টেক কোম্পানিতে ৪৫ হাজার ছাঁটাই, IT কোম্পানিতে নিয়োগ বন্ধ!

টেক কোম্পানিতে ৪৫ হাজার ছাঁটাই, IT কোম্পানিতে নিয়োগ বন্ধ!

#কলকাতা: সারা বিশ্বেই চাকরি সংকট। ট্যুইটার-সহ আমেরিকার বৃহত্তম প্রযুক্তি সংস্থাগুলো গণহারে ছাঁটাই শুরু করেছে। মাইক্রোসফট, গুগল, ইনটেলের মতো টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলোরও শোচনীয় হাল। উপার্জন কমেছে। ফলে তারাও ছেঁটে ফেলেছে কয়েক হাজার কর্মী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং সাপ্লাই চেইনের সমস্যার কারণে বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা ক্রমশ বাড়ছে। ফলে চাকরির বাজারের আকাশে ঘনাচ্ছে কালো মেঘ। ইতিমধ্যে ভারতের আইটি কোম্পানিগুলিও নিয়োগ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে।

ক্রাঞ্চবেস নিউজ ট্যালির মতে, অক্টোবর পর্যন্ত পরিসংখ্যানে চোখ বোলালে দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সালে এখনও পর্যন্ত আমেরিকার বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলি ৪৫ হাজারেরও বেশি ছাঁটাই করেছে। কিছু কোম্পানি কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করেছে। আর বাকিরা নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে। করোনাকালে অনলাইন ব্যবসায় বিপুল মুনাফা করেছে, এমন ছোট বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সব কোম্পানি অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করে ফেলে। এখন আয়ের দিকে তাকিয়ে সঠিক স্তরে নিয়ে আসা হচ্ছে।

কোন কোম্পানিতে কত ছাঁটাই:

সি-গেট
হার্ড ড্রাইভ নির্মাণ সংস্থা সি-গেট টেকনোলজি গত মাসে জানিয়েছিল, তারা 8 শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অর্থাৎ প্রায় ৩,০০০ কর্মীকে ছেঁটে ফেলবে তারা।

ইনটেল
আগামী বছরের মধ্যে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে চায় ইনটেল। তারই প্রস্তুতি হিসেবে প্রচুর সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করা হবে। সূত্রের খবর, প্রায় ২০ শতাংশ কর্মী চাকরি হারাতে পারেন।

মাইক্রোসফট
টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফটের আয় কমেছে। কিন্তু ব্যয় কমেনি। তাই কর্মী ছাঁটাই। চলতি বছরের জুলাই মাসে কোম্পানির প্রায় ১ শতাংশ কর্মীকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেয় মাইক্রোসফট।

ট্যুইটার
এলন মাস্ক কোম্পানি অধিগ্রহণের পরই ৫০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করেছেন। মাস্ক বলেছিলেন, প্রতিদিন ৪ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে। এটা সামলানোর জন্য ছাঁটাই প্রয়োজন।

কয়েনবেস
ইউএস ভিত্তিক কোম্পানিটি ১৯ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করেছে। চাকরি হারিয়েছেন ১,১০০ জন কর্মচারী। কোম্পানির বক্তব্য, মন্দার মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে, তাই খরচ কমানো জরুরী।

নেটফ্লিক্স
সাম্প্রতিক কালে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে জনপ্রিয় এই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। ইতিমধ্যেই তারা ৫০০ কর্মীকে বরখাস্ত করেছে।

স্ন্যাপ
কোম্পানির স্টক কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। তা সামাল দিতে প্রাউয় ২০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি নিছে তারা। এই পদক্ষেপে প্রায় ১ হাজার কর্মীর চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।

শপিফাই
এই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ১০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করেছে। ফলে ১ হাজারেরও বেশি কর্মচারি চাকরি হারাতে পারেন।

লিফট
ক্যালিফোর্নিয়া-ভিত্তিক এই কোম্পানিটি গত মাসে প্রায় ১৩ শতাংশ কর্মী কমিয়েছে। ৭০০ কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কোম্পানিটি সেপ্টেম্বর থেকে নিয়োগও বন্ধ করে দিয়েছে।

স্ট্রাইপ
এই ফিনটেক কোম্পানিতে প্রায় প্রায় ৮০০০ কর্মী কাজ করেন। এঁরা ১৪ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ জন্য প্রায় ১২০ জন কর্মী চাকরি হারাতে পারেন।

ওপেনডোর
রিয়েল এস্টেট স্টার্টআপ কোম্পানি ওপেনডোর বলেছে তারা ১৮ শতাংশ কর্মচারী ছাঁটাই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফলে ৫৫০ জনকে বরখাস্ত করা হবে।

ভারতীয় কোম্পানি নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে:
শুধু আমেরিকান কোম্পানিগুলো ছাঁটাই করছে তা নয়, ভারতীয় কোম্পানিগুলো নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে। দেশের ১০টি বড় আইটি কোম্পানির পরিসংখ্যান দেখলে চমকে যেতে হয়। এরা মোট খরচের ৫৫ থেকে ৬৫ শতাংশ কর্মচারিদের পিছনে ব্যয় করে। এই কারণেই নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। উইপ্রোর কর্মশক্তি ৬.৫ শতাংশ কমেছে। এল অ্যান্ড টি-র হেডকাউন্ট ৫ শতাংশ কমেছে এবং টেক মাহিন্দ্রা ১.৪ শতাংশ হ্রাস করেছে৷

(Feed Source: news18.com)