জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এ বছর ছ’জন ‘পদ্ম বিভূষণ’ পেয়েছেন। তার মধ্যে ‘আর্ট’ বিভাগে একজনই এই সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন। তিনি এই সময়ের সম্ভবত সব চেয়ে জনপ্রিয় তবলাবাদক উস্তাদ জাকির হুসেন।
তাঁকে বলা হয় তবলার জাদুকর। তিনি যখনই মঞ্চে ওঠেন চারদিক থেকে শ্রোতাদের অনন্য উল্লাস চোখে পড়ে। সমস্ত আলো যেন তিনি টেনে নেন। গুণপণা যত উচ্চমানেরই হোক না কেন ধ্রুপদী সংগীতবাদ্যের ক্ষেত্রে কোনও শিল্পীর ঠিক এই ধরনের হিরোসুলভ জনপ্রিয়তা সুলভ নয়। কিন্তু তাঁর নাম জাকির হুসেন। তিনি সব নিয়মই উল্টেপাল্টে দেন– কী বাদনে, কী যাপনে, কী শিল্পের উদযাপেন।
সারা জীবন জুড়ে নানা সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন জাকির। ১৯৮৮ সালে ‘পদ্মশ্রী’তে ভূষিত হয়েছিলেন, ১৯৯০ সালেই পেয়েছিলেন সংগীত নাটক একাডেমি পুরস্কার। ১৯৯৯ সালে পেয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর দ্য আর্টস ন্যাশনাল হেরিটেজ ফেলোশিপ’ সম্মান। ২০০২ সালে পেয়েছিলেন ‘পদ্ম ভূষণ’। আর এ বছর তিনি ‘পদ্ম বিভূষণে’ সম্মানিত হলেন। জাকিরের এই সম্মানপ্রাপ্তিতে উল্লসিত তাঁর অনুরাগীগণ, গর্বিত হিন্দুস্থানি ধ্রুপদী সংগীতের জগৎও।
১৯৫১ সালে জন্ম জাকিরের। তিনি কিংবদন্তি তবলাবাদক উস্তাদ আল্লারাখার জ্যেষ্ঠ সন্তান। ১৯৭৩ সাল থেকেই তিনি অ্যালবামে বাজাচ্ছেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত রেকর্ড– ‘ইভিনিং রাগাজ’ তাঁর মাত্র ১৯ বছরের কাজ। এর পর একে একে বিখ্যাত সব অ্যালবাম আসে– শান্তি, রোলিং থান্ডার, শক্তি, হার্ড ওয়ার্ক। তাঁর কেরিয়ারের একটা বড় সময় তিনি শিবকুমার শর্মা ও হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার সঙ্গে বাজিয়েছেন। অ্যালবাম করেছেন তাঁর প্রখ্যাত বাবার সঙ্গেও! কেরিয়ারের একটা বড় অংশ তিনি পণ্ডিত রবিশঙ্করের সঙ্গে ওয়ার্ল্ড ট্যুর করেছেন। বাজিয়েছেন কখনও আলি আকবর খানের সঙ্গে, কখনও আমজাদ আলি খানের সঙ্গে। জাকিরের লেটেস্ট অ্যালবাম ‘ইন দ্য গ্রুভ’ প্রকাশিত হয়েছে ২০২২ সালে।
তাঁর একক বাদনকেও তিনি একটা অনন্য স্তরে নিয়ে গিয়েছেন। তবলা যে শুধু সংগতের যন্ত্র নয়, এই ভাবনা তাঁর আগে অনেকের মধ্যে থাকলেও জাকিরই প্রথম এই ভাবনাকে জোরের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেন। সংগতকার হিসেবেও তিনি যেমন উচ্চমানের, সোলোইস্ট হিসেবেও তিনি বরাবর শ্রোতার মনে এক অনন্য ছাপ ফেলেন।
জাকির হুসেন বলিউড ও হলিউড কিছু ছবির জন্যও মিউজিক ট্র্যাক তৈরি করেছেন। নিজে অভিনয়ও করেছেন হলিউডের কিছু কিছু ছবিতে।
(Feed Source: zeenews.com)