শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির ‘রোগ’ সিপিএম আমল থেকে চলে আসছে বলে অভিযোগ। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলেও হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরে ব্যাপক গরমিল হয়েছিল বলে ক্যাগের এক রিপোর্টে অভিযোগ উঠেছে। শুধু ২০০৯ সালের সহকারি শিক্ষক নিয়োগের দশম আরএলএসটিতেই ৪৬ হাজার ৬৪৭ জন প্রার্থীর অ্যাকাডেমিক স্কোরে (শিক্ষাগত নম্বরে) গড়মিল ধরা পড়েছে অডিটে। এঁদের মধ্যে ৩২ হাজার ৯৭০ জনের নম্বর বাড়ানো হয়েছিল বলেও অভিযোগ। আবার নম্বর কমানো হয়েছিল ১৩ হাজার ৬৭৭ জন প্রার্থীর বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী, চূড়ান্ত মেধাতালিকায় থাকা ২ হাজার ৪৮৩ জনের প্রাপ্ত নম্বরেও গরমিল করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের অধিকাংশই এখনও চাকরি করছেন। বাম আমলে হওয়া প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগেও অনিয়মের ইঙ্গিত মিলছে তদন্তে।
ক্যাগের তথ্য কী বলছে? ২০০৯ সালে অঞ্চল ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করত স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। ক্যাগের তথ্য বলছে, তখন পূর্বাঞ্চলে ৬ হাজার ৪৯৩ জনের নম্বরে হেরফের করা হয়েছিল। উত্তরাঞ্চলে সেই সংখ্যা ১১ হাজার ২১। আর দক্ষিণাঞ্চলে (সাদার্ন রিজিয়ন) ৮ হাজার ৩৪ জনের ক্ষেত্রে অসঙ্গতি মিলেছে। আবার পশ্চিমাঞ্চলে ১২ হাজার ৫৫৩ জন প্রার্থীরই নম্বর বাড়ানো হয়েছিল। সাউথ–ইস্টার্নে গরমিল ছিল ৮ হাজার ৫৪৬ জনের প্রাপ্ত নম্বরে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই বিষয়ে ২০১৭ সালে এসএসসি জানায়, কম্পিউটারে তথ্য তোলার সময় ভুল করেছিলেন ডেটা এন্ট্রি অপারেটররা। পরে তা সংশোধনের সময় শুধুমাত্র অ্যাকাডেমিক স্কোর পরিবর্তন করা হয়। পাল্টা ক্যাগের দাবি, এটা থেকে পরিষ্কার যে তখন এসএসসি এই ব্যাপারে নির্দিষ্ট নীতি প্রণয়নে ব্যর্থ হয়েছিল। শুধু সহকারি নয়, প্রধান শিক্ষক নিয়োগেও ব্যাপক গরমিলের উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সরকারকে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ক্যাগ। তা অবশ্য নেওয়া হয়নি।
ঠিক কী বলছে সিপিএম? এই ঘটনা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। তাই সিপিএম নেতা বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তীরা বলেছেন, ‘বাম আমলে দুর্নীতি হয়ে থাকলে তা সামনে আসুক।’ তবে পালাবদলের পর ২০১২ সালে বাম আমলে তৈরি মেধাতালিকার ভিত্তিতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। আর মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা, অ্যাকাডেমিক স্কোর সম্পর্কিত কোনও তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ, আবারও দুর্নীতির ইঙ্গিত।
(Feed Source: hindustantimes.com)