বিশ্বকাপ শেষ; কী হবে ভারত, বাংলাদেশের কর্মীদের? আশঙ্কার প্রহর গুনছেন তাঁরা

বিশ্বকাপ শেষ; কী হবে ভারত, বাংলাদেশের কর্মীদের? আশঙ্কার প্রহর গুনছেন তাঁরা

সদ্য শেষ হয়েছে বিশ্বকাপের ফাইনাল। কাতার জুড়ে একটাই রব, ‘মেসি, মেসি, মেসি’। যেদিকে চোখ যায় শুধুই নীল-সাদা। দোহার সবচেয়ে বড় বাজার সৌক ওয়াকিফের এক কোণে জটলা করে মেসির নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছিলেন রশিদরা। সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়া থেকে যাওয়া অসংখ্য কর্মী। প্রত্যেকেই মেসি-জাদুতে আচ্ছন্ন।

রশিদদের ঘুরে ঘুরে দেখছেন অনেকেই। হাসাহাসিও করছেন। ভাবছেন এরা আবার কারা? আর্জেন্তিনার নাগরিক তো নয়। ‘ফেক ফ্যান’ হবে হয় তো। তবে রশিদ নির্বিকার। তাঁর গায়ে টি শার্ট। তাতে লেখা ‘রাইট’ বা অধিকার। আর মুখে ‘মেসি মেসি’। রশিদ নিজের পুরো নাম বলতে চাইলেন না। পাছে জানাজানি হলে কাতারি নিয়োগ কর্তারা কোনও পদক্ষেপ করে।

বিশ্বকাপের আগে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা থেকে অসংখ্য কর্মী কাজের আশায় পাড়ি দেন কাতার। নির্মাণ-শ্রমিক তাঁরা। বিশ্বকাপের ৮টি স্টেডিয়াম তৈরি হয়েছে তাঁদের হাতেই। কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হল, এই সব নির্মাণ শ্রমিকরা এখন কী করবেন? বিশ্বকাপের পর তাঁরা কি আর কাজ পাবেন?

কাতার বিশ্বকাপে ম্যাচ দেখার সবচেয়ে বেশি টিকিট কেটেছেন ভারতীয়রা। পরিসংখ্যান বলছে এমনটাই। রবিবার বিশ্বকাপের ফাইনাল হয় লুসাইল স্টেডিয়ামে। ম্যাচ শুরুর আগেই স্টেডিয়াম তৈরি করা শ্রমিকদের ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়। ম্যাচে ৮৮,০০০ জনের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ খুব কমই ছিলেন।

কেরল থেকে কাজের খোঁজে কাতার যান শফিক। রবিবার ম্যাচ শেষে আর্জেন্তিনার জার্সি পরে তিনিও মেতেছিলেন জয়ের আনন্দে। শফিক বলছিলেন, ‘এভাবে বাইরে বেরিয়ে আমরা উদযাপন করতে পারি না। সাধারণত সবাই কর্মী জোনে থাকি। আমাদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, বিশ্বকাপের পর কী হবে’?

কাতারে বিশ্বকাপ ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই সাজো-সাজো রব পড়ে যায়। শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই শ্রমিকের অধিকার পদদলিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। প্রচণ্ড গরমে কাজ করতে গিয়ে একাধিক কর্মীর মৃত্যুও হয়েছে। অনেক সংগঠনের দাবি, কাতার প্রশাসন মৃত কর্মীদের সংখ্যা কমিয়ে দেখাচ্ছে।

লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড জাতিসংঘের মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। রবিবার কাতারের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানির সঙ্গে এক বৈঠকে এই বিষয়টি উত্থাপন করেন। মার্কিন সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কাতারকে বিশ্বকাপের বাইরেও শ্রম সংস্কার এবং মানবাধিকারের প্রতি গুরুত্ব দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। বিশ্বকাপ সফরে আসা অন্যান্য মন্ত্রীরাও কম-বেশি এই বার্তাই দিয়েছেন।

(Feed Source: news18.com)