বজ্রপাতে মৃত্যু! চিকিৎসকের ঘোষণার পরও বেঁচে উঠলেন যুবক!

বজ্রপাতে মৃত্যু! চিকিৎসকের ঘোষণার পরও বেঁচে উঠলেন যুবক!

ফ্লোরিডা: কথায় বলে রাখে হরি তো মারে কে! নিতান্ত লৌকিক এ প্রবাদের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক সামান্যই। আসল কথা হল জীবন-মৃত্যু বড়ই অনিত্য। বছর দুয়েক আগে তেমনই এক ঘটনার সাক্ষী থেকেছিল সুদূর আমেরিকা। সে দেশের টেক্সাস প্রদেশ থেকে এক চমকপ্রদ ঘটনার কথা জানা গিয়েছে সম্প্রতি। মৃত্যুর পরও ফের বেঁচে উঠেছেন এক ব্যক্তি।

জানা গিয়েছে, স্থানীয় এলাকায় বজ্রপাতের ফলে এক ব্যক্তি গুরুতর জখম হয়েছিলেন। ঘটনার আঘাতে ওই ব্যক্তির শ্বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিবারের লোকজন ধরেই নিয়েছিলেন তিনি আর বেঁচে নেই। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকেরাও তাঁকে মৃত ঘোষণা করে দেন সব রকম পরীক্ষা নিরীক্ষার পর। কিন্তু সেই ব্যক্তি আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন, দিব্যি হেঁটে চলে বেড়াচ্ছেন। ঘটনাটি ২০২০ সালের। সে সময় ওই ব্যক্তি তাঁর পরিবারের সঙ্গে ফ্লোরিডার সমুদ্র সৈকতে ছিলেন। সেখানেই দুর্ঘটনা ঘটে।

ওই যুবকের নাম জ্যাকব ব্রুয়ার। তাঁর মা বারবারা ব্রুয়ার বলেন, ‘হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। আমরা তড়িঘড়ি সমস্ত জিনিসপত্র গুছিয়ে ফেরার পথ ধরি। কিন্তু তখনই বজ্রপাত হয়। প্রথমে আমি বুঝতেই পারিনি কী ঘটেছে। মনে হচ্ছিল যেন বিস্ফোরণ হল।’

বজ্রাহত হয়ে পড়ে যান জ্যাকব। তাঁর মুখ দিয়ে ফেনা বেরোতে শুরু করে। বারবারা বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তড়িঘড়ি সিপিআর দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু আমি নিজে সিপিআর দিতে পারিনি। ততক্ষণে ঝড়ের গতি ভয়ানক হয়ে উঠেছে। প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে সৈকত ত্যাগ করা।’

জানা গিয়েছে, ঘটনার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স এসে জ্যাকবকে নিয়ে যায়। ততক্ষণে তাঁর শ্বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। টাম্পা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকদের প্রায় ৪৫ মিনিটের চেষ্টায় তাঁর শ্বাস প্রশ্বাস ফের চলাচল করতে শুরু করে। কিন্তু পরিস্থিতি সঙ্কটজনক হওয়ায় জ্যাকবকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। দুই সপ্তাহের আইসিইউ-তে থাকার পর খানিকটা স্থিতিশীল হয় তাঁর পরিস্থিতি। তখন তাঁকে অন্যত্র স্থানান্তর করার জন্য যথেষ্ট স্থিতিশীল করেছিলেন।

কিন্তু তত দিনে হাঁটু আর কনুই থেকে তাঁর হাত ও পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে। কারণ বজ্রপাতের ফলে সেগুলিতে পচন ধরেছিল। জ্যাকবের অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে। বজ্রপাতের জ্যাকবের মেরুদণ্ডেও আঘাত লেগেছিল, তার ফলেই তাঁর স্ট্রোক হয়েছিল। পরবর্তী কালে তাঁকে শিকাগোর একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

বারবারা দাবি করেন, ‘ঝড়ের সময় মনে হয়েছিল আমি আমার ছেলেকে হারাতে বসেছি। তারপর জানতে পারি, প্রাণে বাঁচলেও ও আর কোনও দিন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে না। শুধু তাই নয় মূত্রাশয় বা অন্ত্রের নিয়ন্ত্রণও আর ক্ষমতায় নেই।’

জ্যাকব সম্পূর্ণ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন ভেবে ভেঙে পড়ে পরিবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চিকিৎসার সুফলে কৃত্রিম অঙ্গের সাহায্যে নিজের পায়ে উঠে দাঁড়িয়েছেন জ্যাকব।

(Feed Source: news18.com)