আমেরিকা: পৃথিবীর থেকে ১২ আলোকবর্ষ দূরে। ছোট্ট একটা তারা YZ Ceti। তারই পরিবারের সদস্য ঠিক পৃথিবীরই আকৃতির একটি গ্রহ। নাম YZ Ceti b। বিজ্ঞানের পরভাষায় এক্সোপ্লানেট। অর্থাৎ, যা আমাদের সৌরপরিবারের অংশ নয়, এমন এক গ্রহ। সিএনএন রিপোর্ট করেছে, এই গ্রহের নাকি রয়েছে নিজস্ব চৌম্বক ক্ষেত্র। এমনকি একটি বায়ুমণ্ডলও। তাহলে কি এখানেই লুকিয়ে থাকতে পারে প্রাণ? আশায় বুক বাঁধছেন গবেষকেরা।
পৃথিবীর উত্তর-দক্ষিণ চৌম্বকক্ষেত্র এবং সূর্য। মূলত, এই দুইয়ের কারণেই প্রাথমিক ভাবে পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাই, YZ Ceti b নামক এক্সোপ্ল্যানেটে চৌম্বক ক্ষেত্রের সম্ভাব্য অস্তিত্ব, স্বাভাবিক ভাবেই সেই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সংকেত দিতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো (ইউএস) এবং বাকনেল ইউনিভার্সিটি (ইউএস)র গবেষক মহাকাশ বিজ্ঞানী সেবাস্তিয়ান পিনেদা এবং জ্যাকি ভিলাডসেন, কার্ল জি জানস্কি ভেরি লার্জ অ্যারে, একটি রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে YZ Ceti তারকা থেকে নির্গত রেডিও সংকেত বিশেষ ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁদের সেই পর্যবেক্ষণ নেচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে।
পিনেদা জানাচ্ছেন, একটি গ্রহে তখনই বায়ুমণ্ডল থাকবে, যখন তাতে শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র রয়েছে। পিনেদার দাবি, এই YZ Ceti তারা এবং YZ Ceti b গ্রহের জুটি একেবারে আমাদের সূর্য এবং পৃথিবীর মতো। তাই প্রাণ সৃষ্টির জন্য সেখানে তৈরি হতেই পারে প্রয়োজনীয় পরিবেশ এবং পরিস্থিতি।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এক্সোপ্ল্যানেটটি নক্ষত্রের খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে। মাত্র দুই দিনেই সে তার নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে ফেলে। আমাদের সৌরজগতে সবচেয়ে ছোট কক্ষপথ বুধের, মাত্র ৮৮ দিনের।
ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের (NSF-এর) জো পেস বলেছেন, “অন্যান্য সৌরজগতে সম্ভাব্য বাসযোগ্য বা জীবন-ধারণকারী গ্রহের অনুসন্ধান আংশিকভাবে নির্ভর করে, পৃথিবীর মতো এক্সোপ্ল্যানেটের কোনও চৌম্বক ক্ষেত্র আছে কি না।” এক্ষেত্রে, কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পর্যবেক্ষণে, তার কিছুটা প্রমাণিত হয়েছে।
YZ Ceti b একটি পাথুরে গ্রহ। এখন এতে পর্যাপ্ত শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র আছে কি না , তা আরও গবেষণার বিষয়। সেটা বোঝা গেলেই আন্দাজ করা যাবে ওই গ্রহে প্রাণ সঞ্চারের জন্য কোনও সম্ভাবনা রয়েছে কি না।