আয়কর ছাড়ের উর্ধ্বসীমায় কি আদৌ পরিবর্তন আনবেন নির্মলা! তা কতটা প্রয়োজন

আয়কর ছাড়ের উর্ধ্বসীমায় কি আদৌ পরিবর্তন আনবেন নির্মলা! তা কতটা প্রয়োজন

কলকাতা: আসন্ন কেন্দ্রীয় বাজেটের দিকে আপাতত সকলের নজর। বেতনভোগী শ্রেণির মানুষের প্রাথমিক চাহিদা অবশ্যই আয়কর ছাড়ের উর্ধ্বসীমার দিকে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে ২০২৩ সালের জন্য বাজেট পেশ করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ।

ভারতীয় অর্থনীতিতে স্বতন্ত্র করদাতাদের একটা বড় গুরুত্ব রয়েছে। তাঁদের জন্য এবার বড় রকমের করছাড় ঘোষণা করা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হতে পারে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের হার ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লক্ষ টাকা করা।

প্রয়োজনীয়তা:

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, পেশাদারদের ক্ষেত্রে যেমন প্রকৃত খরচ যেমন, ভ্রমণ, ছাপাখানা, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, কর্মীদের বেতন, যানবাহনের খরচ প্রভৃতি বাদ দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, তেমনই বেতনভোগীদের ক্ষেত্রেও হওয়া উচিত।

গত দু’বছরে দেশের মূল্যবৃদ্ধি এমন অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে যার ফলে জীবনযাত্রার মানে পরিবর্তন এসেছে। বার্ষিক ৫০ হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন বেশির ভাগ অর্থনীতি বোদ্ধাই। তাই যুক্তিসঙ্গত ভাবেই এই সীমা বাড়িয়ে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করা উচিত বলে মনে করছেন তাঁরা।

অ্যাসোচেম এই বিষয়ে তাদের প্রাক বাজেট স্মারকলিপিতেও প্রায় একই কথা জানিয়েছে। তাদের দাবি, বেতনের উপর ৫০ হাজার টাকার প্রাথমিক ছাড় কোনও বেতনভোগী ব্যক্তির জীবনে তেমন কোনও গুরুত্ব তৈরি করে না। কারণ এই ছাড়ের একটা অংশ ১ শতাংশ অতিরিক্ত সেস হিসেবে ধরা হয়, ২০১৮ সালের আইন অনুসারে।

এরই পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি সূচকে সামঞ্জস্য আনাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। কর্মসংস্থানের সময়ই কর্মীদের এমন অনেক খরচ হয়ে যায় যেগুলিকে ছাড়ের আওতায় আনা যায় না। উপরন্তু, আইনের ১০ নম্বর ধারায় এমন কিছু ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যা বহু বছর আগে স্থির করা হয়েছিল। বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির সময় তা আর তেমন কার্যকর নয়।

বাণিজ্যিক সংগঠনগুলিও মনে করে মুদ্রাস্ফীতির সূচকের উপর ভিত্তি করে আদর্শগত ভাবে প্রতিবছরই স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন সংশোধন করা উচিত। অন্তত তেমনটা করা যেতেই পারে। রাজস্বের দিকে নজর দিতে গেলেও এই করছাড়ের বিষয়টিকে মুদ্রাস্ফীতির সূচকের সঙ্গে যুক্ত করে নেওয়া প্রয়োজন।

অতিমারী পরবর্তী পৃথিবীতে কাজের ক্ষেত্রে নানা ধরনের বদল এসেছে। পরিবর্তন করা হয়েছে এই দেশের কাজের ক্ষেত্রেও। বর্তমানে বহু সংস্থাই তার কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতি দেয়। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বেতনভোগীদের ফারাক ঘুচে যাচ্ছে অনেকাংশেই। কেন এমন হচ্ছে? আসলে, বাড়ি থেকে কাজ করতে গেলে বেতনভোগীকেও অতিরিক্ত কাজ সংক্রান্ত নানা ব্যক্তিগত ব্যয়, যেমন বিদ্যুৎ বিল, শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র, খাদ্য ইত্যাদির জন্য ব্যয় করতে হয়। ফলে আয়কর ছাড়ের ক্ষেত্রেও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈষম্য ঘুচে যাওয়া প্রয়োজন।

কী লাভ হবে:

২০১৮ সালে সংশোধিত অর্থ আইন অনুযায়ী ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ে কর ছাড়ের অনুমোদন ছিল। পরবর্তী বছরে তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত করা হয়। এর মধ্যে আবার ১৯,২০০ টাকার পরিবহণ ভাতা এবং ১৫,০০০টাকার চিকিৎসা খরচও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ফলে আয়কর ছাড়ের অংশটি ১৫,৮০০টাকার ত্রাণে এসে দাঁড়িয়েছে।

সেক্ষেত্রে এ বারের বাজেটে ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লক্ষ টাকার প্রাথমকি করছাড়ের ব্যবস্থা করলে খানিকটা সুরাহা হতে পারে।

ধরা যাক কোনও বেতনভোগী করদাতার বার্ষিক আয় যদি প্রায় ৭.৫ লক্ষ টাকা হয় তবে তিনি প্রায় ১০,৪০০ টাকা বাঁচাতে পারবেন। আবার যদি কোনও ব্যক্তির আয় ১৫ লক্ষ টাকা হয়, তবে তিনি প্রায় ১৫,৬০০ টাকা বাঁচাতে পারবেন।

(Feed Source: news18.com)