Atik Ahmed: ‘সবকো পাতা হ্যায় আনজাম কেয়া হোনা হ্যায়,’ ১৯ বছর আগেই নিজের পরিণতি জানতেন আতিক!

Atik Ahmed: ‘সবকো পাতা হ্যায় আনজাম কেয়া হোনা হ্যায়,’ ১৯ বছর আগেই নিজের পরিণতি জানতেন আতিক!

জ্যোতির্ময় কর্মকার: হয়তো নিজের পরিণতি জানতেন আতিক আহমেদ। আর তাই ১৯ বছর আগে ২০০৪ সালে ফুলপুর লোকসভা আসনে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রচারের সময়ই সাংবাদিকদের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় একবার আতিক আহমেদ বলেছিলেন, ‘সবকো পাতা হ্যায় আনজাম কেয়া হোনা হ্যায়। কব তক টালা যা সকতাহে! ইয়ে সব ইস কি জাদুঝাড় হ্যায়।’ জনশ্রুতি আছে, সেদিন কেশরী মাসারি গাঁওয়ের কবরস্থানের আশেপাশেই বসে এই কথা বলছিলেন আতিক।

মাফিয়া আতিক অন্য জগতে বিচরণ করলেও, রাজনীতিক আতিকের সঙ্গে সাংবাদিকদের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত মসৃণ। কোনও এক ঘনিষ্ঠ বৃত্তের আলাপচারিতায় জনৈক সাংবাদিক তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, নিজের মাফিয়া ব্যাকগ্রাউন্ড-এর কারণে তিনি নিজের শেষ পরিণতি কী দেখতে পান? প্রায় ভবিষ্যদ্ববাণীর মত আতিক বলেছিলেন, ‘এনকাউন্টার হোগা। ইয়া পুলিস মারি, ইয়া কোয়ি আপনি বিরাদারি কা সিরফিরা। সাদক কে কিনারে পাড়ে মিলাব।’ বাস্তবে ঘটলও তাই। নিজেরই সমগোত্রীয় দুর্বৃত্তদের গুলিতে মুহূর্তে শেষ হয়ে গেলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ আতিক। বাইরে তাঁর পরিচয় যতই মাফিয়া হোক, শ্রদ্ধায় না হলেও চাপা ভয়েই অন্তত প্রয়াগরাজবাসী এখনও তাঁকে ‘সাংসদসাব’ বলেই ডাকে।

স্থানীয় গ্যাংস্টার থেকে রাজনীতির বাহুবলকে হাতিয়ার করেই কুখ্যাত মাফিয়া হয়ে উঠেছিলেন আতিক আহমেদ। আর সেই রাজনীতিই তাঁকে চরম পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। দুর্বৃত্তায়ন থেকে রাজনীতির পথে হাঁটাই ভুল হয়েছিল আতিকের। এমনটাই ব্যাখ্যা উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক মহলের। ইতিহাস বলছে, ওয়াগানের কয়লা চুরি থেকে কেরিয়ার শুরু করে ধীরে ধীরে একের পর এক পরিচিত গ্যাংস্টারদের পিছনে ফেলে উপরে উঠতে থাকে আতিক। এরপর ১৯৮৯ সালে চিরশত্রু শওকাত ইলাহী পুলিস এনকাউন্টারে মারা যাওয়ার পরই প্রয়াগরাজে শুরু হয় আতিকের একচ্ছত্র দুর্বৃত্তায়ন কায়েম। এই সময় থেকেই শুরু হয় তাঁর রাজনীতির যাত্রা।

১৯৮৯ সালে প্রথম এলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে জিতে যান আতিক। একবার নয়, ১৯৮৯ থেকে ২০০২, পরপর তিনবার বাহুবলী আতিকের প্রভাব প্রতিপত্তি তাঁকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে বিধায়কের স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। এরপর ধাপে ধাপে কখনও সমাজবাদী পার্টি, কখনও আপনাদল নিজেদের এলাকা দখলের লক্ষ্যে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তাঁর দিকে। ২০০৪ সালে ফুলপুর থেকে লোকসভা আসনে সমাজবাদী পার্টির টিকিটে যেতেন আতিক। আর এই সময় থেকেই ঘুরতে থাকে ভাগ্যের চাকা। তাঁর ছেড়ে যাওয়া বিধানসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামেন ভাই আশরাফ। কিন্তু বিএসপির রাজু পালের কাছে হেরে যান তিনি।

এরপরই শুরু হয় খুনোখুনির নতুন অধ্যায়। উমেশ পাল হত্যা সহ যাবতীয় এনকাউন্টার সেই অধ্যায়েরই ফলোআপ ডেভলপমেন্ট। সমাজবাদী পার্টির অন্দরের খবর, মুলায়ম সিং যাদবের ছত্রছায়াতেই বেড়ে ওঠে আতিক। কিন্তু অখিলেশের হাতে রাজ্যপাট আসতেই দুর্দিন শুরু হয় আতিকের। সমাজবাদী পার্টির আশ্রয় সরে যায় মাথার উপর থেকে। ২০১৭-য় যোগী রাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই এনকাউন্টার আর বুলডোজারের দুঃস্বপ্ন রাতের ঘুম কেড়ে নেয় আতিকের। প্রসঙ্গত, গুজরাটের সবরমতী জেল থেকে উত্তরপ্রদেশ নিয়ে আসার পর থেকেই আতিক আশঙ্কা করছিলেন যে তাঁকে মেরে ফেলা হবে। সেই আশঙ্কায় আগে থেকেই উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লেখেন গ্যাংস্টর আতিক আহমেদ। জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।

(Feed Source: zeenews.com)