বলেছিল বাংলাদেশ সফরে নেবে- সুযোগ না পেয়ে অকপট সরফরাজ

বলেছিল বাংলাদেশ সফরে নেবে- সুযোগ না পেয়ে অকপট সরফরাজ

আমি যেখানেই যাই সেখানেই আমার শুনতে হয় যে আমি শীঘ্রই ভারতীয় দলের হয়ে খেলব। কিন্তু, একটানা রান করা সত্ত্বেও, প্রতিবারই টিম ইন্ডিয়া নির্বাচনের সময় আমার নাম সেই তালিকায় দেখতে পাই না, যা দেখার পরে হতাশ হয়ে যাই। নিজের যন্ত্রণার কথা জানালেন সরফরাজ খান। গত এক বছরে মুম্বইয়ের এই ব্যাটসম্যান ঘরোয়া ক্রিকেটে এমন এক পাহাড় সমান রান করেছিলেন যা দেখে বহু বিশেষজ্ঞ তাঁকে ভারতের ব্র্যাডম্যান বলতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু যখন টিম ইন্ডিয়াতে নির্বাচনের কথা আসে, তখন তিনি নির্বাচকদের মানদণ্ড অনুযায়ী থাকতেই পারেন না।

সম্প্রতি, যখন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ২ টেস্টের জন্য টিম ইন্ডিয়া ঘোষণা করা হয়েছিল, সরফরাজ আশাবাদী ছিলেন যে এবার তাঁর নম্বর হয়তো আসবে। কিন্তু সেটি আর হয়ে ওঠেনি। তাঁর পুরানো সঙ্গী এবং বন্ধু সূর্যকুমার যাদব টেস্ট দলে জায়গা পেলেও আবারও সরফরাজকে হতাশ হয়েছে এবং এবার তার যন্ত্রনা বেরিয়ে এসেছে।

২০১৯ সাল থেকে মুম্বই-এর ব্যাটসম্যান ২২টি ইনিংসে ১৩৪.৬৪ গড়ে নয়টি সেঞ্চুরি, পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরি, দুটি ডাবল সেঞ্চুরি এবং একটি ট্রিপল সেঞ্চুরি সহ ২২৮৯ রান করেছেন। এই কারণেই ক্রিকেট ভক্তরা সরফরাজ খানকে ‘ভারতের ব্র্যাডম্যান’ বলে ডাকছেন। এই পারফরম্যান্সের পরও যদি তিনি ভারতীয় দলে সুযোগ না পান, তাহলে যে কোনও খেলোয়াড়ই হতাশ হবেন। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সরফরাজ খানের হতাশাও যুক্তিযুক্ত।

টিম ইন্ডিয়ার নির্বাচনের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে একটি কথোপকথনে, সরফরাজ নির্বাচকদের দ্বারা উপেক্ষা করায় তার বেদনা প্রকাশ করেছিলেন। সরফরাজ খান বলেন, ‘দল নির্বাচনের পরের দিন, আমি অসম থেকে দিল্লি এসেছিলাম (রঞ্জি ট্রফি ম্যাচের পরে) এবং সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছিলান যে কেন আমি সেখানে নেই (স্কোয়াডে)। আমার নাম নেই কেন?’

সরফরাজ খান আরও বলেন, ‘আমি অনুশীলন ছাড়ব না। ডিপ্রেশনে যাবো না। আমি চেষ্টা করতে থাকব।’ তবে কোথাও না কোথাও তারও খারাপ লাগে বলে স্বীকার করেছেন তিনি। কারণ সেও একজন মানুষ, তাঁরও যন্ত্র হয়। সরফরাজ বলেন, ‘আমি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলাম। যে কারো জন্য এটা স্বাভাবিক, বিশেষ করে এত রান করার পর। আমিও মানুষ, যন্ত্র হয়। আমারও অনুভূতি আছে। আমি আমার বাবার সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি দিল্লিতে এসেছেন।’ তিনি দিল্লিতে অনুশীলন করেছেন। এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান বিশ্বাস করেন যে তাঁরও সময় আসবে এবং তিনিও ভারতের হয়ে খেলবেন। সরফকাজ খান বলেছিলেন যে প্রথমে তিনি মুম্বই দলে যোগ দেওয়ার কথা বলতেন এবং এখন টিম ইন্ডিয়াতে জায়গা করার বিষয়ে কথা বলছেন।

টিম ইন্ডিয়াতে নির্বাচিত না হওয়ার পিছনে কি ইন্ডিয়া এ পারফরম্যান্স ছিল? বা ফিটনেস। এই প্রশ্নের জবাবে সরফরাজ বলেন, টিম ইন্ডিয়াতে নির্বাচিত হওয়ার জন্য আর কী করতে হবে। রঞ্জি ট্রফিতে ২ দিন ব্যাট করার পর পরের দুদিন ফিল্ডিং। ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষাও পাশ করেছে। যদি ভারত-এ-এর পারফরম্যান্সই নির্বাচনের মাপকাঠি হয়, তবে পৃথ্বী শ কীভাবে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে জায়গা পেলেন? যদিও তিনি ভারত-এ-এর হয়ে ম্যাচ খেলেননি। অতীতে, নির্বাচকরা ভারত-এ পারফরম্যান্স ছাড়াই টিম ইন্ডিয়াতে বিশেষ খেলোয়াড় বাছাই করেছেন।

সরফরাজ আরও একটি ঘটনার কথা বলেছেন। যখন তিনি বেঙ্গালুরুতে রঞ্জি ট্রফরি ফাইনাল খেলতে গিয়েছিলেন তখন তাঁকে বলা হয়েছিল যে তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্টে দলে জায়গা পেতে পারেন, এবং তাঁকে প্রস্তুত থাকতেও বলা হয়েছিল। তবে এরপরে সেটা আর হয়নি। সেই সময়ে নির্বাচক প্রধান চেতন শর্মার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, সেই সময়ে তিনি সরফরাজকে বলেছিলেন, ভালো জিনিস খুব দেরিতে আসে। সরফরাজ যেন অপেক্ষা করেন। চেতন শর্মা বলেছিলেন যে ভারতীয় দলে তাঁর জায়গা প্রায় নিশ্চিত হয়ে এসেছে। তবে তারপরেও দলে জায়গা হয়নি সরফরাজের যার পরে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।

(Feed Source: hindustantimes.com)