও মজবুত করতে কেন্দ্রীয় সরকারের তৎপরতার আরও এক নমুনা দেখা গেল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাতের ভদোদরায় টাটা গ্রুপের ইন্ডিয়া সি২৯৫ প্রোগ্রামের জন্য চূড়ান্ত সমাবেশ লাইনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন। এই ইউনিট ভারতেই এয়ারবাস সি২৯৫ বিমান তৈরি করার জন্য সমস্ত যন্ত্রাংশের সমাবেশ করবে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, গুজরাতের রাজ্যপাল, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, প্রতিরক্ষা সচিব ড. অজয় ​​কুমার, অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের সচিব রাজীব বনসাল এবং টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন. চন্দ্রশেখরন এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে, ভারত ভারতীয় বিমানবাহিনী আগেকার বিমান প্রতিস্থাপন করার জন্য ৫৬টি এয়ারবাস সি২৯৫ বিমান অধিগ্রহণের জন্য লক্ষ্য ঠিক করেছিল। বলাই বাহুল্য এটি বেসরকারি সেক্টরে প্রথম ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ মহাকাশ কর্মসূচি, যাতে একটি সম্পূর্ণ শিল্প বাস্তুতন্ত্র জড়িত। উৎপাদন থেকে শুরু করে যন্ত্রাংশের সমাবেশ, বিমানের পরীক্ষা এবং যোগ্যতা নির্ণয়, বিমানের শুরু থেকে বিক্রি সম্পূর্ণ জীবনচক্রের সাক্ষী থাকবে গুজরাতের ভদোদরা।

কেন্দ্রীয় সরকারের দূরদর্শী এই প্রোগ্রাম ভারতকে একটি শক্তিশালী বেসরকারি বিমান তৈরি শিল্প বিকাশের দিকে পরিচালিত করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে এর মাধ্যমে ৫ হাজারেরও বেশি দক্ষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে, যেখানে ১২৫টিরও বেশি সরবরাহকারী গড়ে উঠবে সারা ভারত জুড়ে। যা কেন্দ্রীয় সরকারের ৫ ট্রিলিয়ন অর্থনীতিতে পৌঁছনোর স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে সাহায্য করবে। ।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে, টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন বলেন, “ভদোদরায় ফাইনাল অ্যাসেম্বলি লাইন সেট আপ করার সঙ্গে সঙ্গে, টাটা গ্রুপ এখন এখানেই এক প্রান্তে অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে অন্য প্রান্ত থেকে তাকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য একটি এয়ারবাস সি২৯৫ বিমানে পরিণত করতে সক্ষম হবে। এটি শুধুমাত্র টাটা গোষ্ঠীর জন্য নয়, দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কারণ এটি সত্যিকারের আত্মনির্ভর হওয়ার  প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গির সমার্থক।”

“ভারতে বিমান নির্মাণ শিল্পের জন্য এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে অবদান রাখতে পেরে আমরা সম্মানিত। আমাদের এয়ারবাস টিম সি২৯৫ প্রোগ্রামের সঙ্গে ভারতীয় বিমানবাহিনীর আধুনিকীকরণে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা দেশের বেসরকারি প্রতিরক্ষা উৎপাদন খাতের উন্নয়নে যথেষ্ট অবদান রাখবে,” বলেছেন এয়ারবাসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গুইলাউমে ফাউরি। “বিশ্বস্ত টাটা গ্রুপের সঙ্গে এই অংশীদারিত্বে আত্মনির্ভর ভারত গড়তে আমরাও দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত”, জানিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সি২৯৫ সংক্ষিপ্ত বা অপ্রস্তুত এয়ারস্ট্রিপ থেকেও উড়তে সক্ষম। সবথেকে বড় কথা, ৭১ জন সৈন্য বা ৫০ জন প্যারাট্রুপারের পরিবহণের জন্য এই বিমান একদম ঠিকঠাক। এর ফলে বর্তমানের ভারী বিমান যেখানে চলতে অক্ষম, তেমন জায়গায়ও দিব্যি ব্যবহার করা যায় সি২৯৫। প্যারাট্রুপ থেকে যুদ্ধের সরঞ্জাম এমনকী, হতাহত বহন বা চিকিৎসার জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে বিমানটিকে। যুদ্ধ মিশনের পাশাপাশি দুর্যোগ মোকাবিলা এবং সামুদ্রিক টহলেও দায়িত্ব পালন করবে গুজরাতের ভদোদরায় টাটা গ্রুপের বানানো এয়ারবাস সি২৯৫।

(Feed Source: news18.com)