বীরভূমে দাঁড়িয়ে লোকসভাকেই প্রাধান্য, পাকিস্তান প্রসঙ্গে মোদি-মমতার পার্থক্য বোঝালেন শাহ

বীরভূমে দাঁড়িয়ে লোকসভাকেই প্রাধান্য, পাকিস্তান প্রসঙ্গে মোদি-মমতার পার্থক্য বোঝালেন শাহ

কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বঙ্গ সফর। কিন্তু প্রাধান্য পেল লোকসভা নির্বাচনই। তাই বীরভূমের মাটিতে দাঁড়িয়ে অমিত শাহের (Amit Shah) মুখে উঠে এল পাকিস্তান এবং জম্মু ও কাশ্মীরের উল্লেখ। পরের বছর লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Elections 2024) বাংলা থেকে আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নন, নরেন্দ্র মোদিই (Narendra Modi) পাকিস্তানকে জবাব দিতে পারেন। সন্ত্রাস বন্ধ করতে পারেন জম্মু ও কাশ্মীরে।

দুর্নীতির অভিযোগে যখন জেরবার রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল, সেই আবহে বীরভূম সফরে এলেন শাহ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের (BJP) আগে জনসভার জন্য বেছে নিলেন বীরভূমের মাটিকে, যেখানে তৃণমূলের (TMC) একচেটিয়া আধিপত্যের নেপথ্য়ে এতদিন অনুব্রত মণ্ডল ছিলেন। গরুপাচার মামলায় অনুব্রতর তিহাড়যাত্রাকেই তাই বীরভূমে হাতিয়ার করেছে বিজেপি। সরাসরি শাহকে নিয়ে এসেছে জনসভা করতে।

আর সেই বীরভূমে দাঁড়িয়েই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সুর বেঁধে দিলেন শাহ। শুক্রবার সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “বাংলায় ৩৫ আসনে জিতে মোদিজিকে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। পাকিস্তানকে জবাব মমতা দিতে পারবে? কাশ্মীর থেকে সন্ত্রাসবাদ মমতা বন্ধ করতে পারবে? শুধু মোদিজি পারেন। আর কেউ নয়।”

এর আগে, সম্প্রতি বীরভূমে গিয়ে সংখ্যালঘু ভোটের উল্লেখ শোনা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মুখেও। জানান, ২০২১ সালের বিধামসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি-র ক্ষমতায় আসা একরকম ধরাবাঁধা ছিল। কিন্তু NRC নিয়ে সংখ্যালঘুদের ভুল বোঝায় তৃণমূল। বাংলা ছেড়ে চলে যেতে হবে বলে ভয় দেখায়। তাতেই সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলে গিয়ে পড়ে বলে দাবি করেন শুভেন্দু। এমনকি সভায় তাঁর পাশে মঞ্চেও দেখা যায় সংখ্যালঘু প্রতিনিধিদের। শুক্রবার শাহকেও সেই অবস্থানই নিতে দেখা গেল। বগটুইকাণ্ডে পীড়িতদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি।

মানচিত্রের নকশা বলছে, বীরভূমের সিউড়ি থেকে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের দূরত্ব ১ হাজার ৭৮৯ কিলোমিটার। কাশ্মীরের দূরত্ব ২ হাজার ১০৮ কিলোমিটার। উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় নির্মীয়মাণ রামমন্দিরের দূরত্বও ৭৮৪ কিলোমিটার। কিন্তু বীরভূমের মাটিতে দাঁড়িয়ে সেই তিন জায়গার প্রসঙ্গ তুলে ধরে রাজনৈতিক ডিভিডেন্ট তোলার পুরনো কৌশলের পথেই হাঁটলেন শাহ।

শাহের বক্তব্য, “অযোধ্য়ায় রামমন্দির হওয়া উচিত কিনা? মমতা দিদি, কংগ্রেস, কমিউনিস্ট এত বছরে মন্দির আটকে বসেছিলেন। মোদি এক সকালে গিয়ে অযোধ্য়ায় ভূমিপুজো করলেন। দেখতে দেখতে আকাশছোঁয়া মন্দির তৈরি হয়ে যাবে।”

নির্বাচনের সময় এলেই, বিজেপি নেতাদের মুখে বারবার পাকিস্তান, কাশ্মীর, সন্ত্রাসবাদী কিম্বা রামমন্দিরের মতো শব্দবন্ধ শোনা যায়। অতীতে বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে অমিত শাহই বলেছিলেন, ভুল করেও বিজেপি যদি বিহারে হেরে যায়, তখন বাজি ফাটবে পাকিস্তানে। কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বেল্লারিতে বিজয় সংকল্প সমাবেশ থেকেও পাকিস্তানের প্রসঙ্গ উঠে আসে অমিত শাহের গলায়। বিরোধীদের অভিযোগ, সুকৌশলে মেরুকরণের তাস খেলে ভোট বিভাজন করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই সমস্ত শব্দবন্ধ ব্যবহার করেন বিজেপি নেতারা।

(Feed Source: abplive.com)