২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতীয় রেলের ১৫১২ এমটি পণ্য লোডিংয়ের রেকর্ড অর্জন 

২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতীয় রেলের ১৫১২ এমটি পণ্য লোডিংয়ের রেকর্ড অর্জন 

আবীর ঘোষাল, কলকাতা: ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ৬৫৪২ আরকেএম রেকর্ড বৈদ্যুতিকীকরণ, ৫২৪৩ কিমি নতুন লাইনের রেকর্ড, এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্ক্র্যাপ বিক্রি- ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতীয় রেলওয়ের (আইআর) কৃতিত্বের কিছু বৈশিষ্ট্য নীচে উল্লেখ করা হল: পণ্য লোডিং ও রাজস্ব:  ২০২১-২২ অর্থবর্ষের ১৪১৮ এমটির তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে আইআর ১৫১২ এমটি পণ্য লোডিং করেছে, লোডিং-এর ক্ষেত্রে ৬.৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটি অর্থবর্ষে আইআর-এর এটিই সর্বোচ্চ লোডিং।

২০২১-২২ অর্থবর্ষের ১.৯১ লক্ষ কোটি টাকার তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে আইআর ২.৪৪ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জন করেছে, এই ক্ষেত্রে ২৭.৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি পঞ্জীয়ন করা হয়েছে। ‘হাংরি ফর কার্গো’ মন্ত্র অনুসরণ করে আইআর সহজে ব্যবসা করার ব্যবস্থার উন্নতিরপাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পরিষেবা সরবরাহের উন্নতির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, যার ফলে প্রচলতি ও অ-প্রচলিত ধারার পণ্যের নতুন ট্র্যাফিক রেলওয়েতে এসেছে। বিজনেস ডেভালপমেন্ট ইউনিটের গ্রাহক কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গী ও কাজ, দ্রুত নীতি তৈরির দ্বারা সমর্থন রেলওয়েকে এই ল্যান্ডমার্ক অর্জনে সাহায্য করেছে।

বৈদ্যুতিকীকরণের রেকর্ড : ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকীকরণের লক্ষ্য ও বিশ্বের মধ্যে সর্ববৃহৎ গ্রিন রেলওয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি সম্পন্ন করার দিকে ভারতীয় রেলওয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২২-২৩ বর্ষে আইআর-এর ইতিহাসে সর্বাধিক ৬,৫৪২ আরকেএম অর্জন করেছে। পূর্ববর্তী সর্বাধিক বৈদ্যুতিকীকরণ ছিল ২০২১-২২ বর্ষে ৬,৩৬৬ আরকেএম, এক্ষেত্রে ২.৭৬ শতাংশ বৃদ্ধি পঞ্জীয়ন করা হয়েছে।

নতুন লাইন (নতুন লাইন/ দ্বৈতকরণ/গজ পরিবর্তন):  ২০২১-২২ বর্ষের ২৯০৯ কিমির তুলনায় ২০২২-২৩ বর্ষে ৫২৪৩ কিমি সম্পূর্ণ হয়েছে। এইভাবে দৈনিক গড়ে ১৪.৪ কিমি ট্র্যাক স্থাপন করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ প্রবর্তন। অটোমেটিক সিগনালিং: ভারতীয় রেলওয়ের বিদ্যমান হাই ডেনসিটি রুটের উপর অধিক ট্রেন চালানোর জন্য লাইন ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির লক্ষ্যে অটোমেটিক ব্লক সিগনালিং হলো একটি সাশ্রয়ী সমাধান।

২০২১-২২ সালের ২১৮ কিমির তুলনায় ২০২২-২৩ সালে আইআর  অটোমেটিক ব্লক সিগনালিং-সহ ৫৩০ কিমি আপগ্রেড করেছে, এই ক্ষেত্রে ১৪৩.১২ শতাংশ বৃদ্ধি পঞ্জীয়ন করা হয়েছে। আইআর-এর ইতিহাসে অটোমেটিক সিগনালিং-এর ক্ষেত্রে এটিই এখনও পর্যন্ত অর্জন করা সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সংখ্যা।

ডিজিটালি ইন্টারলকড স্টেশন (ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং): কম্পিউটার ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমের জন্য পুরোনো লিভার ফ্রেম থেকে বৃহৎ সংখ্যক ডিজিটালি ইন্টারলকড স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। ট্রেন পরিচালনা ও সুরক্ষা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ডিজিটাল টেকনোলজির সুবিধা লাভের জন্য বৃহৎ সংখ্যায় ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২১-২২ সালের ৪২১টি স্টেশনের তুলনায় ২০২২-২৩ সালে ৫৩৮টি স্টেশনে ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং প্রদান করা হয়েছে, এক্ষেত্রে ২৭.৭৯ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে।

ফ্লাইওভার/আন্ডারপাস: পথের উপর ট্র্যাক অতিক্রম করার জন্য জনগণকে সুবিধা দিতে ২০২১-২২ সালের ৯৯৪টি ফ্লাইওভার/আন্ডারপাসের তুলনায় ২০২২-২৩ সালে ১০৬৫টি ফ্লাইওভার/আন্ডারপাস প্রদান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ৭.১৪ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে।

এফওবি: যাত্রী/পথচারীর যাওয়া-আসার জন্য ২০২১-২২ সালের ৩৭৩টি এফওবি-এর তুলনায় ২০২২-২৩ সালে ৩৭৫টি এফওবি নির্মাণ করা হয়েছে।

এলসি নির্মূল করা: লেভেল ক্রসিং গেটের নিরাপত্তা একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। ২০২১-২২ সালের ৮৬৭টি এলসি গেটের তুলনায় ২০২২-২৩ সালে ৮৮০টি এলসি গেট নির্মূল করা হয়েছে।গতি শক্তি ফ্রেইট টার্মিনাল: পণ্যবাহী বিভাগে নিজেদের মডেল শেয়ার বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আইআর-এর পক্ষ থেকে গতি শক্তি ফ্রেইট টার্মিনালের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ২০২১-২২ সালের ২১টি ফ্রেইট টার্মিনালের তুলনায় ২০২২-২৩ সালে ৩০টি ফ্রেইট টার্মিনাল সৃষ্টি করা হয়েছে।

লিফ্ট/এসকেলেটর: দিব্যাঙ্গ, বয়োঃজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি ও শিশুদের রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে সহজ চলাচলের জন্য ‘সুগম্য ভারত অভিযান’-এর অংশ হিসেবে ভারতীয় রেলওয়ে সমগ্র দেশের রেলওয়ে স্টেশনগুলিতে লিফ্ট ও এসকেলেটর স্থাপন করেছে। ২০২১-২২ সালের ২০৮টি লিফ্ট ও ১৮২টি এসকেলেটরের তুলনায় ২০২২-২৩ সালে ২১৫টি লিফ্ট ও ১৮৪টি এসকেলেটর প্রদান করা হয়েছে।

সর্বোচ্চ স্ক্র্যাপ বিক্রি: স্ক্র্যাপ সামগ্রী একত্রিত করা এবং ই-নিলামের মাধ্যমে তা বিক্রি করে সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য ভারতীয় রেলওয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২১-২২ সালের ৫৩১৬ কোটি টাকার তুলনায় ২০২২-২৩ সালে ৫৭৩৬ কোটি টাকার স্ক্র্যাপ সামগ্রী বিক্রি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ৭.৯০ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে। ভারতীয় রেলওয়েতে ২০২২-২৩ সালে ৪১৪টি স্টেশনে ইয়ার্ড রিমডেলিং করা হয়েছে।

(Feed Source: news18.com)