নয়াদিল্লি: মানহানির মামলা করে, সাংসদ পদ খারিজ করে তাঁকে দমানো যাবে না বলে আগেই রব তুলেছিল দল। এ বার তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নিজেও সুর চড়ালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। শনিবার রীতিমতো আক্রমণাত্মক মেজাজেই পাওয়া গেল তাঁকে। জানিয়ে দিলেন, তাঁর নাম সাভারকর নয়। তাই ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন নেই (MP Disqualification)।
গত দু’দিন ধরে কংগ্রেসের গলায় যে সুর ছিল, এ দিন সেই সুর ধরা পড়ে রাহুলের গলাতেও
সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পর এ দিন দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাহুল। আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। জানান, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না তিনি। তবে লন্ডনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষণ নিয়ে ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ উঠলে বিনায়ক সাভারকরের উল্লেখ টেনে আনেন রাহুল। গত দু’দিন ধরে কংগ্রেসের গলায় যে সুর ছিল, এ দিন সেই সুর ধরা পড়ে রাহুলের গলাতেও।
মোদি পদবী নিয়ে রাহুলের ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন নেই বলে আগেই জানিয়েছিল কংগ্রেস। কেমব্রিজ ভাষণ নিয়ে সংসদে বিজেপি-র তরফে যে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি জানানো হচ্ছে, সেই দাবি তিনি মানবেন কিনা এ দিন জানতে চাওয়া হয় রাহুলের কাছে। জবাবে রাহুল বলেন, “আমার নাম সাভার কর নয়। আমি গান্ধী আমি ক্ষমা চাইব না।”
সাংসদ পদ বাতিল হওয়া নিয়ে রাহুলের বক্তব্য, “আমার সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে। কারণ আমার ভাষণে ভয় পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওঁর চোখে ভয় দেখেছি আমি। তাই সংসদে আমাকে কথা বলতে দিতে চান না।”
সংসদে আদানি প্রসঙ্গ তোলার পর থেকেই রাহুল এবং বিরোধীদের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না, এমনকি সংসদও চলতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সেই নিয়ে কেমব্রিজ ভাষণেও সরব হয়েছিলেন রাহুল। নরেন্দ্র মোদির আমলে সংসদে বিরোধীদের কথা বলতে দেওয়া হয় না, মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন।
রাহুলের সেই মন্তব্যকে দেশবিরোধী আখ্যা দিয়েছেন বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরা। রাহুল দেশের প্রশাসনিক বিষয়ে বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ চেয়েছেন, তার জন্য তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেছেন। যদিও সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন রাহুল। তাঁর মন্তব্যে কোথাও তেমন কিছু থাকলে, প্রমাণ করে দেখাতে হবে বলে জানিয়েছেন। বরং বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও, লোকসভার স্পিকার তাঁকে কথা বলতে দেননি, বিজেপি সাংসদদের মিথ্যে অভিযোগের জবাব দিতে দেননি, যা সাংসদ হিসেবে তাঁর সাংবিধানিক অধিকার বলে দাবি রাহুলের।
তবে সাংসদ পদ বাতিল হওয়া নিয়ে তিনি মোটেই ভীত নন বলে জানান রাহুল। তাঁর বক্তব্য, “আমার একটিই লক্ষ্য, সত্যের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া, দেশের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে রক্ষা করা। আজীবনের জন্য আমাকে খারিজ করে দিন, আজীবনের জন্য জেলে ঢুকিয়ে দিন, আমি তাও চালিয়ে যাব। আমাকে দেখে কি চিন্তিত মনে হচ্ছে? বরং উৎসাহই পাচ্ছি।”
সুরতের জেলা আদালত মানহানি মামলায় রাহুলকে দু’বছরের সাজা শুনিয়েছে
উল্লেখ্য, গুজরাতের সুরতের জেলা আদালত মানহানি মামলায় রাহুলকে দু’বছরের সাজা শুনিয়েছে। তার পর দিনই রাহুলের সাংসদ পদ বাতিল হয়ে যায়। আপাতত সাময়িক জামিনে রয়েছেন রাহুল। ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তার মধ্যে উচ্চ আদালত থেকে স্বস্তি পেতে হবে।
(Feed Source: abplive.com)