আইএসএলে চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র এটিকে মোহনবাগানের

আইএসএলে চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র এটিকে মোহনবাগানের

চেন্নাই: আইএসএলে চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে মাত্র এক পয়েন্ট নিয়ে কলকাতায় ফিরতে হচ্ছে এটিকে মোহনবাগানকে (Chennaiyin FC vs ATK Mohun Bagan)। চলতি লিগে দ্বিতীয় গোলশূন্য ম্যাচটি খেলল তারা। এখনও যে গোলের সুযোগ নষ্টের রোগ সারেনি তাদের, তা এই ম্যাচেই বোঝা গেল আরও একবার। দলে একজন বিশেষজ্ঞ স্ট্রাইকার না থাকার মাসুলও ফের দিতে হল তাদের।

শনিবার চেন্নাইয়ে বিপক্ষের গোল লক্ষ্য করে ছ’টি শট নিয়েও একটিও গোল করতে পারেননি এটিকে মোহনবাগান তারকারা। ব্রেন্ডান হ্যামিল সবচেয়ে সহজ দু’টি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। এ ছাড়া হুগো বুমৌস (২), দিমিত্রিয় পেট্রাটস (৩), মনবীর সিংও (১) সুযোগ হাতছাড়া করে দলকে তিন পয়েন্ট এনে দিতে পারলেন না। চেন্নাইয়িন সম্পর্কেও একই কথা বলা যেতে পারে। সাতটি শট গোলে রেখেও তারা একটিও জালে জড়াতে পারেনি। জিতেশ্বর সিংহ, অনিরুদ্ধ থাপা, জুলিয়াস ডুকের, ভিঞ্চি ব্যারেটো, অজিত কুমাররা বেশি গোলের সুযোগ তৈরি করেও গোল দিতে পারেননি।

এই ড্রয়ের ফলে এটিকে মোহনবাগান অতটা ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও চেন্নাইন এফসি-র সেরা ছয়ে পৌঁছনোর রাস্তা আরও কঠিন হয়ে গেল। সবুজ-মেরুন শিবির ১৪ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে রয়ে গেল চার নম্বরে। চেন্নাইন এফসি ১৭ পয়েন্ট পেয়ে আটে।

ছ’টি ম্যাচে দলের বাইরে থাকার পরে এ দিনই মাঠে ফেরেন এটিকে মোহনবাগানের ফরওয়ার্ড মনবীর সিংহ, যিনি আইএসএলের শততম ম্যাচ খেললেন। আশিক কুরুনিয়ানের জায়গায় তিনিই ছিলেন এ দিনের ম্যাচে দলে একমাত্র পরিবর্তন। তবে মাইলস্টোন ম্যাচ খুব একটা স্মরণীয় করে রাখতে পারলেন না মনবীর। অন্য দিকে, কোনও পরিবর্তন না করেই প্রথম এগারো নামায় চেন্নাইয়িন এফসি।

ম্যাচ শুরু হওয়ার সাত মিনিটের মধ্যেই একটি করে শট প্রতিপক্ষের গোলে রাখে দুই দল। তবে দু’বারই দুই গোলকিপারই দলকে বাঁচান দুর্দান্ত সেভ করে। প্রথমে দিমিত্রিয়স পেট্রাটসের কর্নারে ইনসাইড স্টেপে গোলে বল পাঠান ব্রেন্ডান হ্যামিল। পরে বক্সের বাইরে থেকে সোজা গোলে শট নেন অনিরুদ্ধ থাপা। দুই দলই এ দিন শুরু থেকেই ছিল আক্রমণাত্মক মেজাজে। কারণ, দু’পক্ষই তিন পয়েন্ট তুলতেই মাঠে নেমেছিল। তাই সারা ম্যাচেই দুই গোলকিপারকে কড়া পরীক্ষার সামনে পড়তে হয়।

মাঝমাঠের লড়াইয়ে অবশ্য শুরু থেকেই এ দিন চেন্নাইন এফসি-কে এগিয়ে থাকতে দেখা যায়। সদ্য সবুজ-মেরুন শিবিরে যোগ দেওয়া পুইতিয়া, কার্ল ম্যাকহিউদের বেশ নড়বড়ে লাগছিল। অনেকদিন পর মাঠে নামায় মনবীর সিংকেও প্রথমার্ধে চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে তিনি সচল হলেও স্বাভাবিক ভাবেই সেরা জায়গায় ছিলেন না। এই জায়গাগুলো দুর্বল হয়ে যাওয়ায় সেগুলি কাজে লাগাতে শুরু করে চেন্নাইয়িন এফসি।

শুরুর দিকে অতটা ধারালো মনে না হলেও ২৮ মিনিটের মাথায় যে ভাবে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে বিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন হুগো বুমৌস, তাতে তাঁকে চেনা মেজাজে পাওয়া যায়। মাঝমাঠ থেকে বক্স পর্যন্ত যেতে তিনি অজিত ও ডুকেরকে পরাস্ত করেন। কিন্তু ফালু দিয়াগ্নে তাঁর জার্সি ধরে টেনে বক্সের সামনে ফেলে দেন বুমৌসকে। পেট্রাটসের মাপা ফ্রি কিকে মাথা ছোঁয়ালে অবধারিত গোল পেতেন হ্যামিল। কিন্তু তিনি ঠিকমতো হেডই করতে পারেননি।

এটিকে মোহনবাগানের বেশির ভাগ আক্রমণই হয় বাঁ দিকে, অর্থাৎ কোলাসোর দিক দিয়ে। মনবীরের দিকটা কার্যত অচল ছিল। ফলে তাদের আটকানো অনেকটাই সহজ হয়ে পড়ে চেন্নাইন ডিফেন্সের পক্ষে। মাঝে অবশ্য মাঝবরাবর আক্রমণে ঝড় তোলার চেষ্টা করেন পেট্রাটস, বুমৌসরা। কিন্তু প্রথমার্ধে তাঁদের সেই চেষ্টা সফল হতে দেননি দিয়াগ্নে, ভাফা হাখামানেশিরা।

এটিকে মোহনবাগানের গোলপ্রহরী বিশাল কয়েথও অবশ্য সতর্ক ছিলেন এবং ৫৩ মিনিটের মাথায় ডুকেরের অনবদ্য ফ্রিকিক গোলে ঢোকার আগেই আটকে দেন। পরের মিনিটেই ভিঞ্চি ব্যারেটোর গোলমুখী শট ফের আটকান তিনি।

নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে বুমৌসের জায়গায় স্লাভকো দামজানোভিচ ও আশিস রাইয়ের জায়গায় ফারদিন আলি মোল্লাকে নামায় এটিকে মোহনবাগান। তিন মিনিট বাড়তি সময়ও পান তাঁরা। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি।

(Feed Source: abplive.com)