গার্গী রায়: আগে গরিবের রোগ বলে পরিচিত ছিল টিবি। টিবিকে বলা হত রাজরোগ। আগে গরিবের ঘরে এই রোগের আনাগোনা ছিল বেশি। দিনকাল বদলেছে, ২০২৩ সালে টিবি রোগের চরিত্র বদলে গরিব ও বড় লোকের ভেদাভেদ মুছে গিয়েছে। সাম্যবাদ পৃথিবীতে না এলেও, টিবির জগতে এখন সাম্যবাদই প্রচলিত। টিবি গরিব ও বড়লোকের দূরত্ব ঘুচিয়ে এক আসনে বসিয়েছে।
যক্ষ্মা একটি গুরুতর ব্যাকটিরিয়া সংক্রমিত রোগ, যা ফুসফুসকে প্রধানত প্রভাবিত করে। এটি একটি মারাত্মক ব্যাকটিরিয়া সংক্রমিত রোগ যা কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফুসফুস ছাড়াও কিডনি, হাড়ের জয়েন্ট, মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড, হার্টের পেশি এবং স্বরযন্ত্রকেও প্রভাবিত করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ২৪ মার্চ দিনটিকে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস (World TB Day) হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যক্ষ্মা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির জন্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, টিবি ব্যাকটিরিয়াঘটিত রোগ এবং এটি মূলত ফুসফুসকে প্রভাবিত করে। যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি কাশেন, বা হাঁচেন বা কোথাও থুতু ফেলেন তখন এ সবের মাধ্যমে টিবি-র জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে পড়তে পারে। অল্প সংখ্যক টিবির জীবাণুও যদি বাতাসের মাধ্যমে সুস্থ ব্যক্তির শ্বাসপ্রশ্বাসে মেশে, তাহলে সেই ব্যক্তিও যক্ষ্মা রোগের শিকার হন।
সারা বিশ্বে ১ কোটি মানুষ এই রোগের শিকার। এটিও একটি প্রতিরোধযোগ্য এবং নিরাময়যোগ্য রোগ। তা সত্ত্বেও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর বিশ্বে ১ কোটির বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে। তৃতীয় বিশ্বের মানুষ মূলত দু-ধরনের টিবি-তে আক্রান্ত হন– সুপ্ত এবং সক্রিয় টিবি। এবার দেখে নেওয়া যাক, এই রোগের কিছু লক্ষণ:
সক্রিয় টিবি-র লক্ষণ
কাশির সঙ্গে রক্ত পড়লে, বুকে ব্যথা হলে, শ্বাস নেওয়ার সময় ব্যথা অনুভব করলে, কাশি হওয়া, জ্বর হওয়া, ঠান্ডা লাগা কিংবা ওজন ও খিদে কমে যাওয়া এবং আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলেও ঘাম হওয়া ইত্যাদি। যখন এই টিবি-র ব্যাকটিরিয়া শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, তখন শরীর তার স্বাভাবিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হারায়। সক্রিয় টিবির চিকিৎসা সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়েই শুরু না হলে প্রাণসংশয় ঘটতে পারে।
সুপ্ত টিবি-র লক্ষণ
এই ধরনের টিবির লক্ষণগুলি শরীরের কোন অংশ হয়েছে তার উপর নির্ভর করে। লক্ষণগুলি মোটামুটি সক্রিয় টিবির মতোই, তবে ক্লান্তি, হতাশা এবং সংক্রমণস্থলের কাছে ব্যথা ইত্যাদিও কারও কারও ক্ষেত্রে অনুভূত হয়। যখন সক্রিয় টিবি ফুসফুসের বাইরে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে তখন একে বলা হয় এক্সট্রাপালমোনারি টিউবারকিউলোসিস।
যক্ষ্মার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রয়েছে বিসিজি ভ্যাকসিন। যেটিকে জন্মের সময়ে দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভারতের বহু মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত তাই আমাদের আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
(Feed Source: zeenews.com)