কলকাতায় কাঁচা রাস্তা! আশ্চর্য হলেও সত্যি, পুরসভার অন্দরেই গাফিলতির চরম উদাহরণ

কলকাতায় কাঁচা রাস্তা! আশ্চর্য হলেও সত্যি, পুরসভার অন্দরেই গাফিলতির চরম উদাহরণ

বিশ্বজিৎ সাহা, কলকাতা: কলকাতায় কাঁচা রাস্তা। আশ্চর্য হলেও সত্যি। মাপে ছোট হলেও পুরসভার অন্দরেই গাফিলতির চরম উদাহরণ। বারবার জানিয়েও কার্যত অসহায় কাউন্সিলর। শাসক দলের কাউন্সিলারের পুরসভার অধিবেশনে ক্ষোভ।

কলকাতা পুরসভার ১৩২ নম্বর ওয়ার্ড। বেহালার অন্দরে সাগর মান্না রোড। নামে রোড হলেও এর একাংশ আসলে কাঁচা রাস্তা। উঁচু-নিচু পথ, পুকুরের পাশে এই কাঁচা রাস্তায় এমনিতেই গাড়ি ঢোকে না। বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসীরা। এই এলাকায় নতুন এসেছেন স্মরজিত গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি ৭০ বছর বয়সী ৷ স্ত্রী কৃষ্ণা গঙ্গোপাধ্যায় রিউমেটিক পেশেন্ট, তাঁর বয়সও ষাটোর্ধ্ব। মাঝে মাঝে কৃষ্ণাদেবীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়, অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে অসুবিধা হয় ৷ কোনও অ্যাপ ক্যাপ ডাকলে কিছুতেই আসতে চায় না এই কাঁচা রাস্তায়।

স্কুটি বা মোটরবাইকে দুর্ঘটনার মুখে পড়েছেন বাসিন্দারা। নিকাশি ব্যবস্থা তো নেই! সন্ধ্যা হলে আলো থাকে না। রাস্তা না হওয়ায় নেই স্ট্রিট লাইটের ব্যবস্থা। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন এলাকার মহিলারা। সাগর মান্না রোডের বাসিন্দা মোনালিসা দাস ও তন্ময় ভৌমিক একই অভিযোগ করেন। একদিকে রাস্তা খারাপ, অন্যদিকে নিকাশের এখনও কোনও ব্যবস্থাই হয়নি। মোনালিসা আরও জানান, রাতের বেলা এলে এই কাঁচা রাস্তা, এবড়ো-খেবড়ো রাস্তায় রীতিমতো সমস্যা হয় কারণ কোনও আলোই থাকে না।

কলকাতা পুরসভার ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাগর মান্না রোড সংলগ্ন এলাকার পাশেই রয়েছে পুরসভার ৮০ নম্বর ওয়ার্ড আর অন্যদিকে ১৩০ নম্বর ওয়ার্ড। সাগর মান্না রোডেই কলকাতা পুরসভা অনুমোদন দিয়েছে নতুন নতুন আবাসনের। সেই আবাসনের সামনেই এই রাস্তা নিয়ে যত গন্ডগোল। তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলার অভিযোগ তুলছেন পুরসভার আধিকারিকদের বিরুদ্ধে। কলকাতা পুরসভার ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সঞ্চিতা মিত্র বলেন, ‘‘বরো অফিস থেকেই দীর্ঘদিন এই ফাইল ইচ্ছাকৃতভাবে ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। তাই হেড অফিসে মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই পুরসভার অধিবেশনে প্রস্তাব তুলেছিলাম।’’

মাসের পর মাস জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি পুরসভার দফতর এবং মেয়র পারিষদে। তাই বাধ্য হয়েই অধিবেশনে কলকাতা পুরসভার কাজ নিয়ে গড়িমসির প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল কাউন্সিলর। আর তাতেই ক্ষুব্ধ মেয়র পারিষদ রাস্তা অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। শেষে মেয়র ফিরহাদ হাকিম আশ্বাস দেন অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার। তবে কাঁচা রাস্তায় পিচ না পড়লে ফের পুরসভায় মেয়রের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান কাউন্সিলর।

কলকাতা পুরসভা নিজেই অনুমোদন দিয়েছে আবাসনের। আবাসনের বাসিন্দারা সেখানে বসবাস করতে শুরু করেছেন। কলকাতা পুরসভাকে করও দিচ্ছেন সময়মতো। কিন্তু আবাসনের সামনের রাস্তা করতে পুরসভারই গড়িমসি চলছে। স্বভাবতই নাগরিক পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

(Feed Source: news18.com)