জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ব্যাপারটা আপাত বিসদৃশ। দেশ হেরেছে, আর দেশবাসী তা নিয়ে আনন্দ করছে। কিন্তু এর পিছনে রাজনৈতিক কারণ আছে। সাম্প্রতিক অতীতে ইরান জুড়ে যা চলছে তার জেরে সেখানকার সংবেদনশীল মানুষ নানা ইস্যুতে দেশের সরকারের বিরোধিতায় নেমেছে। কাতার বিশ্বকাপে ইরানের যে দলটি খেলছে সেটি দেশের প্রতিনিধি করছে। ফলে, এক হিসেবে তা ইরান সরকারেরই মুখ। অর্থা।, কাতারের কোনও স্টেডিয়ামে ইরানের ফুটবল টিম জিতলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই তাকে ইরান দেশটির জয় হিসেবেই ধরা হবে। আর সেখানেই আপত্তি এক বড় অংশের মানুষের। তেমনই মনোভাবাপন্ন একট দল ইরানের রাস্তায় ওয়ার্ল্ড কাপে তাদের দেশের পরাজয়কে উদযাপন করছিল। তখনই ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীরা ফুটবল বিশ্বকাপ থেকে দেশের বিদায় প্রকাশ্যে উদ্যাপন করছিলেন। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বানদার আনজালিতে নিজের গাড়ির হর্ন বাজিয়ে উদ্যাপন করলে মেহরান সামাকের মাথায় গুলি করা হয়!
একাধিক ভিডিয়োতে দেখা যায়, লোকজন রাস্তায় জড়ো হয়ে নেচে-গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। অনেক ইরানি নাগরিক কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের ফুটবল দলকে সমর্থন করতে রাজি হননি। তাঁরা মনে করছেন, তঁদের দেশের ফুটবল দল ইসলামিক প্রজাতন্ত্রেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। গ্রুপ-পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় ইরান। এই পরাজয়ের জন্য খেলোয়াড়দের উপর ভেতরে-বাইরে থেকে বিরোধী শক্তির অনৈতিক চাপকে দায়ী করছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
এর আগেই কাতারে ইরান দলটিকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গ্রুপ-পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচ শুরুর আগে জাতীয় সংগীত গাননি ইরানের খেলোয়াড়েরা। বলা হয়েছিল, ইরানের বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাঁরা জাতীয় সংগীত গাননি। ওই ম্যাচে দলটি ইংল্যান্ডের কাছে ৬-২ গোলে হেরে যায়। তবে ওয়েলসের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে জাতীয় সংগীত গেয়েছিলেন ইরানের খেলোয়াড়েরা। ম্যাচটি তাঁরা ২-০ গোলে জেতেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের ম্যাচটি রাজনৈতিক শোডাউনের রূপ নেয়। ওই ম্যাচের আগেও জাতীয় সংগীত গেয়েছিলেন খেলোয়াড়েরা। ফুটবল ম্যাচে খেলোয়াড়দের জাতীয় সংগীত গাওয়াকে একরকম প্রতারণা হিসেবে দেখেন কিছু বিক্ষোভকারী। কারণ, এই ইস্যুতে দলের উপর ইরান সরকারের চাপ বাড়ছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
ইরানে ১০ সপ্তাহ আগে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। ঠিকভাবে হিজাব না পরায় তেহরানে মাশা আমিনি নামের ২২ বছর বয়সী এক তরুণীকে হেফাজতে নেয় পুলিস। হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু হলে ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
(Feed Source: zeenews.com)